ফলোআপ : চুয়াডাঙ্গার সুজায়েতপুর গহেরপুর মাঠে বালির ডেরায় উপজেলা প্রশাসনের অভিযান

স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে পার পেলেন বালি কারবারী কলম
বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের সুজায়েতপুর-গহেরপুর মাঠের ফসলি জমিতে ৩০-৪০ ফুট গভীর করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বাণিজ্যিকভাবে বালি উত্তোলনের সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত। বালি উত্তোলনের ডেরায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসন চালিয়েছে অভিযান। স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে রেহায় পেলেন বালি কারবারী ধুতুরহাট গ্রামের কলম আলী।
অভিযোগে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পদ্মবিলা ইউনিয়নের ধুতরহাট গ্রামের আলম আলী ওরফে কলম দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় বাণিজ্যিকভাবে বালি উত্তোলন করে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় গড়াইটুপি ইউনিয়নের সুজায়েতপুর-গহেরপুর মাঠে দীর্ঘদিন ধরে পিজর উদ্দীনের ছেলে দীন মোহাম্মদ এবং হায়দার আলীর ছেলে আশরাফুল আলমের ফসলি জমি লিজ নিয়ে পুকুর খননের অজুহাত দেখিয়ে ড্রেজার মেশিন ভিড়িয়ে বালি উত্তোলন করে আসছিলেন কলম। জমিগুলো ৩০ থেকে ৪০ ফুট গভীর করে খনন করা হয়েছে বলে অভিযোগকারীরা জানান। আর এ বালি ট্রাক্টর প্রতি ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে পুকুরগুলোর গভীরতা বেশি হওয়ায় আশপাশ এলাকার আবাদী ফসলি জমিগুলোতে ধানসহ অন্যান্য আবাদি ফসল হুমকির মুখে। কারণ ফসলি জমিতে পানি দিয়ে সেচ দিলে সেই পানি দ্রুত পুকুরে নেমে যাচ্ছে। এ নিয়ে গত বুধবার দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় একটি সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা প্রশাসনের দৃষ্টিগোচরে আসে। উপজেলা প্রশাসেনর নির্দেশে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে তিতুদহ ভূমি অফিস অভিযান চালান কলম আলীর বালির ডেরায়। ঘটনাস্থলে কাউকে না পেলেও বালি কারবারী কলম আলীকে তলব করেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা এসিল্যা- পুলক কুমার ম-ল। দুপুরের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে প্রথমে কলমের ভাই পরে কলম হাজির হন। অনুমতি ছাড়া বালি উত্তোলন করা আইনত অপরাধ স্বীকার করে নেন কলম আলী ও তার ভাই। অপরাধ স্বীকার করে নেয়ায় বিষয়টি মানবিক বিবেচনা করেন প্রশাসন। পরে এ ধরনের অপরাধ করবে না মর্মে কলম আলী ১শ টাকার স্ট্যাম্পে শর্ত মেনে নিয়ে মুচলেকা দিয়ে রেহায় পায়।
এদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানায়, কলম আলী দীর্ঘদিন থেকে একইভাবে জমি লিজ নিয়ে পুকুর খননের অজুহাত দেখিয়ে বালি উত্তোলন করে আসছেন। যখনই কোনো ঝামেলা হয় তখনি কৌশল অবলম্বন করে সেখান থেকে নিজেকে মুক্ত করে নেন।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা এসিল্যা- পুলক কুমার ম-ল বলেন, কলম আলীর এটি প্রথম অপরাধ তাই স্ট্যাম্পে মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এ ধরনের কোনো অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, বালুমহল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ সালের আইনে বলা আছে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে বালু বা মাটি উত্তোলন করলে সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী ব্যক্তিবর্গ (এক্সিকিউটিভ বডি) বা তাদের সহায়তাকারী কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণ অনূর্ধ্ব ২ (দুই) বছর কারাদ- বা সর্বনিম্ন ৫০ (পঞ্চাশ) হাজার টাকা হতে ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত অর্থদ- বা উভয় দ-ে দ-িত হবেন। অভিযুক্তর বিরুদ্ধে এই আইনের অধীন অপরাধ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালত বা বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচার হবে।