পিকনিকের ৬ বাসে দুঃসাহসিক ডাকাতি : গয়নাগাটিসহ ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট

 

মেহেররপুর গাংনীর শুকুরকান্দি এলাকায় রাস্তায় গাছ ফেলে সশস্ত্র ডাকাতদলের দীর্ঘ সময় ধরে তাণ্ডব

 

গাংনী প্রতিনিধি: গতকাল সোমবার রাত তিনটার দিকে মেহেরপুর-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের গাংনী উপজেলার শুকুরকান্দি নামক স্থানে দুঃসাহসিক ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাতদল ঘণ্টাব্যাপি অস্ত্রের মুখে শিক্ষা সফরের ৬টি গাড়িতে ডাকাতি করে। স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা, মোবাইলফোনসহ প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

পিকনিক থেকে ফেরা বাসের যাত্রীরা জানান, রোববার সকালে মেহেরপুর পৌর ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা ৬টি বাস ভাড়া করে নওগাঁ জেলার পাহাড়পুরের সোমপুর বৌদ্ধবিহারে শিক্ষা সফরে যান। সেখান থেকে মেহেরপুর ফেরার পথে অস্ত্রধারী ডাকাতের কবলে পড়ে শিক্ষা সফরের যাত্রীরা। কুষ্টিয়ার খলিসাকুণ্ডি ব্রিজ পার হয়ে মেহেরপুর সীমানার মধ্যে পৌঁছুলে সড়কের ওপর গাছ ফেলে বাসগুলোর গতিরোধ করে ডাকাতদল। এরপর অস্ত্রের মুখে ঘণ্টাব্যাপী ডাকাতি করে। ডাকাতের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এক শিক্ষার্থী আহত হয়। ডাকাতি শেষে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। কলেজের অধ্যক্ষ একরামুল আযীম জানান, স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা, মোবাইলফোনসহ প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুটে নেয় ডাকাতদল। ইমন নামের এক শিক্ষার্থী জানায়, সে তার বাবা মুজিবনগর থানার এএসআই আব্দুল আলিমকে ডাকাতির ঘটনা মোবাইলফোনে ক্ষুদে বার্তার মাধ্যমে জানায়। তিনিই ঘটনাটি গাংনী থানাকে অবহিত করেন। গাংনী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন জানান, পুলিশ খবর পাওয়ার সাথে সাথেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে কিন্তু তার আগে ডাকাতদল পালিয়ে গেছে। ডাকাতদল ধরার চেষ্টা চলছে। এদিকে গতকালই কলেজ কর্তৃপক্ষ গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এসআই শঙ্কর কুমার ঘোষ মামলাটি তদন্ত করছেন বলে জানা গেছে।

গাংনী উপজেলার যেকটি স্থানে ডাকাতি সংঘটিত হয় তার মধ্যে শুকুরকান্দি অন্যতম। সম্প্রতি শুকুরকান্দি থেকে কয়েক কিলোমিটার পূর্বে খলিশাকুণ্ডি এলাকায় পিকনিকের কয়েকটি বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। রাজশাহী থেকে মুজিবনগরের উদ্দেশে আসা পিকনিকের বাসগুলো ভোরের দিকে ডাকাতির কবলে পড়ে। ঘণ্টাব্যাপী ডাকাতি করে একদল সশস্ত্র ডাকাত।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গাংনীর শুকুরকান্দি, আকুবপুর, হোগলবাড়িয়া, মহাম্মদপুরসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী কুষ্টিয়ার খলিশাকুণ্ডি এলাকার কয়েকটি গ্রামে এ ডাকাত দলের আধিপত্য রয়েছে। গাংনী থানা পুলিশের অভিযানে মাঝেমধ্যে সন্দিগ্ধ ডাকাত গ্রেফতার হলেও ডাকাতি বন্ধ হয়নি। প্রায়ই সড়কে গাছ ফেলে এরকম ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। ডাকাতির ঘটনা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে সংখ্যায় কম হলেও ডাকাতি বন্ধ হচ্ছে না।

ডাকাতির পেছনে সড়ক নিরাপত্তার অভাব উল্লেখ করে এলাকার কয়েকজন জানান, বাওট বাজার থেকে খলিশাকুণ্ডি ব্রিজ পর্যন্ত অনেকটায় নির্জন ও ফাঁকা সড়ক। গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত এ এলাকায় তেমন কোনো মানুষ চলাচল করে না। ভোরের দিকে ঢাকার পরিবহনগুলো একযোগে প্রবেশ করে। এতে ডাকাতরা সুবিধা করতে না পারলেও একলা চলা যানবাহনগুলো ডাকাতির কবলে পড়ে। এ কারণে এ সড়কে সারারাত পুলিশ প্রহরার দাবি উঠেছে।