জুম্মার নামাজের খুতবায় জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণা বাড়াতে হবে

চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কমিটির মাসিক সভায় ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বেলা ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তরিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খোন্দকার ফরহাদ আহমদ, দামুড়হুদা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান, এনএসআই উপপরিচালক আবু জাফর ইকবাল, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মৃনাল কান্তি দে, জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেলিম রেজা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম, জেলা রেজিস্ট্রার খন্দকার জামীলুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র একরামুল হক মুক্তা, চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির প্রতিনিধি নায়েব সুবেদার হাবিবুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হান্নান, অ্যাডভোকেট আকসিজুল ইসলাম রতন, অ্যাডভোকেট মানি খন্দকার, শওকত আলী ও বাসমালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক একেএম মইনুদ্দিন মুক্তাসহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শহর ও গ্রামের মসজিদে জুম্মার নামাজে খুৎবায় জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণা বাড়াতে হবে। জঙ্গিবাদ বিরোধী প্রচারণায় ইমামদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজিদের পাশাপাশি অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে। যেসকল কাজিদের কাছে অতিরিক্ত ভলিউম খাতা রয়েছে অবিলম্বে তা ফেরতের ব্যবস্থা করতে হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা বিষয়টা দেখবেন। যারা বিষয়টি মানছে না তাদের নামের তালিকা প্রস্তত করতে হবে। চুয়াডাঙ্গার নিচের বাজারে যত্রতত্র রাস্তার ওপর কাঁচাবাজার গড়ে উঠেছে তা অবিলম্বে উচ্ছেদ করতে হবে। ঈদুল আজহা শেষ হয়েছে। ২-১টি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ছাড়া ভালো হয়েছে। জেলায় সাড়ে ৭ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সকলের সহযোগিতায় ভালোভাবে শেষ হয়েছে। এজন্য সকলকে ধন্যবাদ। তবে, গাছ বাঁচিয়ে রাখতে মনিটরিং করতে হবে।
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তরিকুল ইসলাম ঢাকায় আব্দুল্লাহ নামে এক জঙ্গি নিহত হওয়ার বিষয়ে বলেন, আব্দুল্লাহ নামে পুলিশ কাউকে পায়নি। এবিষয়ে কোনো তথ্য পুলিশের কাছে হেডকোয়ার্টার থেকে চাওয়া হয়নি। বাল্যবিয়ে, মাদক, আত্মহত্যা বিষয়ে পুলিশ বিভিন্ন স্কুল-কলেজে সচেতনার বিষয়ে প্রচারণা করছে। কেউ যেন মেয়েদের ১৮ বছরের আগে বিয়ে না দেন। পুলিশ কারো ইন্ধনে আসামি ধরা বা না ধরা তা নয়। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ারভাবে কাজ করছে। রাত ১০টার পর বিভিন্ন এলাকায় যায়। জনগণ সহযোগিতা করছেন এবং সহযোগিতা করবেন। সদর হাসপাতালে দালাল আছে। দালাল বন্ধে কর্তৃপক্ষের আগ্রহ থাকতে হবে।
বিজিবির নায়েব সুবেদার হাবিবুর রহমান বলেন, এবার ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোনো গরু প্রতিবেশী রাষ্ট্র থেকে আসেনি। অ্যাডভোকেট আকসিজুল ইসলাম রতন বলেন, সাব রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল সম্পাদনে সরকারি ফি’র চেয় ৩ গুণ বেশি ফি আদায় করা হচ্ছে। জেলা কারাগারে কোর্ট থেকে বেলবন্ড পৌঁছানোর পরও আসামি ওইদিনে বের হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা করাগারের সুপার নজরুল ইসলাম বলেন, রিলিজ অর্ডার আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। তখন আসামিরা লক আপ হয়ে যায়। তবে, বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৃনাল কান্তি দে বলেন, জেলা রেজিস্ট্রারের গাফিলতির কারণে বাল্যবিয়ে বন্ধ হচ্ছে না। যার কারণে প্রশাসন বিব্রত হচ্ছে। মহিলা বিষয়ক অধিদফতর বিষয়টি দেখে না। শহরের ২৫ স্পটে মাদক সেবন করা হয়। উঠতি বয়সের ছেলেরা গাঁজা খায়। এ বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া দরকার।
জেলা রেজিস্ট্রার খন্দকার জামীলুর রহমান বলেন, বালাম বই সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। কাজিদের সতর্কীকরণ ও উদ্বুদ্ধকরণ করা হচ্ছে। অতিরিক্ত বালাম বই পাওয়া গেলে শাস্তি। বালাম বই দেয় ঢাকা থেকে। এক বছরের জন্য ৩-৪টি থাকে। আমরা বই সরবরাহ করি না।
ইমাম সমিতির সভাপতি কাজী শামসুল হক বলেন, বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রশাসনের দিক থেকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অভিভাবকদের আইনের আওতায় আনা যায় কি-না ভেবে দেখতে হবে।