নিহত ও আহত অসহায় পরিবারের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব

দামুড়হুদার বড়বলদিয়ার নিহতদের রুহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিলে এমপি আলী আজগার টগর

নিহত ও আহত অসহায় পরিবারের পাশে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব

দর্শনা অফিস: দামুড়হুদার জয়রামপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় একই গ্রামের ১৩ জন নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার ঘটনায় গোটা জেলাবাসীর বিবেক নাড়া দিয়েছে। অসহায় পরিবারগুলোকে নগদ টাকা, বস্ত্র, খাবারসহ বিভিন্ন উপকরণ প্রদান অব্যাহত রয়েছে। এগিয়ে এসেছে রাজনৈতিক, সামাজিক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বিত্তবানরা। নিহতদের আত্মার মাগফেরাত ও আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনায় বড়বলদিয়ায় ব্যাপক পরিসরে অনুষ্ঠিত হয়েছে দোয়া মাহফিল। গ্রামবাসীর উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এ দোয়ার আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের সংসদ সদস্য হাজি আলী আজগার টগর বলেন, এ ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা সর্বস্তরের মানুষের মনকে নাড়া দিয়েছে। মর্মান্তিক এ ঘটনায় শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা আমাদের নেই। কোনোভাবেই শূন্যতা পূরণ হবে না। চোখের জল ফেলে দুঃখ প্রকাশের পাশাপাশি অসহায় পরিবারগুলোর দিকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে সমাজের বিত্তবানদের। সন্তান হারা, বাবা হারা, স্বামী হারাদের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগাতে হবে। আমি বিশ্বাসের সাথে বলতে পারি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহযোগিতার হাত বাড়াবেন। সেই সাথে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসতে হবে সকলকেই। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদুল ইসলাম আজাদ, চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুর রাজ্জাক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম, জীবননগর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ অমল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গোলাম মর্তূজা, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল হাসান, দামুড়হুদা উপজেলা আ.লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, জীবননগর পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম, কেরুজ সেলস অফিসার শেখ শাহবুদ্দিন, ঢাকাস্থ দর্শনা পরিবারের সাধারণ সম্পাদক আবদুল হামিদ পিন্টু, সহসভাপতি এনামুল হক শাহ মুকুল প্রমুখ। জেলা আ.লীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান এসএএম জাকারিয়া আলমের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, দামুড়হুদা থানার অফিসার ইনচার্জ আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান, দর্শনা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইন্সপেক্টর শোনিত কুমার গায়েন, কুড়ুলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান শাহ এনামুল করিম ইনু, উপজেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সদস্য মুন্সি সিরাজুল ইসলাম, আ.লীগ নেতা বরকত আলী, মুনতাজ আলী, সোহরাব হোসেন খান, বিল্লাল হোসেন, ফরিদ আহম্মেদ, অ্যাড. আবু তালেব, অ্যাড. রেজাউল করিম, এনটিভি প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম, প্রথম আলো প্রতিনিধি শাহ আলম সনি, ইউসুপ আলী, যুবলীগ নেতা আব্দুল হান্নান ছোট, শেখ আসলাম আলী তোতা, সোলায়মান কবির, ইকবাল হোসেন, জিয়াউল হক, মামুন শাহ, রফিকুল ইসলাম ববি, নাহিদ পারভেজ, আবদুর রহমান প্রমুখ। দোয়া পরিচালনা করেন গোলাম মওলা ও মাও. আক্তারুজ্জামান। আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠান শেষে এমপি আলী আজগার টগর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে নগদ ২৫ হাজার ও আহতদের পরিবারকে ১৫ হাজার টাকা করে অনুদান প্রদান করেন। ঢাকাস্থ দর্শনা পরিবারের পক্ষ থেকে ২৬ পরিবারের মধ্যে নগদ ৫ হাজার করে টাকা ও একটি করে শাড়ি দেয়া হয়। জীবননগর পৌরসভার পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে প্রত্যেক পরিবারকে এক বস্তা করে চাল, আলু, ডাল ও তেল দেয়া হয়। এ ছাড়া ওই গ্রামে গঠন করা হয়েছে অনুদান সংগ্রহ কমিটি। ঘটনার দিনই চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আহত ও নিহতদের পরিবারকে ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়া হয়। ২ দিনের মাথায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মাহমুদ হাসান খান বাবু নিহত পরিবারের মধ্যে ১০ হাজার ও আহত পরিবারগুলোর মধ্যে ৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেন। প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান অনুদান প্রদান অব্যাহত রেখেছে।

প্রসঙ্গত, আলমডাঙ্গার খুদিয়াখালী গ্রামে রাস্তা নির্মাণ কাজের উদ্দেশে ২৬ মার্চ সকালে ২৬ শ্রমিক নিয়ে একটি আলমসাধু চুয়াডাঙ্গা-দর্শনা সড়কের জয়রামপুর স্কুল বটতলা নামকস্থানে পৌঁছায়। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা বালু বোঝাই একটি ট্রাক  ধাক্কা দিলে ১৩ শ্রমিক নিহত হন।