দামুড়ুহদার নাটুদহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন শেষে মারামারি

 

সভাপতি লিমন সাধারণ সম্পাদক আক্তার

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার নবগঠিত নাটুদহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে নাটুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নাটুদহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের আহ্বায়ক সাদ্দাম হোসেন তরফদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন দামুড়হুদা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু। বিশেষ অতিথি ছিলেন নতিপোতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হামিদুল্লাহ বিশ্বাস, নাটুদহ ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম, আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াচনবী, দামুড়হুদা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ উদ্দীন, বর্তমান সভাপতি জামিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক সাজু আহম্মেদ রিংকু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুল হক বিশ্বাস মিঠু, চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগ নেতা জানিফ, দর্শনা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নাহিদ পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জেল হোসেন তপু প্রমূখ। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ হোসেন দুদু। আলোচনা শেষে নাটুদহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নেতা লিমন খাঁনকে সভাপতি, আক্তার হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক এবং ওসমান গনিকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট দু বছর মেয়াদী নাটুদহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে চুয়াডাঙ্গা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শরীফ হোসেন দুদু এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ দিকে সম্মেলনস্থলে তুচ্ছ কথাকে কেন্দ্র করে নাটুদহ ইউপি চেয়ারম্যান শফি গ্রুপ এবং আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াচনবী গ্রুপের লোকজনের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে আওয়ামী লীগ নেতা ইয়াচনবীসহ উভয়পক্ষের ৭ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে হোগলডাঙ্গা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি খবির উদ্দীনের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা তিতাসকে (১৭) রক্তাক্ত জখম অবস্থায় দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (চিৎলা হাসপাতালে) ভর্তি করা হয়েছে। সম্মেলনস্থলে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ছাত্রলীগ কর্মী ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, খুবই সুন্দর পরিবেশে সম্মেলনের কাজ এগিয়ে চলছিলো। আ.লীগ নেতা ইয়াছনবীর একটি কথাকে কেন্দ্র করে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে ইয়াচনবীকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। সম্মেলনস্থলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বিষয়টি তাৎক্ষণিক মিটিয়েও দেন। ওই ঘটনার জের ধরে পরে ইয়াছনবীর পক্ষের লোকজন রামদা, চাপাতি নিয়ে রাস্তায় ওত পেতে থাকে। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সম্মেলনস্থল থেকে করিমনযোগে বাড়ি ফেরার সময় নাটুদহ আট শহীদ স্মৃতি কমপ্লেক্সের সামনের গতিরোধকের সন্নিকটে ইয়াচনবীর লোকজন অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। হামলায় হোগলডাঙ্গা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি খবির উদ্দীনের ছেলে ছাত্রলীগ নেতা তিতাসকে (১৭) চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করা হয়। তাকে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া ওই করিমনে থাকা কালিযাবকরি গ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী নাসিম ইকবাল, হোগলডাঙ্গা গ্রামের জুয়েল রানা, একই গ্রামের ছাত্রলীগ কর্মী রায়হান, রাকিবুল, শাহিনসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।

ছাত্রলীগ কর্মী কালিয়াবকরি গ্রামের এসএম রাজ মাহমুদ বলেছেন, সম্মেলনস্থল থেকে কমিরমনযোগে বাড়ি ফেরার সময় ইয়াচনবীর বাড়ির অদূরে আমাদের ওপরও হামলা চালানো হয়। আমরা ওই করিমনে ১০-১১ জন ছিলাম। আমরা কোনোমতে পালিয়ে প্রাণে বেঁচে গেছি। তবে করিমনের টায়ার কেটে দেয়া হয়েছে। এছাড়া সম্মেলনস্থলে থাকা সাংবাদিক শরীফ রতনকে দেধড়ক মারপিট করা হয়েছে। আহত সাংবাদিক শরীফ রতন বলেছেন, তিনি ওই সময় মারামারির ছবি তুলছিলেন। চেয়ারম্যান শফি গ্রুপের লোকজন তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। এদিকে আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয়রা ওই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, বর্তমান ছেলেদের মধ্যে সহনশীলতা, সহমর্মিতা, ধৈর্য কোনোটাই নেই। পরবর্তীতে এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেদিকে দৃষ্টি দেয়ারও পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ।