নবীনগরে টাকার লোভে একে একে তিন সন্তানকে খুন

 

স্টাফ রিপোর্টার: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে শিশু মুজাহিদের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় গ্রেফতার তার বাবা শাজাহান মিয়া ওরফে সাজু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ হেফাজতে ১৬১ ধারায় ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান মো. সোহাগ উদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় দেয়া জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, টাকার লোভে মুজাহিদসহ একে একে তিন সন্তানকে খুন করেছেন। সন্তান খুনের ঘটনায় অন্যকে ফাঁসিয়ে পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে আপসরফা করতেন ঘাতক শাজাহান।

নবীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মেজবাহ উদ্দিন ঘাতকের জবানবন্দি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানান, টাকার লোভেই শাজাহান একের পর এক নিজের সন্তানদের হত্যা করছেন। সন্তানদের খুনের ঘটনায় অন্যকে ফাঁসিয়ে পরবর্তীতে টাকার বিনিময়ে আপসরফা করতেন পাষণ্ড বাবা। আগের দুই সন্তানকে খুনের পর এমনটি করেছেন শাজাহান। এবারও মুজাহিদকে হত্যা করে অন্যকে ফাঁসানোর ফন্দি এঁটেছিলেন শাজাহান। পুলিশ পরিদর্শক আরও জানান, শিশু মুজাহিদ হত্যার ঘটনায় তার মা শাহানা বেগম বাদী হয়ে রোববার রাতে শাজাহানের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেছেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে শাজাহান তিন সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। ছোট ছেলে মুজাহিদের গলায় রশি পেঁচিয়ে মাটির ঢেলা দিয়ে মুখে আঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয় বলে জানিয়েছেন শাজাহান।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২৪-২৫ বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে নাটঘর ইউনিয়নের কুঁড়িঘর গ্রামের শাজাহানের প্রথম ছেলে ওবায়দুলের (৪) লাশ পাওয়া যায় বাড়ির পাশের পাট ক্ষেতে। এর বছর দশেকের পর দ্বিতীয় ছেলে রাকিবের (৩) লাশ পাওয়া যায় বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে। প্রথম ঘটনায় প্রতিবেশী সাজেদ আলী, কুদ্দুস আলীসহ অনেককেই দায়ী করা হয়। এ ঘটনায় মামলাও হয়। পরে গ্রাম্য সালিসে অভিযুক্তদেরকে জরিমানা করা হয়। রাকিবের লাশ উদ্ধারের পর সাজু মিয়ার বিরুদ্ধেই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে।