চুয়াডাঙ্গার গাইদঘাটে শোকের ছায়া : দাফনের সময় আলোচনায় পুরোনো বিতর্ক
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা মিয়ার বেলগাছির দু বোনের বিয়ে হয়েছিলো গাইদঘাটের একইবাড়িতে। দু বুলবুলি ও মর্জিনা খাতুন মিনি গতকাল বুধবার একই দিনে মারা গেলেন। আধাঘণ্টার ব্যবধানে দু বোনের মৃত্যু নিকটাত্মীয় স্বজনকে শোকার্ত করে তোলে। তবে দু বোনের দাফন পাশাপাশি নয়, পৃথক স্থানে সম্পন্ন করা হয়েছে।
বাদ আছর বড় বোন বুলবুলি খাতুনের (৫৫) দাফন সম্পন্ন করা হয় গাইদঘাটের গ্রাম্য কবরস্থানে। আর সন্ধ্যায় মর্জিনা খাতুন মিনির (৫২) দাফন কাজ সম্পন্ন করা হয় তার স্বামীর আস্তানায় পূর্বথেকে তৈরি করে রাখা কবরে। মর্জিনা খাতুন মিনির স্বামী আব্দুল হালিম দুদু নিজেকে পীর বলে দাবি করে এলাকায় শুধু বিতর্কেরই সৃষ্টি করেননি, তিনি গ্রাম সংলগ্ন নিজের ২৫ শতক জমিতে আস্তানায় তাদের স্বামী-স্ত্রীর কবর পূর্ব থেকে প্রস্তুত করে তাতে টাইলস বসিয়ে বিরূপ সমালোচনার পাত্র হয়ে দাঁড়িয়েছেন। সে কারণে মর্জিনা খাতুন মিনির দাফনে তার ভক্ত অনুরাগী আর আপন আত্মীয়স্বজন ছাড়া গ্রামের তেমন মসুল্লিদের শরিক হতে দেখা যায়নি। অবশ্য বুলবুলি খাতুনের দাফনে দলমত নির্বিশেষে মানুষ নামাজে জানাজায় যেমন শরিক হয়েছেন, তেমনই দাফনেও অংশ নিয়েছেন।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা বেলগাছি মিয়াপাড়ার মরহুম আব্দুল করিম ম-লের ৩ ছেলে ৬ মেয়ে। দু মেয়ে বুলবুলির সাথে গাইদঘাট রাজধানীপাড়ার হাজি আব্দুল মজিদ ভুলুর সাথে আর মজির্না বেগম মিনির সাথে মাওলানা আব্দুল হালিম যুক্তিবাদী দুদুর বিয়ে হয়। দু বোন একই বাড়ির পুত্রবধূ হয়ে ভালোই চালাচ্ছিলেন সংসার। বুলবুলি খাতুনের রয়েছে ২ মেয়ে এক ছেলে। মেয়েদের বিয়ে হয়েছে। ছেলে দোকানি। আর মজিনা খাতুন মিনির? দু সন্তান হয়েছিলো বটে। বাঁচেনি। ফলে গ্রামেরই এক মেয়ে দত্তক নিয়েছেন আব্দুল হালিম দুদু যুক্তিবাদী। বর্তমানে তিনি সেজে বসেছেন পীর। যাকে অন্যের সন্তান নিতে হয়েছে তাকে কি পীর হওয়া সাজে? এরকম প্রশ্নও মাঝে মাঝে সুনতে হয়ে গ্রামে।
এসব তথ্য দিয়ে স্থানীয়রা বলেছেন, গতকাল বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বুলবুলি কাপড় কাচছিলো। হঠাত অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত এগিয়ে যান ছোটবোন দায়েদি মর্জিনা খাতুন মিনি। তার কোলের ওপরই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বুলবুলি খাতুন। এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন মর্জিনা খাতুন মিনি। তাকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয়। জরুরি ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন, আগেই মারা গেছেন। মৃতদেহ গ্রামে ফিরিয়ে পাশাপাশি রাখা হয়। শোকের ছায়া নেমে আসে গ্রামে। কিন্তু যখনই মর্জিনার দাফন ওই আস্তানায় দেয়া হবে বলে জানানো হয় তখনই পুরোনো বিতর্ক নতুন রূপে উঠে আসে স্থানীয়দের মুখে মুখে।