চুয়াডাঙ্গায় মাথাভাঙ্গা নদী থেকে কোমর বাঁধ অপসারণ শুরু : প্রথম দিনে শতাধিক বাঁধ উচ্ছেদ

দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় বার বার একই অপরাধ করছে তারা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় মাথাভাঙ্গা নদীতে কোমর অপসারণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৭টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সদর উপজেলার চারটি স্থানে এই অপসারণের কার্যক্রম চালায় সদর উপজেলা প্রশাসন। তবে দোষীদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। বরং সরকারের টাকা খরচ করে কোমর বাঁধের ডালপালা তুলছে জেলা প্রশাসন। শুধু এইবার নয় বছর বছরই একইভাবে প্রশাসন বাঁধ অপসারণ করে। দোষীরা শাস্তি না পাওয়ায় আবারও তারা নদীতে ডালপালা ফেলে কোমর বাঁধ দেয়। এতে মাথাভাঙ্গা নদী নাব্য হারিয়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে।

গতকাল কোমর বাঁধ অভিযানের প্রথম দিনে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাজরাহাটি গ্রামের জেহের বখশ মণ্ডলের ছেলে আজমত আলীকে কোমর বাঁধ দিয়ে মাছ ধরার অপরাধে মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইনের ১৯৫০ সালের ৫(১) ধারায়  এক হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৃণাল কান্তি দে। জরিমানার টাকা তাৎক্ষণিক পরিশোধ করা হয়। এ সময় নদী থেকে তার জাল ও বাঁশ জব্দ করা হয়।

অভিযানের সময় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, প্রথম দিনে মাথাভাঙ্গা নদী থেকে কোমর অপসারণের সময় আলুকদিয়া, দৌলাতদিয়াড়, তালতলা, হাজরাহাটি, আকন্দবাড়িয়া, বোয়ালমারী, হাতিকাটা ও খাদিমপুর এলাকার শতাধিক কোমর বাঁধ অপসারণ করা হয়। দড়িতে আকড়া বেঁধে বিশেষ পদ্ধতি নদী থেকে ডাল তোলেন কর্মসৃজন কর্মসূচির শ্রমিকরা। দ্বিতীয় দিনের মতো এ অভিযান আজও চলবে বলে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানান। কোমর বাঁধ অপসারণের সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা হামিদুর রহমান, কার্যসহকারী ফিরোজ আহমেদ, আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

চুয়াডাঙ্গার স্থানীয়দের অভিযোগ প্রতিবছর শ’ শ’ শ্রমিক লাগিয়ে বাঁধ অপসারণ করতে হয়। এতে সরকারের লাখ লাখ টাকাও ব্যয় হয়। সেই সাথে মাথাভাঙ্গা নদীও নাব্য হারিয়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে।  দোষীদের তেমন কোনো সাজা বা শাস্তি হচ্ছে না। হলেও লঘু দণ্ডের কারণে দোষীরা আবারও একইভাবে ডাল দিচ্ছে নদীতে। সরকারি হাজার হাজার টাকা কোমর অপসারণের কাজে ব্যয় হচ্ছে। সেই সাথে জেলা প্রশাসনও হয়রানি ও দুর্ভোগ পোয়াচ্ছে। কর্মকর্তাদের ছুটতে হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। ভুক্তভোগীদের দাবি, মাথাভাঙ্গাকে রক্ষা করতে হলে অবশ্যই দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া প্রয়োজন। যাতে এই কাজে আর কেউ পা না বাড়ায়। অনেকের অভিযোগ, কিছু কোমর অপসারণ করা হলেও হাজরাহাটির বাঁশের সেতুটি এখনও অপসারণ করা হয়নি। এবিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে এলাকাবাসী।