ভুয়া প্রশ্নপত্র নিয়ে প্রতারণা ॥ চুয়াডাঙ্গার ডা. দিপুসহ চক্রের ৪ সদস্য গ্রেফতার

মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার খবর ছড়িয়ে বাণিজ্য ॥ র‌্যাব-১০’র অভিযান
স্টাফ রিপোর্টার: মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিয়ে প্রতারণা করে অর্থ বাণিজ্যে মেতে ওঠা চক্রের ৪ সদস্য র‌্যাব’র হাতে ধরা পড়েছে। এদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা হকপাড়ার বাসিন্দা মো. সালাউদ্দীনের ছেলে ডা. সামছুর রশীদ দিপুও রয়েছে। গত ৬ অক্টোবর পরীক্ষার দিন থেকে গতকাল রোববার পর্যন্ত লাগাতার অভিযান চালিয়ে চক্রের নারী সদস্যসহ ৪ জনকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে র‌্যাব-১০।
গ্রেফতারকৃতদের নিকট থেকে ৪৬টি বিভিন্ন ব্যাংকের ৩ কোটি ৫০ লাখ ২৫ হাজার টাকা লেখা ও ৬টিতে টাকার অংক না লেখা চেক উদ্ধার করা হয়েছে। র‌্যাব-১০ জানিয়েছে, ওই চেক মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী কিছু শিক্ষার্থীর হাতে ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র বলে দাবি করে ভুয়া প্রশ্নপত্র তুলে দেয়ার বিনিময়ে ওই চক্র সংগ্রহ করেছে। এছাড়াও মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা ২০১৭-১৮ সেশনের পরীক্ষাথীদের দেয়া ২২টি অ্যাডমিড কার্ড, ২২টি একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট বা প্রশংসাপত্র, ৫ সেট কথিত প্রশ্নপত্র, ৬টি মোবাইলফোন ও ১টি পেনড্রাইভ উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- দিনাজপুর ঘোড়াঘাটার দেবিপুর রানীগঞ্জ বাজার এলাকার অপু হাওলাদারে স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন তিন্নি। এর বর্তমান ঠিকানা ঢাকা হাজারিবাগের টালি অফিস এলাকায়। দিনাজপুর ঘোড়াঘাট রামেশ্বরপুর গ্রামের জিয়াউর রহমান প্রধানের ছেলে রাশেদুজ্জামান রিপন। তার বর্তমান ঠিকানা ঢাকা মোহাম্মদপুরের জাকির হোসেন রোডে। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের হকপাড়ার সালাউদ্দীনের ছেলে ডা. সামসুর রশীদ দিপু। তিনি ঢাকা আদাবরের আনোয়ার ল্যান্ডমার্ক কল্যাণপুর এলাকার একটি ফ্লাটে থাকতেন। দিনাজপুর ফুলবাড়ি গৌরিপাড়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে ডা. সোলায়মান হোসেন মেহেদী। তিনি ঢাকা মিরপুর ১০’র ১৩ নম্বর রোডের ডি ব্লকের বাসিন্দা ছিলেন।
র‌্যাব-১০’র উপপরিচালক (প্রশাসন) মেজর আহমেদ হোসেন মহিউদ্দিন, পিপিএম অধিনায়কের পক্ষে প্রেসব্রিফিঙে উপরোক্ত তথ্য তুলে ধরে বলেছেন, গত ৬ অক্টোবর শুক্রবার মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষার আগেই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, একটি চক্র ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে কৌশলে প্রচার করে। এরপর মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কথিত প্রশ্ন ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ, ভাইবারসহ বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে প্রযুক্তির মাধ্যমে পূর্ব থেকে যোগাযোগকৃত ব্যক্তির নিকট প্রেরণ করে। এ তথ্য পেয়ে ওইদিন রাত ১টা থেকে অভিযান শুরু করে তা গতকাল রোববার দুপুর দেড়টা পর্যন্ত অব্যাহত রাখা হয়। অভিযানে ওই প্রতারকচক্রের ৪ সদস্যকে বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করার পাশাপাশি তাদের নিকট থেকে উল্লেখিত মালামাল উদ্ধার করা হয়। চক্রের অন্য সদস্যসহ গ্রেফতারসহ পরীক্ষার্থীদের কিছু অভিভাবকের দেয়া আরও চেক উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় গতকাল মামলা রুজুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন ছিলো।