বিকাশ গোপন পিন হ্যাক : গাংনীর সালাম ওরফে ডিজে সালাম আবারো সমালোচনায়

গাংনী প্রতিনিধি: এবার বিকাশ গোপন পিন হ্যাক করে আবারো সমালোচনায় মেহেরপুর গাংনীর বাঁশবাড়িয়া গ্রামের সেই সালাম। নিজেকে যিঁনি ডিজে সালাম নামেই পরিচয় দিতে বেশি স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন। অবশ্য গোপন পিন হ্যাক করে নেয়া টাকা ফেরতের পাশাপাশি সালিসে ক্ষমা চেয়ে এবারো পার পেয়েছে সালাম। গতকাল রোববার রাতে বাঁশবাড়িয়ায় ওই সালিস সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগেও কয়েকটি অপরাধমূলক ঘটনায় অর্থ জরিমানা ও মাফ চেয়ে পার পেয়েছিলেন। এলাকাবাসী এমনটিই জানিয়ে সালামের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগের তথ্য দিয়েছেন।

স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, বাঁশবাড়িয়া উত্তরপাড়ার নিহাজ উদ্দীনের ছেলে বেকার যুবক আব্দুস সালাম। মিউজিক ভিডিও তৈরি করে নামের সাথে ডিজে সালাম যুক্ত করেন কয়েক বছর আগেই। অবশ্য মিউজিক ভিডিও তৈরির কাজ বেশি দুরে এগোয়নি। বর্তমানে বাঁশবাড়িয়া বাজারে মোবাইল মেকানিক্স হিসেবে একটি দোকান দিয়েছেন। কয়েকদিন আগে বাঁশবাড়িয়া গ্রামের হযরত আলীর ছেলে রাজমিস্ত্রি বাবুল হোসেন তার দোকানে মোবাইল মেরামত করতে দেন।

বাবুল হোসেনের অভিযোগ, মোবাইল মেরামতের সময় ভুল করে তিনি সিম কার্ড রেখে এসেছিলেন। ওই সিমে বিকাশ হিসাব নম্বর খোলা ছিলো। আমার বিকাশ নম্বরের গোপন পিন হ্যাক করে তিন হাজার ৩শ’ টাকা অন্য নম্বরে স্থানান্তর করে নেয় সালাম। বিকাশ হেল্পলাইনের মাধ্যমে ওই মোবাইল নম্বর পাই। পরে গ্রামের কয়েক যুবক বিষয়টির প্রতিবাদ করলে সালাম টাকা ফেরত দেন।

এদিকে সালাম ওরফে ডিজে সালামের বিভিন্ন অপকর্ম সম্পর্কে অবগত গ্রামবাসী। তাই বিকাশ পিন হ্যাক করার ঘটনাটি গ্রামের মানুষের মাঝে প্রতিবাদের ঝড় তোলে। শেষ পর্যন্ত বাঁশবাড়িয়া বাজারে বসে সালিস সভা। গাংনী পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের (বাঁশবাড়িয়া) সাবেক কাউন্সিলর সামসুদ্দীন ও বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেনসহ ব্যবসায়ী ও গ্রামবাসী সালিসে উপস্থিত ছিলেন। দোষী সাব্যস্ত হয় সালাম। ছেলেকে শাসন করতে কয়েকটি চর-থাপ্পড় মারেন তার পিতা। এক পর্যায়ে বাবুলের হাত ধরে ক্ষমা প্রার্থনা করেন সালাম। ভুক্তভোগী বাবুল খুশি হওয়ায় সালিস সম্পন্ন হয়।

স্থানীয় বিভিন্নসূত্রে জানা গেছে, সালাম ওরফে ডিজে সালাম মাদকসেবী বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। তার ফেসবুক টাইম লাইনে পাওয়া গেছে মদের গ্লাস ধরে পান করার ভঙ্গিমার ছবি। পোস্ট করা রয়েছে বিদেশি মদের বোতলের কয়েকটি ছবি। এছাড়াও কয়েক বছর আগে এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্কে তাকে ব্লাকমেইল করার অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে কয়েক বছর আগে নিজের তৈরি বোমা পরীক্ষা করেছিলো সালাম। এ সময় বিস্ফোরণে একই গ্রামের মোজাম হোসেনের শিশুপুত্রের চোখ গুরুতর জখম হয়। চিকিৎসার পরেও অবুঝ শিশুর চোখ কানা হয়ে গেছে। অন্ধত্বের অভিশাপ নিয়েই শিশুটি বেড়ে উঠছে। অবশ্য অর্থ জরিমানা দিয়ে ওইযাত্রা রক্ষা পেয়েছিলো সালাম। তবে এত্তো অভিযোগ যার বিরুদ্ধে সেই সালামের বক্তব্য নিতে গতরাতে কয়েকবার মোবাইলে কল দিলেও বন্ধ পাওয়া গেছে।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করা হবে। সত্যতা পেলে সালাম ওরফে ডিজে সালামের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।