শিক্ষক মুবাশ্বরের নিখোঁজ রহস্যের নেপথ্য

স্টাফ রিপোর্টার: নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক ড. মুবাশ্বার হাসান সিজার নিখোঁজ হওয়ার পর একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে নেমেছে। নিখোঁজ হওয়ার বিভিন্ন কারণ খতিয়ে দেখছেন তারা। অনুসন্ধান করতে গিয়ে গোয়েন্দারা দেখেছেন, শিক্ষক মুবাশ্বরসহ সরকারের ‘এ টু আই’ প্রজেক্টে কর্মরত একাধিক ব্যক্তি জঙ্গি কানেকশনে জড়িত। তারা গবেষণার অন্তরালে জঙ্গি নেটওয়ার্কের সাথে সরকার বিরোধী নানা কার্যক্রম চালাচ্ছেন। যাদের শনাক্ত করা হয়েছে তারা নিজেদের পরিচয় গোপন করে সরকারের এই প্রজেক্টে ঢুকেছে বলে একাধিক গোয়েন্দা কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সূত্র জানায়, গবেষণার অন্তরালে শিক্ষক মুবাশ্বর জঙ্গিদের উত্সাহিত করতে সরকার বিরোধী নানা প্রচারে জড়িত ছিল। তিনি ‘বিডি পলিটিকো ডট কম’ নামে একটি নিউজ পোর্টালের সম্পাদক। ওই ওয়েব পোর্টালের ডোমেইন তার নিজের নামেই রয়েছে। জঙ্গি তত্পরতার পাশপাশি নিউজ পোর্টালটির মাধ্যমে তিনি বিভিন্ন সময় সরকার বিরোধী বিভিন্ন অপপ্রচারে জড়িত ছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন  জঙ্গিদের সাথে  বিভিন্ন সময় তথ্য আদান প্রদান করেছেন বলে জানান গোয়েন্দারা।

তবে গোয়েন্দারা তাকে আগেই থেকে নজরে রেখেছিলো। তার গতিবিধি অনুসন্ধান করা হচ্ছিলো। এমনও হতে পারে, তিনি যখন বুঝতে পেরেছেন যে, তাকে অনুসরণ করা হচ্ছে তখন তিনি হিজরতের নামে নিজে আত্মগোপনে থাকতে পারেন এমনটি ধারণা করছেন গোয়েন্দা সূত্রগুলো। মুবাশ্বর নিখোঁজ হওয়ার পর বিভিন্ন কারণ খতিয়ে দেখতে গিয়ে জঙ্গি কানেকশনের বিষয়টি উঠে আসলে তার আত্মগোপনে যাওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন গোয়েন্দারা।

এদিকে এরই মধ্যে খিঁলগাও থানার পুলিশ ও র‌্যাব শিক্ষক মুবাশ্বরের বাসায় তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন বলে জানান তার বোন তামান্না। তিনি বলেন, আজও আমার ভাই’র সন্ধান মেলেনি।

এ বিষয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার (মতিঝিল) আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা শিক্ষক মুবাশ্বরের তদন্ত করছি। তবে এখনো কোন সন্ধান পাইনি। তাদের পাশাপাশি পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগও অনুসন্ধানের কার্যক্রম চালাচ্ছে।

গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে ঢাকা আইডিবি ভবনের সামনে থেকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সহকারী অধ্যাপক মুবাশ্বার হাসান সিজার নিখোঁজ হন। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সিজারের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন খিলগাঁওয়ে ছেলের নিখোঁজের বিষয়টি জানিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় অংশগ্রহণকারী পাঁচ জনের মধ্যে তিনজনই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র।