কোথায় হবে ভবিষ্যতের বসতি?

মাথাভাঙ্গা মনিটর: আগামী ২৫ বছরের কম সময়ে ১শ জনের বেশি মানুষ চাঁদে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে দিতে পারে। ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির (ইএসএ) বিশেষজ্ঞরা এ পূর্বাভাস দিচ্ছেন। সম্প্রতি লাটভিয়ায় ইউরোপিয়ান প্লানেটারি কংগ্রেসের সভায় ‘মুন ভিলেজ’ বা চন্দ্রগ্রাম নিয়ে কথা বলেন ইএসএর দূত ও ফ্রান্সের গবেষক বার্নার্ড ফোয়িং। তার ভাষ্য, চাঁদের ধুলাময় পৃষ্ঠে আমাদের শুধু থ্রিডি প্রিন্ট করা ভবন থাকবে না আমরা বরফ গলা পানি ও চাঁদের মাটিতে শস্য জন্মাতে পারব। এমনকি চাঁদের বুকে সন্তান জন্ম দেয়া সম্ভব। শুরুর দিকের চাঁদে বসবাসকারীরা যেভাবে চাঁদের বুক বসতি স্থাপন ও সংগঠিত হতে পারবে সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন ফোয়িং। ফোয়িং বলেন, ২০৩০ সাল নাগাদ ৬ থেকে ১০ জনকে নিয়ে চাঁদে বসবাস শুরু হতে পারে। এ দলের মধ্যে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, কারিগর থাকবেন। ২০৪০ সাল নাগাদ চাঁদে বসবাসকারী সংখ্যা ১শ ছাড়িয়ে যেতে পারে। ২০৫০ সাল নাগাদ চাঁদে জনসংখ্যা হাজার পেরিয়ে যেতে পারে। ফলে সেখানে পরিবারের কথা বিবেচনায় চলে আসবে। ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন (আইএসএস) অকার্যকর হয়ে যাবে বলে এর পরিবর্তে চাঁদে স্থায়ী বসবাসের ধারণাটি উঠে আসছে। সাধারণত, কক্ষপথে মানুষ পাঠানোর চেয়ে চাঁদে মানুষ ও যন্ত্রপাতি পাঠানো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এ পরিকল্পনায় সফল হতে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান নাসা, ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান স্পেস এক্স ও ব্লু অরিজিনকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে।
অবশ্য চাঁদে বসতি স্থাপনের এ ধারণা বাস্তবায়নে অর্থায়ন করতে রাজি নন রাজনীতিবিদের। সম্মেলনে লাটভিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ ভিডভুডস বেলডাভস বলেন, এটা খুবই হতাশার। আমরা শীর্ষ নেতাদের আগ্রহী করতে পারিনি। অবশ্য স্পেসএক্সের উদ্যোক্তা কোটিপতি এলন মাস্ক মনে করেন, চাঁদে বসবাস সম্ভব হতে পারে। তবে তিনি দাবি করেন, চাঁদের চেয়ে মঙ্গল গ্রহ আরও পছন্দসই জায়গা হতে পারে। এলন মাস্ক বলেন, মঙ্গল গ্রহে বসতি স্থাপনে আগ্রহ তার। তিনি মনে করেন, সেখানকার বায়ুমণ্ডলে কার্বনডাই অক্সাইডে তৈরি ফলে সেখানে উদ্ভিদ জন্মানো সহজ হবে। গ্রহটি পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পায়। এলন মাস্ক বলেন, মঙ্গল গ্রহে বাস করাটা দারুণ মজার হবে। সেখানকার মাধ্যাকর্ষণ পৃথিবীর তুলনায় ৩৭ শতাংশ। ফলে ভারী জিনিস তোলা ও বহন করা সহজ হবে।
ভবিষ্যতে মহাকাশে বসতি স্থাপনে খরচ কমানোর পাশাপাশি সেখানে যেতে ইচ্ছুক মানুষকেও খুঁজে বের করতে হবে।