ফলোআপ জীবননগর আন্দুলবাড়িয়ায় ট্রেন-প্রাইভেটকার সংঘর্ষ : আহত বিএনপি
জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়ার বেলতলার অরক্ষিত রেল ক্রসিঙে আপ রুপসা ট্রেনের সাথে প্রাইভেট কারের সংঘর্ষে গুরুতর আহত উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খান খোকনকে গতকাল শুক্রবার পিজি হাসপাতালের আইসিইউ থেকে বেডে স্থানন্তর করা হয়েছে। তিনি এখন আশঙ্কা মুক্ত। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানের ১৩টি হাড় ভেঙ্গেছে। যা অচিরেই অপারেশন করা হবে। অন্য দিকে তার মেয়ে আসমা আক্তার এ্যানির শরীরের ৩ স্থানের হাড় ভাঙে। যা বৃহস্পতিবার ৪ ঘণ্টা ধরে চিকিৎসকরা ফলপ্রসু অপারেশন করেছেন। এদিকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শামসুজ্জামান দুদু গুরুতর আহত বিএনপি নেতাকে গতকাল বিকেলে পিজি হাসপাতালে দেখতে যান। এ সময় তিনি তার শরীরের খোঁজখবর নেন। গত ৪ জানুয়ারি মর্মান্তিক ট্রেন-প্রাইভেটকারের মধ্যে এ সংঘর্ষ ঘটে। সংঘর্ষে বিএনপি নেতা খোকন খানের নাতীন শিশু আহমেদ রেফাজ রাফিন (৫) নিহত হয়। আহন হন তিনিসহ মেয়ে আসমা আক্তার এ্যানি ও নাতীন রাফিয়া (৮)।
জীবননগর উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামের মৃত হাজি আনছার আলীর ছেলে রেফাজ উদ্দিন রিপন বাংলাদেশ বিমানের স্টুয়াট। নতুন বছরের ছুটিতে তিনি স্ত্রী ও ২ সন্তানকে নিয়ে বাড়িতে বেড়াতে আসেন। গত ৪ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শ্বশুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন খান খোকনসহ স্ত্রী ও ২ সন্তানকে নিয়ে প্রাইভেটকারযোগে ফিরছিলেন ঢাকাতে। পরের দিন ছিলো রাফিনের জীবনে প্রথম স্কুল। এ জন্যই দ্রুত ফেরা হচ্ছিলো ঢাকা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আন্দুলবাড়িয়া-সরোজগঞ্জ সড়কের বেলতলা অরক্ষিত রেল ক্রসিং পার হওয়াকালে রেল লাইনের ওঠার পর প্রাইভেটের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় মুহূর্তের মধ্যে খুলনা থেকে সৈয়দপুরগামী রূপসা ট্রেন এসে পড়ে। অবস্থা মারাত্মক বুঝতে পেরে রেফাজ উদ্দিন রিপন ড্রাইভিং সিট থেকে নেমে দরজা খুলে দেন পরিবারের সকলের বেরিয়ে আসার জন্য। তাদের বের হওয়ার মুহূর্তে ট্রেন এসে হুইসেল বাজিয়ে প্রাইভেটে সজোরে ধাক্কা মারে। গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে মারাত্মক আহত হন স্ত্রী এ্যানি, মেয়ে রাফিয়া ও শ্বশুর আনোয়ার হোসেন খান খোকন। এ দুর্ঘটনায় মারা যান একমাত্র শিশু সন্তান রাফিন। আহত হন স্ত্রী এ্যানি ও আনোয়ার হোসেন খান খোকন। তাদেরকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে তাদের অবস্থার অবনতি হলে দুটি হেলিকপ্টারযোগে নেয়া হয় ঢাকা পিজি হাসপাতালের আইসিইউতে। পিজি হাসপাতালের আইসিইউ থেকে এ্যানিকে গত সোমবার বেডে স্থানন্তর করে বৃহস্পতিবার শরীরে অস্ত্রপাচার করা হয়। আর ১০ দিন পর গতকাল আনোয়ার হোসেন খান খোকনকে আইসিইউ থেকে বেডে স্থানন্তর করা হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তারা এখন আশঙ্কামুক্ত। একটু সুস্থ হলে আনোয়ার হোসেন খান খোকনের শরীরে অস্ত্রপাচার করা হবে।