বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার গবরগাড়া গ্রামে অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে দুজনকে বিদ্যুতের পোলে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। সালিস বৈঠকে রিনার নামে ১০ কাঠা জমি দেয়ার প্রতিশ্রুতিতে বিষয়টি গ্রাম্য মাতবররা মীমাংসা করেছেন। তবে এ নিয়ে এলাকায় বইছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়। প্রশ্ন উঠেছে অনৈতিক সম্পর্ক সামাজিক অপরাধ, প্রকাশ্যে বেঁধে রাখা কি অপরাধ নয়?
সালিস ও গ্রামসূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের গবরগাড়া গ্রামের ছিলিন্দিপাড়ার ইমান আলীর ছেলে দু’সন্তানের জনক আরিফুল ইসলাম গত সোমবার রাত ১২টার দিকে ফরজ আলীর বাড়িতে যান। এ সময় ফরজের স্ত্রী দু’সন্তানের জননী রিনা বেগমের সাথে অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে তাদের দুজনকে আটক করে কতিপয় যুবক। ঘটনার পরপরই স্বামীসহ রিনার শশুরবাড়ির লোকজন বাড়ির সামনের বিদ্যুতের পোলের সাথে আরিফুল ও রিনাকে এক দড়িতে বেঁধে রাখে। সালিসে বিচারের শর্তে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ৯ ঘণ্টা পর তাদের দড়ির বাঁধন খুলে একটি ঘরে আটকে রাখা হয়। বিকেলে এ নিয়ে চেয়ারম্যান, মেম্বার ও গ্রামের মাতবরদের নিয়ে গ্রামে সালিস বসে। দুজনেই বিবাহিত। তাদের ঘরে সন্তান থাকার কারণে এবং রিনার ভবিষ্যতের কথা ভেবে সালিসকারীরা রিনার নামে ১০ কাঠা জমি দেয়ার শর্তে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। আগামী রোববার আরিফুল ওই জমি রিনার নামে রেজিস্ট্রি করে দেবেন বলে গ্রামসূত্রে জানা গেছে।
এদিকে অনেকেই মন্তব্য করে বলেছেন, বিয়ের আগে বা পরে পর নারীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক সামাজিকভাবে চরম অপরাধ মনে করা হয়। অপরাধও বটে। তবে প্রকাশ্যে বিদ্যুতের পোলে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার সিদ্ধান্ত দেয়া এটা কি অপরাধের মধ্যে পড়ে না? এ ব্যাপারে তিতুদহ ইউপি চেয়ারম্যান আকতার হোসেন বলেন, দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখার বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মেয়েটির ভবিষ্যতের কথা ভেবে ১০ কাঠা জমির বিনিময়ে আরিফুলকে ছেড়ে দেয়া হয়। স্থানীয় ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গ্রামে গিয়েছিলাম। ঘটনাস্থলে যাইনি। তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশের ইনচার্জ এসআই লিটন গাজি বলেন, খবর পেয়ে সকালের দিকে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিষয়টি সামাজিক ব্যাপার আর তাদেরকে বেঁধে রাখার বিষয়টি আমার চোখে পড়েনি।