শুরু হয়েছে মরসুমের তৃতীয় দফা মৃদু শৈত্যপ্রবাহ

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাসহ ব্যক্তি উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত

 

স্টাফ রিপোর্টার: শীতের তীব্রতা বেড়েছে। জানুয়ারিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বইতে শুরু করেছে দ্বিতীয় শৈত্যপ্রবাহ। গতকাল বৃহস্পতিবার রংপুর ও সিলেট বিভাগের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বইতে শুরু করেছে বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে। ঢাকায়ও শীতের শেষে এসে উত্তরে হাওয়ায় শীত অনুভূত হচ্ছে বেশ। চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে দুস্থ শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনি¤œ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় শ্রীমঙ্গলে ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ছিলো চাঁদপুরে ২৭ দশমিক  ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ও সবনি¤œ তাপমাত্রার ব্যবধান দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। ফলে রাতে তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় সর্বনি¤œ ১১ দশমিক ৬ ও সর্বোচ্চ ২৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, উত্তরবঙ্গে প্রবাহমান শৈত্যপ্রবাহ আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে। রোববার পর্যন্ত রাতের তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গাসহ সারাদেশেই কমতে থাকবে। এই সময় দেশের কোথাও কোথাও আকাশ আংশিক মেঘলা থাকবে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত নদ-নদী অববাহিকায় মাঝারি ধরনের এবং অন্যত্র হালকা  থেকে মাঝারি কুয়াশা থাকবে।

বাংলাদেশে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীত মরসুম ধরা হয়। এবার ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেলেও জানুয়ারি পর্যন্ত যে গড় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়, তা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি বলে আবহাওয়া অধিদফতর জানায়। পৌষের শেষভাগে এসে ৮ জানুয়ারি থেকে রাজশাহী, পাবনা, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও শ্রীমঙ্গলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। এরপর সপ্তাহ না যেতেই বৃহস্পতিবার বইতে শুরু করেছে তৃতীয় শৈত্যপ্রবাহ। এই শৈত্যপ্রবাহ শুরু আগে গত মঙ্গলবার গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে রাজশাহী, রংপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক এলাকায় শীতের তীব্রতা বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

গতকালও চুয়াডাঙ্গায় কয়েকটি সংগঠনের তরফে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয় বলে খবর পাওয়া গেছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রবীণ হিতৈষী সংঘ ও জরাবিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার উদ্যোগে দুস্থ শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ রকরা হয়েছে। গতকাল বিকেলে চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের বোয়ালমারী গ্রামে সংস্থার খুলনা ভিাগীয় মহাসচি আক্তারুজ্জামান গাবুর তত্ত্বাবধানে ১২০ পিস শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা এনডিসি তরিকুল ইসলিাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপসহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম, নীলমণিগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথান শিক্ষক খলিলুর রহমান, অ্যাড. মসলেম উদ্দীন। সভাপতিত্ব করেন এমএম মঞ্জুর হোসেন চান মিয়া। এদিকে সাউথইস্ট ব্যাংক চুয়াডাঙ্গা শাখার উদ্যোগে গতকাল শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয় বলে প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে বলা হয়েছে, শীতবস্ত্র বিতরণকালে শাখা ব্যবস্থাপক সিনিয়র প্রিন্সিপল অফিসার কেএম লুৎফর রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সাইফুল হাসান জোয়ার্দ্দার টোকনসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সারাদেশে চলছে শীতের তীব্রতা। পৌষের এই শেষ সপ্তাহে যখন ঝিনাইদহের ছিন্নমূল মানুষ শীতে কাঁপছে ঠিক সেই সময় গভীর রাতে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালো ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন। বুধবার গভীর রাতে শহরের বিভিন্ন স্থানে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হয়। শহরের বাসটার্মিনাল, পবহাটি, চুয়াডাঙ্গা স্ট্যান্ড, হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্থানে শীতার্ত মানুষের মাঝে এ কম্বল বিতরণ করা হয়। সে সময় জেলা প্রশাসক মাহবুব আলম তালুকদার, ঝিনাইদহের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক আবু ইউসুফ মোহাম্মদ রেজাউর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আব্দুর রউফ ম-ল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আছাদুজ্জামান, এনএসআই’র সহকারী পরিচালক ইমদাদুল হকসহ জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকতারা উপস্থিত ছিলেন।