আলমডাঙ্গার পল্লি অভয়নগরের রইচ সর্দ্দার বজ্রপাতে নিহত হওয়ার পর থেকেই শঙ্কা ছিলো চুরির
জামজামি প্রতিনিধি: আলমডাঙ্গার অভয়নগরের কবর থেকে কঙ্কালের মাথার খুলি চুরির ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার রাতে কে বা কারা কবর খুড়ে মাথার খুলি নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় এলাকা চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
গ্রামবাসী জানায়, আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকি ইউনিয়নের অভয়নগর গ্রামের মৃত মকছেদ সর্দ্দারের ছেলে কৃষক রইচ সর্দ্দার গত বছর ২৪ সেপ্টেম্বর মাঠে কাজ করার সময় বজ্রপাতে নিহত হন। ওইদিনই পার্শ্ববর্তী ছত্রপাড়া গ্রামের কবরস্থানে দাফন করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা দেখতে পায় রইচ সর্দ্দারের কবরের মাটি খুড়া। পাশে রয়েছে বাঁশের কাবারি। তারা গ্রামের ফিরে এ ঘটনা জানালে গ্রামবাসী এসে দেখে রইচ সর্দ্দারের কবরে শুধু দেহ আছে মাথার খুলি নেই।
স্থানীয়রা বলেছে, বজ্রপাতে নিহত হওয়ার পর লাশ দাফনের সময়ই অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির মাথা চুরি করে এক শ্রেণির প্রতারকচক্র। এ মাথাও কি চুরি হবে? এ প্রশ্ন নিকটজনদের মাঝে সে সময় দানা বাধে। কবরের দিকে বিশেষ নজরও রাখা হয় তখন। দাফনের দীর্ঘদিন পর সুযোগ বুঝে কে বা কারা কবর থেকে রইচ সর্দ্দারের মস্তক চুরি করে নিয়ে গেছে।
বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তির মস্তক কি হয়? সচেতন অনেকেই বলেছেন, কিছুই হয় না। ওতে ম্যাগনেট কিম্বা অলৌকিক কিছুই থাকে না। ওই মাথা নিয়ে এক শ্রেণির প্রতারকচক্র হাতবদলের আড়ালে কাড়ি কাড়ি টাকার প্রতারণা করে। যেমন হুতুম প্যাচা, তক্কসাপ বা সীমানা প্লার নিয়েও প্রতারণার ফাঁদ পাতে ওরা। কীভাবে? বর্ণনা দিতে গিয়ে অভিজ্ঞজনদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, দুষ্প্রাপ্য এমন কিছুর মূল্য হাকে প্রতারকচক্রের হোতা। কিছু ব্যক্তির মাধ্যমে মূল্য প্রচার করে তা সংগ্রহ অভিযানে নামতে বাধ্য করে অর্থলোভীদের। এরপর সেই বস্তু প্রথম ও দ্বিতীয় দফা কেনাও হয়। তৃতীয় দফায় একজন অর্থশালীর নিকট তা অর্থের বিনিময়ে গোচিয়ে দেয়া হয় মোটাঅঙ্কে বিক্রি করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়। এরপরই প্রতারকচক্র লাপাত্তা হয়ে যায়। আর প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় যাদের অর্থ দেয়া হয়, তাদের নিকট থেকেও চাপ দিয়ে টাকার সিংহভাগ ফেরত নেয়া হয়। অন্যথায় জীবনটাই বিপন্ন হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। আলমডাঙ্গার পল্লি অভয়নগরের রইচ উদ্দীনের কঙ্কালের মাথা কবর থেকে যারা চুরি করেছে তারাও মূলত ওই প্রতারকচক্রেরই সদস্য।