পৌরসভার বর্তমান ও সাবেক মেয়রসহ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের শোক ॥ নামাজে জানাজায় শরিক হওয়ার আহ্বান
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক নাজমুস সালেহীন লিটন ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না……….রাজেউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫১ বছর। হৃদরোগে আক্রান্ত হলে তাকে চুয়াডাঙ্গা থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেয়ার পথে মানিকগঞ্জে গতরাত ৯টায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আজ বুধবার বাদ জোহর ভি.জে স্কুলের খেলার মাঠ তথা চুয়াডাঙ্গা চাঁদমারি মাঠে নামাজে জানাজা শেষে জান্নাতুল মওলা কবরস্থানে দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে। নামাজে জানাজা ও দাফন কাজে সকলকে শরিক হওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
চুয়াডাঙ্গা কোর্টপাড়ার মরহুম আব্দুল হাফিজের দ্বিতীয় পুত্র নাজমুস সালেহীন লিটন ২০০২ সাল থেকে পর পর তিন দফা পৌর কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হয়ে তার জনপ্রিয়তার স্বাক্ষর রাখেন। তিনি ছাত্রজীবনে ছাত্রদল, পরে তিনি জাতীয়তাবাদী দলের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৩ সাল থেকে তিনি জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের চুয়াডাঙ্গা জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার মৃত্যুতে কেন্দ্রীয় কৃষকদল, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক ও বর্তমান মেয়র, জেলা বিএনপি ও যুবদল নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিকভাবে শোক প্রকাশ করে দেয়া শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনাসহ শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। নাজমুস সালেহীন লিটন মৃত্যুকালে এক কন্যা, স্ত্রীসহ বহুগুণগ্রাহী রেখে গেছেন। একমাত্র মেয়ে তাসলিম সালেহীন রোজা চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী। স্ত্রী মলি তার স্বামীকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে পড়েছেন। মানিকগঞ্জ থেকে অ্যাম্বুলেন্স ঘুরিয়ে চুয়াডাঙ্গায় নেয়া হয়। মৃতদেহ বাড়ি নেয়া হলে নিকটজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারি হয়ে ওঠে।
পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, নাজমুস সালেহীন লিটন দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হৃদরোগে ভুগছিলেন। হার্টের সুস্থতার জন্য কয়েক দফা ভারতে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এতে শারীরিক পরিস্থিতির তেমন উন্নতি না হওয়ায় পুনরায় ভারতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেলেন। পূজার পর ভারতে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ছিলো। তার আগে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে নিজ বাড়িতে হৃদরোগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. আবুল হোসেন তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেন। বিকেল ৩টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সযোগে ঢাকার উদ্দেশে নেয়া হয়। পথিমধ্যে মানিকগঞ্জে রাত ৯টার দিকে নাজমুস সালেহীন লিটন মারা যান। এ খবর চুয়াডাঙ্গায় পৌছুতেই শোকের ছায়া নেমে আসে। চুয়াডাঙ্গা পৌর পরিষদের পক্ষে মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু তাৎক্ষণিক শোক জানিয়ে বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, পৌর কাউন্সিলর নাজমুস সালেহীন ছিলেন উন্নয়নকামী অগ্রসৈনিক। তার ওয়ার্ডের উন্নয়নে তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন। তিনি বলেছেন, আমার পরিষদের একজন সদস্য হিসেবে তিনি দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তার অকাল মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহসভাপতি শামসুজ্জামান দুদু শোকবার্তায় বলেছেন, নাজমুল সালেহীনের মৃত্যুতে জাতীয়তাবাদী শক্তির অপূরণীয় ক্ষতি হলো। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাড. ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, মজিবুল হক মালিক মজু, জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম রতন, সাইফুল ইসলাম, সদর থানা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শামীম রেজা ডালিম, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মন্টু, চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষকদলের সভাপতি অ্যাড. আ.স.ম আব্দুর রউফ, জেলা জাসাসের সভাপতি সহিদুল হক বিশ্বাস, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মকলেছুরজ্জামান মকলেছসহ অনেকেই শোক প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন। এছাড়াও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মুহা. অহিদুল ইসলামের পক্ষে জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক স্বাক্ষরিত শোকবার্তায় বলা হয়েছে- নাজমুস সালেহীনের মৃত্যুতে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি শোক প্রকাশ করছে। শোকসন্তুপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপি একজন সদালাপী মিষ্টভাষী জনপ্রিয় নেতাকে হারালো।
চুয়ডাঙ্গা পৌরসভার ১নং প্যানেল মেয়র একরামুল হক মুক্তা স্বাক্ষরিত শোকবার্তায় বলা হয়েছে, তার মৃত্যুতে আমরা সকল কাউন্সিলরগণ গভীর শোক প্রকাশ ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং মহান আল¬াহর নিকট তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। বাংলাদেশ পৌর কর্মকতা কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা শাখার সাধারণ সম্পাদক স্বাক্ষরিত শোকবার্তায় বলা হয়েছে- কাউন্সিলর নাজমুস সলেহীন লিটনের মৃত্যুতে কর্মকর্তা কর্মচারী সকলে তার মৃত্যুতে আমরা পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ গভীর শোকপ্রকাশ ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি এবং মহান আল¬াহর নিকট তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। এছাড়াও চুয়াডাঙ্গা ছাত্রদলের আহ্বায়ক শরিফ উজ্জামান সিজার, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ তালহা, যুগ্ম আহ্বায়ক জাহিদ মো. রাজীব খান, শাহজাহান খান, মঞ্জুরুল জাহিদ, জেডএ তৌফিক খান, মোমিনুর রহমান মোমিন, সোহেল মালিক সুজন যুক্ত স্বাক্ষরিত শোকবার্তায় শোক জানিয়েছেন।