পুনরাবৃত্তি রোধে সতর্কতার বিকল্প নেই

 

প্রতিনিয়তই দেশের কোথাও না কোথাও ঘটছে বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। এমন ঘটনাও ঘটছে যা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ উপলক্ষে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে খাওয়ানো কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে। যাদের হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য বিভাগ যদি কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ায় তবে তা ইতিবাচক বিষয়। কিন্তু যদি শিক্ষার্থীরা ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে তবে তা কতোটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে বলাই অপেক্ষা রাখে না।

শুধু কুষ্টিয়ার বিভিন্ন স্কুলে কৃমিনাশক ওষুধ খেয়ে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে! এছাড়া ঝিনাইদহ, পাবনাতেও কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বলাই বাহুল্য যে, স্বাভাবিকভাবেই এ ঘটনায় অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। শিক্ষক ও স্বজনরা জানিয়েছেন, জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে জাতীয় কৃমি নিয়ন্ত্রণ সপ্তাহ উপলক্ষে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ানো হয়। আর এরপরই শিশু শিক্ষার্থীদের মাথা ঘুরতে শুরু করে এবং তারা বমি করতে করতে দুর্বল হয়ে পড়ে। চিকিৎসক বলেছেন, খালি পেটে কৃমিনাশক ট্যাবলেট খাওয়ার ফলে এমন ঘটনা ঘটেছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম আর চিকিৎসায় দ্রুত আরোগ্য হবে শিক্ষার্থীরা। আমরা মনে করি, অবস্থা গুরুতর না হলেও ট্যাবলেট খাওয়ানোর আগে সংশ্লিষ্টদের যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। প্রসঙ্গত, এটাও উল্লেখ্য যে, এর আগেও নানা সময়ে, নানা কারণেই শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হওয়া খবর গণমাধ্যমে এসেছে। এমনকি টিফিনে নাস্তা হিসেবে কেক খেয়ে শতাধিক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ার ঘটনাও ঘটেছে। আমরা বলতে চাই, যখন শিক্ষা ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন হচ্ছে, তখন যদি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ট্যাবলেট খেয়ে কিংবা টিফিন খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে তবে তা দুঃখজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে।

আমরা বলতে চাই, এবারের ঘটনাকে আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য দায়িত্বশীল হওয়া দরকার, যেকোনো ধরনের ওষুধ খাওয়ানোর আগে যথাযথভাবে সতর্কতা অবলম্বন করা। এবারের ঘটনায় যদিও ভয়ের কিছু নেই বলা হচ্ছে, তবু এর মধ্যদিয়ে শিক্ষার্থীদের মনে যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে এবং তাদের মনে রিরূপ প্রভাব পড়েছে এটা অস্বীকারের সুযোগ নেই। আর স্কুলে যাওয়ার পর যেকোনো কারণেই হোক শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়বে এবং তাদের হাসপাতালে যেতে হবে এটা হতে পারে না। সঙ্গত কারণেই এ ধরনের যেকোনো পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি রোধে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।

সার্বিকভাবে বলতে চাই এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয় তার নিশ্চয়তা যেমন জরুরি, তেমনিভাবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সার্বিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ জারি রাখতে হবে। মনে রাখা দরকার, একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান লক্ষ্য সুশিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করা। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক বিষয়েই সচেতন থাকতে হবে, যেন কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা না ঘটে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাবে পড়ালেখার উদ্দেশে আর অসুস্থ হয়ে ঘরে ফিরবে, তা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। আমরা চাই, এবারের ঘটনাটিসহ আগের ঘটনাগুলোকে আমলে নিয়ে এমন পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক- যেন অসতর্কতা কিংবা অবহেলার কারণে শিক্ষার্থীরা অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো ঘটনার শিকার না হয়।