প্রসঙ্গ : অল্প টাকার নোট-কয়েন নিয়ে বিভ্রান্তি- বিড়ম্বনা

কোনটি ঠিক? ব্যবসায়ীদের মৌখিক অভিযোগ- দু টাকার নোট ও ৫ টাকার কয়েন চলছে না। সিগারেট বা অন্য কোনো কোম্পানির মাল খুচরা টাকা দিয়ে কেনা যাচ্ছে না। ব্যাংকেও নিচ্ছে না। অথচ পানের হাটে পান বিক্রি করতে গিয়ে চাষিদের বান্ডিল বান্ডিল দু টাকার নোট নিয়ে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। পক্ষান্তরে সোনালী ব্যাংক চুয়াডাঙ্গা শাখার ব্যবস্থাপক স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, খুচরা টাকার নোট বা ৫ টাকার কয়েনের কোনোটিই অচল নয়। ব্যাংকের গ্রাহকবৃন্দ ব্যাংকের কোনো শাখায় স্বাভাবিক পরিমাণের খুচরা টাকা বা কয়েন জমা দিতে গিয়ে ফিরেছেন বলে লিখিত অভিযোগ নেই।
দু পক্ষের বক্তব্য দু রকম। তাহলে গলদটা কোথায়? সত্যিই কি কোনো গ্রাহক ব্যাংকে টাকা জমা দিতে গিয়ে ব্যর্থ হননি? নাকি হলেও লিখিত অভিযোগ দেননি বলেই অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই? তাছাড়া খুচরা টাকা তো বাজারে স্বাভাবিক লেনদেনের জন্যই ছাড়া হয়। সিগারেট কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি বা অন্য কোনো কোম্পানির প্রতিনিধিরা খুচরা টাকা নেবে না কেন? গুনতে কষ্ট নাকি বহনে? ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কেউই দু টাকার নোট বা ৫ টাকার কয়েন দেখে নিশ্চয় শখ করে খদ্দের ফেরত দেন না। এক দু টাকার নোট বা কয়েন স্বাভাবিকভাবে লেনদেন না হলে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয় স্বল্প পুঁজির ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। খুচরা জমে স্তূপ গড়ে কী হবে, যদি তা না চলে? এক্ষেত্রে খুচরা ক্ষুদ্র স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীদেরও ব্যাংকের হিসাবধারী হওয়া উচিত। অবশ্য ব্যাংকে শুধুই যদি খুচরা নিয়ে জমা দিতে যাওয়া যায় তাহলে অর্থগ্রহণকারীর গোমরামুখ যে দেখতে হবে তা বাস্তবতার আলোকে সহজেই অনুমান করা যায়।
এ সমাজ আমাদের। সমাজের স্বাভাবিক গতি অব্যাহত রাখতে হলে সমাজের সকলকেই নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে আন্তরিক হওয়া দরকার। সকল অনুমান মিথ্যা প্রমাণ করে সকল ব্যাংকের সকল শাখার সকল অর্থগ্রহণকারীর মুখ উজ্জ্বল হলে খুচরা নিয়ে চলমান সঙ্কট কাটতে কতোক্ষণ? তাছাড়া ক্ষুদ্র স্বল্প পুঁজির ব্যবসায়ীরা কেন অল্প টাকার নোট ও কয়েন নিচ্ছেন না, তা খতিয়ে দেখে প্রকৃত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার মতো প্রশাসনিক দক্ষতাও প্রয়োজন। খুচরা টাকা যে কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধির কাছে বোঝা, সেই কোম্পানির পণ্য সম্মিলিতভাবে বর্জন করাই হবে বোধ হয় সময় উপযোগী সিদ্ধান্ত।