বিভাগীয় পর্যায়ে চুয়াডাঙ্গার কেউই বিজয়ী হয়নি

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০১৭

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০১৭ খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে কোনো শাখায় চুয়াডাঙ্গা জেলার কেউই বিজয়ী হয়নি। চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে নির্বাচিত একজন ছাড়া কেউই প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এভাবে জেলা পর্যায়ের শ্রেষ্ঠরা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ না করায় বিরুপ সমালোচনা হয়েছে শিক্ষানুরাগীদের মাঝে।
প্রাথমিক শিক্ষা খুলনা বিভাগ, খুলনার উপপরিচালক ওয়ালিউল ইসলাম গতকাল সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই ফলাফল ঘোষণা করেন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গাসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে জেলার শ্রেষ্ঠরা অংশ গ্রহণ করেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর খুলনা পিটিআইতে বিভাগীয় পর্যায়ের শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। সেই প্রতিযোগিতায় ১৭টি বিভাগের একটিতেও বিজয়ী হতে পারেনি চুয়াডাঙ্গা জেলার কোনো প্রতিযোগী।
জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০১৭ খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ে ১০ জেলার মধ্যে কুষ্টিয়া দৌলতপুরের ৫৮নং আল্লারদর্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম। শ্রেষ্ঠ শিক্ষিকা নির্বাচিত হয়েছেন মাগুরার শালিখা আড়পাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইয়াসমিন আক্তার। শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্বাচিত হয়েছে মাগুরা শালিখার আড়পাড়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। শ্রেষ্ঠ এসএমসি যশোর কেশবপুরের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হারুনার রশীদ। শ্রেষ্ঠ বিদ্যোৎসাহী সমাজকর্মী নির্বাচিত হয়েছেন সাতক্ষীরা কলারোয়ার হাসপাতাল রোডের অবসরপ্রাপ্ত উপাধ্যক্ষ এমএ ফারুক। শ্রেষ্ঠ কাব শিক্ষক মাগুরা সদর উপজেলার কুল্লিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তহুরুল ইসলাম। শ্রেষ্ঠ কর্মচারী (প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসনে শ্রেষ্ঠ কর্মচারী) বাগেরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী আব্দুল হালিম খান। শ্রেষ্ঠ সহকারী ইউআরসি ইন্সট্রাক্টর যশোর অভয়নগরের সহকারী ইন্সট্রাক্টর রবিউল ইসলাম। শ্রেষ্ট ইউআরসি ঝিনাইদহ শৈলকুপার ইন্সট্রাক্টর ফিরোজা পারভীন। শ্রেষ্ঠ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার খুলনা সদর থানা শিক্ষা অফিসের সহকারী থানা শিক্ষা অফিসার মাসুদ রানা। শ্রেষ্ঠ উপজেলা শিক্ষা অফিসার কুষ্টিয়া কুমারখালী শিক্ষা অফিসের উপজেলা শিক্ষা অফিসার সিরাজুল ইসলাম। শ্রেষ্ঠ পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট ঝিনাইদহ পিটিআইয়ের আতিয়ার রহমান। শ্রেষ্ঠ জেলা শিক্ষা অফিসার সাতক্ষীরার শেখ অহিদুল আলম। শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাতক্ষীরা কালিগঞ্জের ইউএনও গোলাম মাঈনউদ্দিন হাসান। শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক সাতক্ষীরা ডিসি আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন। শ্রেষ্ঠ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান। ঝড়ে পড়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সক্ষম হয়েছে এ ধরণের বিদ্যালয় ঝিনাইদহর হরিণাকু-ুর কন্যাদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জীবননগরের মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, খুলনা অনেক দূর ও ব্যস্ততার কারণে যাওয়া সম্ভব হয়নি। প্রতিযোগিতায় একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী জীবননগরের উথলী সরকারি প্রাথমিক প্রধান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক শোয়াইব হোসেন বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা থেকে আমি একমাত্র প্রতিযোগি হিসেবে খুলনায় অংশগ্রহণ করি। অন্য কেউই যাননি। ফলে, খুলনা বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রচ- অসন্তষ্ট হয়েছেন। জেলা পর্যায়ে যারা শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদেরকে জেলা থেকে কোনো সার্টিফিকেট ও ক্রেস্টও প্রদান করা হয়না। এছাড়া, কোনো কর্মকর্তাদের তদারকি না থাকায় বিভাগীয় পর্যায়ের প্রতিযোগীতায় কেউই অংশ নিতে আগ্রহ দেখায়নি। তবে, এটি জেলার জন্য দু:খজনক।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঝিনুক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এসএমসির সভাপতি জেলার শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হাবিল হোসেন জোয়ার্দ্দার বলেন, খুলনায় অংশ নিয়ে কোনো ফল আসবেনা ভেবে যাওয়া থেকে বিরত ছিলাম।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শিক্ষক-অভিভাবক ফোরাম চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোতালিব জানান, কোনো প্রতিযোগী অংশগ্রহণ না করার মূল কারণ অব্যবস্থাপনা। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তরা যথাযথ দায়িত্ব পালন না করায় এ ঘটনা ঘটেছে। সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রত্যেক প্রতিযোগীকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। এরপরও যদি কেউ না যায় কি করার আছে।