চোর চোর বলে চিৎকার দিতেই ডাকাতদলের বোমা নিক্ষেপ ॥ বোমাঘাতে একজন নিহত

চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার কুলপালায় একদল দুষ্কৃতীর অবস্থান ॥ বাড়ির পাশে ফিস ফিস করে কথা শুনে ভাঙে ঘুম

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার কুলপালায় ডাকাতদলের বোমাঘাতে নিহত হয়েছেন নাসির উদ্দীন (৫০) নামের এক গ্রামবাসী। আহত হয়েছেন তারই আত্মীয়। গতরাত ১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত লিটনকে (৩৫) চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে স্থানীয়রা বলেছেন, রাত ১টার দিকে সফল হাঁসখামারি জাকিরের বাড়ির অদূরবর্তী নাসির উদ্দীনের বাড়ির পাশে কয়েকজন ফিস ফিস করে কথা বলছিলো। নাসির উদ্দীনসহ পরিবারের সদস্যদের ঘুম ভেঙে গেলে তারা চোর চোর বলে চিৎকার দেয়। ডাকাতদলের কয়েকজন বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ে। চিৎকার চেঁচামেচিতে প্রতিবেশীরা ছুটে যায়। এরই একপর্যায়ে ডাকাতদল একটি বোমা নিক্ষেপ করে। নাসির উদ্দীন গুরুতর জখম হন। পরিবারের সদস্যরা নাসির উদ্দীনকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লে ডাকাতদল পালানোর চেষ্টা করে। প্রতিবেশীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে তারা আরো একটি বোমা নিক্ষেপ করলে লিটন আহত হন। নাসির উদ্দীন ও লিটনকে উদ্ধার করে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। কতর্ব্যরত চিকিৎসক ডা. রাবিজুল ইসলাম আহত লিটনকে ভর্তি করেন। নাসির উদ্দীনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে নেয়ার আগেই নাসির উদ্দীনের মৃত্যু হয়েছে।

ডাকাতদলের বোমার আঘাতে নিহত নাসির উদ্দীন কুলপালা পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি একই গ্রাামের মৃত বাদল ম-লের ছেলে। আহত লিটন কুলপালা পশ্চিমপাড়ার মিয়াজান ম-লের ছেলে। নাসির উদ্দীনের স্ত্রীর চাচাতো ভাই। নাসির উদ্দীনের পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতবিক্ষত হয়ে প্রচুর রক্তকরণে মৃত্যু হয়। আর লিটনের পিঠে বিদ্ধ হয়েছে বোমার স্পিøন্টার। তিনি আশঙ্কামুক্ত বলে মন্তব্য করেছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার চিৎলা ইউনিয়নের কুলপালা গ্রামটি চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর সড়ক ঘেঁষে অবস্থিত। পশ্চিমপাড়ায় বিল সংলগ্ন পুকুরের ধারেই রয়েছে বিশাল হাঁসের খামার। সফল খামারি জাকিরের বাড়ির পাশেই নাসির উদ্দীন বসবাস করতেন। তিনি একই গ্রামের ছেলে হলেও পশ্চিমপাড়ার মৃত আফছেদ আলীর তৃতীয় মেয়ের নাজেরা খাতুনের সাথে বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। ৪ সন্তানের জনক নাসির উদ্দীন নিজের ঘরেই ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত আনুমানিক ১টার দিকে বাড়ির পাশে দুষ্কৃতীকারীদের উপস্থিতি টের পেয়ে নাসির উদ্দীন ও তার বাড়ির লোকজন চোর চোর বলে চিৎকার দিতেই ঘটে বিপত্তি। ডাকাতদল বিলের ধার ধরে মজলিশপুরের দিকে পালিয়ে যায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। খবর পেয়ে গতরাতেই চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সদর হাসপাতালে হতাহতদের দেখতে ছুটে যান। ঘটনার বর্ণনা শোনেন।