গাংনীতে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ্বশুর পরিবারের চারজন আহত : জামাই গ্রেফতার

 

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার গাড়াডোব গ্রামে জামাইয়ের ছুরিকাঘাতে শ্যালক-শ্যালিকাসহ শ্বশুর পরিবারের চারজন আহত হয়েছেন। তবে পাল্টা আক্রমণে আহত হয়েছেন হামলাকারী জামাই। দাম্পত্য কলহের জের ধরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় চারজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পুলিশ গ্রেফতার করেছে হামলাকারী জামাই সদর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের আশাদুল ইসলামকে (৪০)। আহতরা হচ্ছেন- হামলাকারী আশাদুলের শ্যালিকা গাড়াডোব গ্রামের পারভিনা খাতুন (২৪), শ্যালক ইছহাক আলী (৩৮) ও তার স্ত্রী ফরিদা খাতুন (৩৩) এবং স্ত্রীর বড় বোন জাহানারা খাতুন (৩২)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় পারভীনা ও জাহানারারকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে রাজশাহী মেডিকেলে নেয়া হয়েছে। স্থানীয় ও আহত সূত্রে জানা গেছে, ৮ বছর আগে শ্যামপুর গ্রামের সায়েত আলীর ছেলে আশাদুলের সাথে গাড়াডোব জলিবিলপাড়ার মৃত মহাম্মদ আলীর মেয়ে ভানু বেগমের বিয়ে হয়। দাম্পত্য কলহের জের ৫ বছর বয়সী শিশুপুত্র মাসুদকে সাথে নিয়ে বছর দুয়েক আগে থেকে পিতার বাড়িতে বসবাস করছেন ভানু। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সেখানে যায় আশাদুল। এ সময় ঘটে এই হামলার ঘটনা।

ভানু বেগমের অভিযোগ, স্বামী তাকে ভরণ-পোষণ দেয় না। অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে সংসার চলায়। জোরপূর্বক সে ছেলেকে নিয়ে যেতে চাইলে পরিবারের লোকজনের সাথে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এর একপর্যায়ে তার কোমরে থাকা ছুরি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ দেয়। এতে চারজন আহত হন। এর মধ্যে দুজনের পেটে গুরুতর জখম হয়েছে। ঘটনার সময় তিনি বাড়ির পাশে ছিলেন। প্রতিবেশীদের সহায়তায় আহত চারজকে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তিনি। এদিকে হামলায় গুরুতর আহত হলেও তারা আশাদুলকে আটকে রাখতে সক্ষম হয়। সেখানে তাকে মারধর করা হয়। খবর পেয়ে গাংনী থানা পুলিশের একটি দল আশাদুলকে গ্রেফতার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে। তার মাথা ও পায়ে জখম হয়েছে। শারীরিক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানালেন মেডিকেল অফিসার সজিব উদ্দীন স্বাধীন।

পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন আশাদুল হামলার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার ছেলেকে দেখতে গিয়েছিলাম। ছেলেকে মিষ্টি খাওয়ানোর সময় শ্যালক-শ্যালিকারা আমার ওপর আক্রমণ করে। এভাবে কয়েকবার আক্রমণ করেছিলো বিধায় সাথে ছুরি নিয়ে ছিলাম। তাদের হামলা থেকে রেহাই পেতে পাল্টা আক্রমণ করেছি। আহতদের পারিবারিক সূত্রে আরো জানা গেছে, আশাদুল ও ভানু বেগমের দুজনেরই দ্বিতীয় বিয়ে। আশাদুলের প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলে রয়েছে। প্রথম স্ত্রী তালাক হলে তার চেয়ে বয়সে অনেক ছোট ভানু বেগমের সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই কলহ বিরাজ করছিলো। দুজনের মধ্যে অবিশ্বাস ও অভাব-অনটনে সব সময়ই ঝগড়া লেগে থাকতো। সেখানে টিকতে না পেরে পিতার বাড়িতে ফিরে আসেন ভানু বেগম। আশাদুলের সাথে তার ছাড়াছাড়ি না হলেও কোনো সম্পর্ক ছিলো না। গাংনী থানা সূত্রে জানা গেছে, আশাদুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে।