এমবিবিএস ভর্তিযুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ১০ শিক্ষার্থীর সাফল্য

৩১টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট আসন ৩ হাজার ৩১৮টির বিপরীতে পরীক্ষার্থী ছিলো ৮২৭৮৮
স্টাফ রিপোর্টার: এবার মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের ১ জন অপেক্ষামান তালিকাসহ মোট ১০ জন ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। এর মধ্যে তিতুদহের ভূমিহীন দিনমজুর পিতার মেধাবী সন্তান আলমগীর হোসেনও রয়েছে। সে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্র্তির যোগ্যতা অর্জন করে বুঝিয়েছে, ইচ্ছে শক্তির কাছে দারিদ্র্য বড় বাঁধা নয়। তাছাড়া এবার ডেন্টাল কলেজ বাদেই চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৯ জন সরাসরি ভর্তির যোগ্যতা অর্জনকরাকে স্থানীয় শিক্ষানুরাগী মহল ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন।
মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় ফল গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় প্রকাশ করা হয়। এ বছর এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি হওয়ার জন্য ন্যূনতম ৪০ নম্বর পেয়েছেন মোট ৪১ হাজার ১৩২ জন ছাত্রছাত্রী। এরা সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেলে ভর্তি হতে পারবেন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি সূত্র এ কথা জানিয়েছে। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় ৯০’র বেশি নম্বর পেয়েছেন দুজন শিক্ষার্থী। মেধাতালিকায় সর্বশেষ নম্বর ৭০ দশমিক ৫। দেশের ৩১টি সরকারি মেডিকেল কলেজে মোট আসন ৩ হাজার ৩১৮টি। গত শুক্রবার মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ৮২ হাজার ৭৮৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এবারই প্রথম দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের ৫ নম্বর কাটা যায়। তাছাড়া বিডিএস বা ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষাও পৃথকভাবে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যা পরবর্তীতে নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এবার মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার মোট কতোজন অংশ নেয় তা নিশ্চিত করে জানা না গেলেও গতরাতে শেষ খবর পাওয়া পযন্ত (প্রাপ্ত তথ্য মতে) মোট ৯ জন সরাসারি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। একজন অপেক্ষামান তালিকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। যারা সরাসরি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে তাদের মধ্যে বালিয়াকান্দি গ্রামের আবুল হাসেম ও জান্নাতুল আরার ছেলে মামিনুল ইসলাম লিমন এবার প্রথমবারের মতো ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে শহীদ সোহরওয়াদী মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে সহপাঠীদের অনেকেরই চমকে দিয়েছে। মেধা তালিকায় লিমনের অবস্থান ৪৮৬, স্কোর ২৭৯। সে সরোজগঞ্জ হাইস্কুল থেকে এসএসসি ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হয়। চুয়াডাঙ্গা শহরতলী দৌলাতদিয়াড়ের বিল্লাল গনি ও নিগার নাহার সুলতানার মেয়ে ফারহানা আফরিন হিরা সিলেট মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। মেধা তালিকায় তার অবস্থান ১৩৬৪, স্কোর ২৭৪ দশমিক ২৫। সে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলো। মোমিনপুর ইউনিয়নের সরিষাডাঙ্গা গ্রামের সানোয়ার হোসেন ও আনজিরা বেগমের ছেলে মাজহারুল হক রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্র্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। মেধাতালিকায় তার অবস্থান ১৭৯৭, স্কোর ২৭২ দশমিক ৭৫, সে নীলমণিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলো। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের হাসপাতাল সড়কের তমিজ উদ্দীন ও শামসুন্নাহারের ছেলে শামসুজ্জোহা তরুণ রংপুর মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। মেধা তালিকায় তার অবস্থান ১৮১৯, স্কোর ২৭২ দশমিক ৭৫। সে চুয়াডাঙ্গা ভি. জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এবং ঢাকার নটরডেম কলেজের ছাত্র ছিলো। চুয়াডাঙ্গা ঈদগাপাড়ার আবু মেহবুব-উল আলম ও জিনিয়া সুলতানার মেয়ে আদৃতা আলম ঐশী ফরিদপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। মেধা তালিকায় তার অবস্থান ২২৬০, স্কোর ২৭১ দশমিক ৭৫। সে চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা বিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের ছাত্রী ছিলো। আলুকদিয়ার আবু হাসান ও রেশমা খাতুনের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ¯িœগ্ধা পাবনা মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। মেধা তালিকায় তার অবস্থান ২৫৮১, স্কোর ২৭০ দশমিক ৭৫। সে চুয়াডাঙ্গা সরকার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের ছাত্রী ছিলো। জাফরপুর বিজিবি ক্যাম্পের শফিকুল ইসলাম ও শাহীনা বেগমের মেয়ে সুমনা ইসলাম রাখি দিনাজপুর মেডিকেলে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। মেধা তালিকায় তার অবস্থান ২৮৫৩, স্কোর ২৭০ দশমিক ২৫। সে গোপালগঞ্জের বাসুদিয়া শ্রী কৃষ্ণ শশী কমল বিদ্যাপীঠ ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ছাত্রী ছিলো। চুয়াডাঙ্গা বোয়ালমারী আশাবুল হক ও শিরিন আক্তারের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান রোমেল মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। মেধা তালিকায় তার অবস্থান ৩০৪৩, স্কোর ২৬৯ দশমিক ৭৫। সে চুয়াডাঙ্গা ভি.জে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি কলেজের ছাত্র ছিলো। চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের তিতুদহ ইউনিয়নের তিতুদহ গ্রামের হতদরিদ্র মনোয়ার হোসেন ও জহিরুন নেছার ছেলে আলমগীর হোসেন পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজে ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে। মেধাতালিকায় তার অবস্থান ৩২৯০, স্কোর ২৬৯ দশমিক ২৫। সে তিতুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলো। এছাড়াও থানা কাউন্সিলপাড়ার জাকারিয়া ইসলাম ও মোতাহেরা আক্তার পারভীনের ছেলে ফাহিম মোর্শেদুল ইসলাম অপেক্ষামান তালিকায় সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তার মেধা তালিকা ৩৫০৫। অপেক্ষামান তালিকার ২৮৩ নম্বরে রয়েছে তার নাম। স্কোর ২৬৯।
ভর্তি পরীক্ষায় এবারই প্রথমবার অংশ নিয়ে সরাসরি ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করেছে যারা তাদের মধ্যে রয়েছে ৪ জন। এরা হলো লিমন, ঐশী, রাখি ও ফাহিম। বাকি ৫ জন এবার দ্বিতীয়বারের মতো অংশ গ্রহণ করে ৫ নম্বর কম নিয়েও ভর্তির যোগ্যতা অর্জন করে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রেখেছে।