গাংনীর রাইপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতা : অনুপস্থিত থেকেও বেতন উত্তোলন

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার রাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফাতেমাতুজ্জোহরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার পরেও বেতন উত্তোলন করছেন। ছুটি ছাড়াই তিনি প্রায় আড়াই মাস বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বরং তার বেতন উত্তোলনে সহায়তা করছেন বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয়রা। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান উপজেলা শিক্ষা অফিসার।

সহকারী শিক্ষক ফাতেমাতুজ্জোহরা গত ৬ জানুয়ারি থেকেই গতকাল পর্যন্ত বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন। বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতায় ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত তার স্বাক্ষর রয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে বিদ্যালয়ে গিয়ে হাজিরা খাতায় আনুপস্থিত দেখা যায়। তবে তিনি ছুটি গ্রহণ করেননি। এমনকি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানে না তিনি কবে বিদ্যালয়ে উপস্থিত হবেন। ক্ষমতার বলে তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত বলে জানান স্থানীয়রা। এতোদিন ধরে তিনি অনুপস্থিত থাকলেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেননি শিক্ষা অফিস। উপরন্ত জানুয়ারি মাসে তার বেতন প্রদান করেছেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার।

রাইপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুন্নাহার বলেন, তিনি কোথায় আছেন, কি অবস্থায় আছেন তা আমি জানি না। তিনি ছুটি নেননি। বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়েছে। শিক্ষক অনুপস্থিত থাকায় পাঠদান ব্যহত হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সহকারী শিক্ষা অফিসার শফিকুর রহমান বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গেলে বিষয়টি নজরে পড়ে। তিনি হাজিরা খাতায় ফাতেমাতুজ্জোহরার স্বাক্ষরের ঘরে অনুপস্থিত লিখে দেন। কিন্তু এর পরেও কিভাবে জানুয়ারি মাসের বেতন পেলেন সে প্রশ্নের সদুত্তোর মেলেনি শিক্ষা অফিসারের কাছ থেকে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্যদ সভাপতি জাকির হোসেন জানান, তিনি বেশ কয়েকবার ওই শিক্ষককে হুঁশিয়ার করে দেয়ার পরও কর্ণপাত করেন নি।

এদিকে গতকাল সোমবার ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক সেলিনা খাতুনকেও সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে পাওয়া যায়নি।

কয়েকজন অভিভাবক জানান, অনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে সহকারী শিক্ষক ও ফাতেমাতুজ্জোহারা ইচ্ছেমতো বিদ্যালয়ে আসেন। তারা পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। ফাতেমাতুজ্জোহরা বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত হলেও সেলিনা স্বেচ্ছাচারিতার ভিত্তিতে বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি প্রতিদিনই নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে বিদ্যালয়ে আসেন এবং ছুটির আগেই বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। এ দুজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী অভিভাবকরা।

শিক্ষক ফাতেমাতুজ্জোহরার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। গ্রামের বাড়ি বানিয়াপুকুরে তিনি নেই বলেও জানান পরিবারের লোকজন।

গাংনী উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এহসানুল হাবীব জানান, তিনি শিক্ষকের অনুপস্থিতির বিষয়টি না জেনেই বেতন সিটে স্বাক্ষর করেছেন। এখন অবগত হওয়ার পর তার বেতন বন্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সেই সাথে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।