কথার তীর ছুঁড়ে একে ওপরকে করলেন ধবল ধোলাই

কেরুজ শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ॥ ২১ জানুয়ারি নির্বাচন

দর্শনা অফিস/বেগমপুর প্রতিনিধি: কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে সভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শুরু করতে করতে দুপুর ১২টা পেরিয়ে গেছে। প্রতিটি সংগঠনের মহড়ার কারণেই সভা শুরু হতে বিলম্ব হয়। গতকাল দুপুর ১২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় একে ওপরকে ঘায়েল করে রেখেছেন বক্তব্য। ইউনিয়নের মূলপদ প্রার্থীরা একে ওপরকে করলেন ধবল ধোলাই। দিনভর কেরুজ আঙ্গিনা ছিলো জমজমাট। কেরুজ চিনিকলে ভোটার সংখ্যা হাজার না পেরুলেও ৪ জন সভাপতি প্রার্থী ও ২ জন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর পক্ষে সকালের মহড়া ছিলো চোখে পড়ার মতো। যেন প্রতিটি সংগঠনের পক্ষে উপস্থিতির সংখ্যা হাজার পেরিয়েছে।
তবে বাকি লোকগুলো কারা? কেরুজ চিনিকলের সেনিটারি বিভাগের সামনে অনুষ্ঠিত সাধারণসভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়নের সভাপতি তৈয়ব আলী। ৪ পৃষ্ঠার বার্ষিক প্রতিবেদন পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক মাসুদুর রহমান। আলোচনার শুরুতেই ঘোষণা দেয়া হয় নির্বাচনে প্রতিন্দ্বন্দ্বী প্রার্থী ছাড়া কাউকে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ দেয়া হবে না। ফলে বক্তার সংখ্যা তুলনামূলক ছিলো কম। ইউনিয়নের যুগ্মসম্পাদক জয়নাল আবেদীনের উপস্থাপনায় বক্তব্য দেন, সাবেক সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম প্রিন্স, সভাপতি প্রার্থী ফিরোজ আহমেদ সবুজ, মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ইসমাইল হোসেন ও আতাউর রহমান। আরও বক্তব্য দেন, সহসভাপতি রেজাউল ইসলাম, ফারুক আহম্মেদ, সহসভাপতি প্রার্থী জুলফিকার হায়দার জুলু, খলিলুর রহমান, যুগ্মসম্পাদক প্রার্থী খবির উদ্দিন, মহিদুল ইসলাম শাহীন, ইদ্রিস আলী, সদস্য প্রার্থী সাংবাদিক ইয়াছির আরাফাত মিলন, এএসএম কবির, সাহেব আলী শিকদার, আ. রাজ্জাক, আজিজুল হক ও সাইফুদ্দিন।
বক্তারা বলেন, শ্রমিক-কর্মচারীরা মিলের প্রাণ। অথচ এ শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ব্যপারে এ পর্যন্ত চোখে পড়ার মতো তেমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। সাধারণ শ্রমিকরা আজ নানাভাবে অবহেলিত, অধিকার বঞ্চিত। তাই আসুন শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে এক কাতারে দাঁড়ায়। নির্বাচনের আগে নেতারা শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ের জন্য অনেক কথা বললেও ক্ষমতা হাতে পেলে প্রতিশ্রুতির সকল বানি ভুলে যায়। সাধারণ শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য হিস্যা থেকে বারবার হচ্ছে বঞ্চিত। ক্ষমতায় থাকা ওই নেতারা নিজের আখের গুছাতে  নেমে পড়েন লুটপাটের প্রতিযোগিতায়। তারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বয়সের ভারে নুয়ে পড়া সেকেলের এ মিলটিকে দিনদিন নিয়ে যাচ্ছে ধ্বংশের দ্বার প্রান্তে। একটি কথা সকলকে মনে রাখতে হবে মিল বাঁচলেই, শ্রমিকরা বাঁচবে, টিকবে আমাদের নেতৃত্ব। এছাড়া বক্তারা একে ওপরের ওপর আক্রশমূলক বক্তব্যে ধবল ধোলাই করতে ছাড়েননি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জয়নাল আবেদীন, মজিবর রহমান, এনামুল হক, সাজাহান, বাবুল আক্তার, বাবর আলী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছিম, আব্দুল্লাহ আল মামুন, সাবু তরফদার প্রমুখ। সভায় আগামী ২১ জানুয়ারি কেরুজ শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের দ্বি-বার্ষিক নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়েছে। মিলের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) মোশারফ হোসেনকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন পরিচালনা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য সচিব মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আকুল হোসেন, সদস্য কেরুজ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন শিকদার, আব্দুল ফাত্তাহ ও ফিদা হাসান বাদশা। নির্বাচন পরিচালনা পর্ষদ কর্তৃক তফসিল ঘোষশার অপেক্ষা এখন। কবে নাগাদ তফসিল ঘোষণা করা হচ্ছে তা এখনো পরিষ্কার নয়।
উল্লেখ্য, এবার ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির স্থলে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।