দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে : ইউএনও’র হস্তক্ষেপ কামনা

দামুড়হুদায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাথাভাঙ্গা নদীতে আবারও নির্মাণ করা হয়েছে অবৈধ বাঁধ

বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদায় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাথাভাঙ্গা নদীতে আবারও নির্মাণ করা হয়েছে অসংখ্য অবৈধ বাঁধ। সুতি ফাঁদে আটকে পড়ছে মাছের কোটি কোটি ডিমসহ দেশীয় প্রজাতির সব ধরনের মাছ। আর ওই সমস্ত অবৈধ বাঁধ নির্মাণের ফলে একদিকে যেমন সৃষ্টি হচ্ছে নদীর নব্যতা। অপর দিকে দিনদিন কমে যাচ্ছে দেশীয় প্রজাতির সব ধরনের মাছ। এলাকার কিছু চিহ্নিত অসাধু মৎস্যজীবী প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রকাশ্যে মাথাভাঙ্গা নদীতে অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে নদীর নব্যতা সৃষ্টির মহাউৎসবে মেতে উঠেছে। নদীর দু পাড়ের দুধার থেকে বাঁশের তৈরি বাঁধ নির্মাণ করে পানির গতিরোধ করে নদীর মাঝখানে সামান্য জায়গা ফাকা রেখে নদীর স্রোতকে করা হচ্ছে বাধাগ্রস্ত। আর ওই মাঝখানেই পাতা হয়েছে চিকন সুতোর ফাঁদ। ওই ফাঁদেই প্রতিদিন আটকা পড়ে বিনষ্ট হচ্ছে মাছের কোটি কোটি ডিম। ধরে নেয়া হচ্ছে ডিমওয়ালা মাছসহ ছোটবড় সব ধরনের প্রাকৃতিক মাছ। দামুড়হুদা উপজেলার মাথাভাঙ্গা নদীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে মোট ১৪টি স্থানে পাওয়া ওই অবৈধ বাঁধের চিত্র। দামুড়হুদার পুরাতন বাস্তপুর নামক স্থানে মাথাভাঙ্গা নদীর বুকে নির্মাণ করা হয়েছে বিশাল এক বাঁধ। বাঁধটি নির্মাণ করেছেন ওই গ্রামের মতিয়ারের ছেলে ছানোয়ার হোসেন। তার সাথে ভাগিদার হিসেবে রয়েছে পিতা মতিয়ারসহ ৩ জন। একটু এগিয়ে গেলেই দেখা যাবে আরও একটি বিশাল বাঁধ। ওই বাঁধটি মৃত গোবিন্দ হালদারের ছেলে নিমাই হালদারের। তার সাথেও রয়েছে মফিদুলসহ ৪ জন। আরও একটু এগিয়ে গিয়ে রঘুনাথপুরে মাথাভাঙ্গা নদীর বুক চিরে রয়েছে আরও একটি বিশাল বাঁধ। রঘুনাথপুরের ভরত হালদার, কংশু হালদার, নির্মল হালদার, অর্জুন হালদার এবং মহাসিনসহ মোট ৬ জন রয়েছে ভাগিদার। এছাড়া চণ্ডিপুরের নিচে ৩টি, জিরাটের গাজীর দোহার সন্নিকটে ২টি, কালিদাসপুর ঘাটের নিচে রয়েছে আরও ২টি বিশাল বিশাল বাঁধ। রঘুনাথপুরের মদন হালদারের ছেলে (বর্তমানে চণ্ডিপুরের বাসিন্দা) কার্তিক হালদারসহ ৮-৯ জন রয়েছে ওই অবৈধ বাঁধের ভাগিদার হিসেবে। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে নদীর নব্যতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে যদি এখনই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে একদিকে যেমন অচিরেই নদীগুলো নব্যতা হারিয়ে চিকন খালে পরিণত হবে, তেমনই বিলুপ্ত হবে দেশীয় প্রজাতির সব ধরনের মাছ। এ ধরনের অবৈধ বাঁধ নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার ভুক্তভোগী সচেতনমহল।