ঝিনাইদহে দলিল লেখক সমিতির নামে গঠিত চাঁদাবাজি সিন্ডিকেটের তালিকা করতে আদালতের নির্দেশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় দলিল লেখক সমিতির নামে অবৈধ সিন্ডিকেট গঠন করে কৃষক বা জমির মালিকদের কাছ থেকে বেপরোয়া চাঁদাবাজির সাথে জড়িতদের নাম ঠিকানা সংম্বলিত প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার ঝিনাইদহের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সি.জে.এম) আদালতের বিজ্ঞ বিচারক জাকির হোসেন এই আদেশ দেন।

আদালতের আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে কয়েকটি দৈনিক সংবাদপত্রে ঝিনাইদহ জেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে দলিল লেখক সমিতির নামে সিন্ডিকেট গঠন করে দাতা গ্রহীতাদের জিম্মি করে অবৈধভাবে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। সমিতি নামধারী চাঁদাবাজদের খপ্পরে পড়ে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। সরকারি একটি দফতরে সেবা নিতে এসে সেই দফতরের কর্মকর্তাদের নাকের ডগায় কোনো সমিতির নামে চাঁদাবাজি আইনের চরম লঙ্ঘন ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

আদালতের আদেশে বলা হয়েছে এ রূপ চাঁদাবাজির সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক। ফৌজদারী কার্যবিধির ১৮৯৮’র ২৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সংশ্লিষ্ট সাব রেজিস্টারকে এই মর্মে নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে যে, তার এখতিয়ারাধীন এলাকায় এ রূপ চাঁদাবাজির সাথে যারা সম্পৃক্ত আছে তদন্ত করে তাদের নাম ঠিকানা সংম্বলিত প্রতিবেদন আগামী ১৪ ফেব্রয়ারি ঝিনাইদহের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সি.জে.এম) আদালতে পেশকরার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আদেশের কপি ঝিনাইদহ জেলা রেজিস্টারসহ ৬ উপজেলার সাব-রেজিস্টারদের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। জনস্বার্থে দেয়া আদালতের এই আদেশের ফলে গ্রামের নিরীহ কৃষকরা গলাকাটা সিন্ডিকেটের হাত থেকে রক্ষা পাবে।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সভাপতি আক্তার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আলম, শৈলকুপায় দলিল লেখক সমিতির সভাপতি নান্নু মোল্লা ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, হরিণাকু-ুতে সভাপতি ওয়াজেদ আলী ও সম্পাদক বিশারত আলী, মহেশপুর একতা দলিল লেখক সমিতি নামে সভাপতি জাকির হোসেন ও সম্পাদক তাজুল ইসলাম, কালীগঞ্জে সভাপতি মো. আব্দুল হক ও সাধারণ সম্পাদক নাছির চৌধুরী, কোটচাঁদপুরে সভাপতি ইসমাইল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক সন্তোষ কুমার সিন্ডিকেট গঠন করে জোরপুর্বক চাঁদবাজি করছেন বলে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়।

জানা গেছে, দলিল রেজিস্ট্রি করতে সরকারকে পৌরসভা এলাকায় প্রতি লাখে সাড়ে ১১ হাজার ও পৌরসভার বাইরে সাড়ে ৯ হাজার টাকা করে ফি দিতে হয়। কিন্তু বেআইনীভাবে গঠিত এই সমিতি সরকার নির্ধারিত ফির বাইরে পৌরসভা এলাকায় প্রতি লাখে ১৬ হাজার ও ইউনিয়নে নিচ্ছে ১৫ হাজার টাকা করে আদায় করছেন।