চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে ৯০ শিশু : ডায়রিয়া আক্রান্ত ৫৬

শীতের তীব্রতা হ্রাস পাওয়ায় চুয়াডাঙ্গায় শিশুদের মধ্যে রোগাক্রান্তের সংখ্যা যেন বেড়েই চলেছে

 

স্টাফ রিপোর্টার: শীতের তীব্রতা হ্রাস পাওয়ায় চুয়াডাঙ্গায় শিশুদের মধ্যে রোগাক্রান্তের সংখ্যা যেন বেড়েই চলেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে মোট ৯৩ শিশু চিকিৎসাধীন রয়েছে। এর মধ্যে গতকালই ভর্তি হয়েছে ৬৫ শিশু। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশু ৫৬। ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে অধিকাংশ শিশুর বয়স দেড় থেকে ৩ বছর। এদিকে গতকাল সন্ধ্যা নিউমনিয়ায় আক্রান্ত এক শিশু মারা গেছে বলে হাসপাতালসূত্রে জানা গেছে। হঠাত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে জেলার অসংখ্য শিশু ডায়রিয়া এবং নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চিকিৎসা নেয়ার জন্য মায়েরা তাদের শিশুকে কোলে নিয়ে বসে আছে। অধিকাংশ মায়েদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের শিশুরা ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালসূত্রে জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে এ মাসে শিশু রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। ভর্তি হয়েছে ওয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে ৭ গুণেরও বেশি। গতরাত ১২ পর্যন্ত শিশু ওয়ার্ডে রোগীর সংখ্যা ছিলো ৯৩। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ৫৬ ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত ৩০ জন। এছাড়া গত কয়েকদিন ধরে ভর্তি রয়েছে আরও ৫৩ জন। ১৩টি বেডের বিপরীতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বর্তমানে প্রায় ৭ গুণেরও বেশি শিশু ভর্তি রয়েছে। ফলে নার্সরা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। অনেকেই বেড না পেয়ে মেঝেতে ও বারান্দায় রয়েছেন।

এ বিষয়ে গতরাতে সদর হাসপাতালে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. এহসানুল হক মাসুম জানান, হঠাত আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। শিশুদের ঠিকমতো টিকা প্রদান ও ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো হলে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। তাছাড়া ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে শিশুকে দূরে রাখা এবং গরম কাপড় পরানো জরুরি। ডায়রিয়া এক ধরনের পানিবাহিত রোগ। রোটা ভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া হয়ে থাকে। ৬ থেকে ১৬ মাস বয়সী আক্রান্ত শিশুকে ঘন ঘন খাবার স্যালাইন ও মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো প্রয়োজন। যে সকল শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। শিশুদের ঠাণ্ডা আবহাওয়া থেকে দূরে রাখতে হবে। শিশুরা প্রস্রাব করলে দ্রুত পোশাক পরিবর্তন করে দিতে হবে। অনেক সময় নিউমোনিয়ার কারণে শিশুদের নাক আটকে যায় এবং বমি করে। এজন্য নাক কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করে দিতে হবে। বাজারের কোটোর দুধ শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। তাই শিশু জন্মের পর মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো উচিৎ। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ঘন ঘন মায়ের বুকের দুধ, পাতলা খাবার ও স্যালাইন খাওয়াতে হবে। কারণ অনেক সময় কিডনিতে পানি না যাওয়ার ফলে কিডনি ফেল হয়ে শিশুর মৃত্যু হয়। এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় মেহেরপুর বাড়াদী আবদুর রহীমের ৪ মাস বয়সী কণ্যা চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। সে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলো বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।