স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে ইসি চাই

 

নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে আবারও সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান করে ছয় সদস্যের সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের নির্দেশে গতপরশু ৬ সদস্যের অনুসন্ধান বা সার্চ কমিটি করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। এই কমিটি নিয়ে বিএনপি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেও আওয়ামী লীগসহ অন্য দলগুলো ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। উল্লেখ্য যে, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে রাষ্ট্রপতির দীর্ঘ আলোচনার পর অনুসন্ধান কমিটির প্রধানসহ অন্য সদস্যদের নাম চূড়ান্ত করা হয়। বর্তমান রকিব কমিশন গঠনের সময়ও অনুসন্ধান কমিটির প্রধান ছিলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তখন অনুসন্ধান কমিটি ছিলো চার সদস্যের।

এই অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের নিয়ে রাজনৈতিক মহলে ভিন্ন বক্তব্য থাকলেও সচেতন সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা তারা প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার পদের বিপরীতে সর্বজন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নাম বাছাই করে সুপারিশ করতে সক্ষম হবেন। যাদেরকে অনুসন্ধান বা সার্চ কমিটিতে নেয়া হয়েছে তাদের প্রত্যেকের রয়েছে উজ্জ্বল ভাবমূর্তি। স্ব স্ব ক্ষেত্রে তাদের অবস্থান প্রশ্নের ঊর্ধ্বে এমন অভিমতই পাওয়া গেছে গণমাধ্যম মারফত।

আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে বাছাই করা নামসহ সুপারিশ করতে হবে সার্চ কমিটিকে। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এবারই ইসিতে কমপক্ষে একজন নারী থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ নতুন ইসিতে একজন নারী থাকবেন। সবার প্রত্যাশা নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উপযুক্তদের বাছাই করতে সক্ষম হবেন এবং এ থেকে রাষ্ট্রপতি ভালো কিছু উপহার দেবেন। আমরা সবার ওপর দৃঢ় আস্থা রাখতে চাই। সমাজের কারো না কারোর ওপর আস্থা কিংবা বিশ্বাস রাখতেই হবে। এক্ষেত্রে জনসাধারণেরও ভূমিকা রাখার অবকাশ রয়েছে যদি সার্চ কমিটির সদস্যরা সেই পদ্ধতি মোতাবেক পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন মনে করেন। সব কথার শেষ কথা হলো আমরা স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যোগ্যদের ইসিতে চাই। এ নিয়ে কোনো রকম জটিলতা যাতে সৃষ্টি না হয় এটিই শুভবোধ সম্পন্ন সবার কাম্য। অকল্যাণ ও অসুন্দরের পথ রুদ্ধ হোক। কল্যাণ ও সুন্দরের পথ হোক মসৃণ। যে নির্বাচন কমিশন বিদায় নিতে যাচ্ছে তাও সার্চ কমিটির মাধ্যমে গঠিত হয়েছিলো। তাদের কিছু কর্মকাণ্ড প্রশ্নবিদ্ধ হলেও সর্বশেষ নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন সব মহলে প্রশংসা কুড়িয়েছে এবং দৃষ্টান্তযোগ্য হয়েছে। এটি ভবিষ্যতের জন্য নিঃসন্দেহে অনেক বড় স্বস্তির বার্তা। রাজনৈতিক দলগুলো সবসময় নিজেদের স্বার্থকেই বড় করে দেখে। এই বৃত্ত থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নিজেদের স্বার্থের জন্য জাতির ঐক্যের প্রতীক রাষ্ট্রপতিকে প্রশ্নের মুখে ফেলা যাবে না। আমরা বিশ্বাস করতে চাই, নতুন কমিশন গঠন এবং এ লক্ষ্যে সার্চ বা অনুসন্ধান কমিটির কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এমন কোনো কিছুর পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।