গাংনীতে জামাইয়ের হামলায় শ্বশুর পরিবারের আহত চারজনের মধ্যে একজনের মৃত্যু

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শালা-শালিসহ শ্বশুর পরিবারের আহত চারজনের মধ্যে জাহাননারা খাতুন (৩২) মারা গেছেন। গত শুক্রবার গভীর রাতের দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থার তার মৃত্যু হয়। নিহত জাহাননারা খাতুন গাড়াডোবা গ্রামের জলিবিলপাড়ার মৃত মহাম্মদ আলীর মেয়ে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পারিবারিক কলহের জের ধরে জাহানারার ছোট বোনের স্বামী সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আশাদুল ইসলামের হামলায় চার জন আহত হয়। এ ঘটনায় আসাদুলকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় ও পুলিশসূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর আগে শ্যামপুর গ্রামের সায়েত আলীর ছেলে আশাদুলের সাশে গাড়াডোব জলিবিলপাড়ার মৃত মহাম্মদ আলীর মেয়ে বানুয়ারা বেগমের বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জেরে ৫ বছর বয়সী শিশুপূত্র মাসুদকে সাথে নিয়ে বছর দুয়েক আগে পিতার বাড়িতে ফিরে যান বানু। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানে যান আশাদুল। দাম্পত্য কলহের জের ধরে ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তার শ্যালিকা পারভিনা খাতুন (২৪), শ্যালক ইছহাক আলী (৩৮) ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন (৩৩) এবং স্ত্রীর বড় বোন জাহানারা খাতুনকে (৩২) রক্তাত্ব জখম করে। স্থানীয়রা আশাদুলকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। আহত চারজনকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতেল ভর্তি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই রাতেই জাহাননারাসহ দুজনকে প্রথমে কুষ্টিয়া ও পরে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করা হয়। হামলার সময় বানুয়ারা বাড়িতে ছিলেন না।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় নিহতের মরদেহ নিজ বাড়িতে নেয়া হয়। গাড়াডোব কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে জানাজা শেষে রাতে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।

পারিবারিকসূত্রে জানা গেছে, নিহত জাহাননারা দুই সন্তানের জননী ছিলেন। বড় ছেলে রাজু দোকান কর্মচারি। ছোট মেয়ের বয়স ৩ বছর। শিশিরপাড়া গ্রামের কাওছারের সাথে তার বিয়ে হলেও সংসার টেকেনি। সতিনের সংসারে টিকতে পারেননি শাহাননারা। তাই দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি পিতার বাড়িতে বাসবাস করতেন। গ্রামের বাড়ি বাড়ি থেকে দুধ কিনে তা বিক্রি করতেন। এ আয় দিয়েই তিনি সংসার চালাতেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করছে।

এদিকে ঘটনার রাতেই নিহতের ছোট বোন বানুয়ারা বাদী হয়ে তার স্বামী আশাদুলকে আসামি করে গাংনী থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। জাহাননারার মৃত্যুতে ওই মামলার সাথে এখন হত্যাকাণ্ডের ৩০২ ধারা যুক্ত হবে বলে জানিয়েছেন গাংনী থানার ওসি। ওই মামলার আসামি হিসেবে আশাদুলকে শুক্রবার মেহেরপুর আদালতে সোপর্দ করে গাংনী থানা পুলিশ। আশাদুল এখন হাজতবাসে রয়েছেন।