স্টাফ রিপোর্টার: নিজ বাসভবনে ঢুকে গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সরকারদলীয় এমপি মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে গুলি করে হত্যার ঘটনা দেশজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় সুন্দরগঞ্জের বামানডাঙ্গায় গুলিবিদ্ধ হন লিটন। পরে রাত সাড়ে ৭টার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। একজন এমপিকে এভাবে হত্যার ঘটনার চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। এখনো খুনের মোটিভ উদ্ধার হয়নি। তবে এ বিষয়ে সবাই একমত যে পরিকল্পিতভাবে পেশাদার খুনিদের দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী দুই কিশোরের বর্ণনায়ও উঠে এসেছে দুঃসাহসিক এই হত্যাকাণ্ডের খণ্ডচিত্র।
তখন বিকেল ৪টা। ৫ জন অপরিচিত লোক এমপির বাড়ির সামনে রেললাইনে বসে ছিলেন। তারা দুটি মোটরসাইকেলে করে সেখানে আসেন।
দীর্ঘসময় ধরে তারা বারবার মোবাইল ফোনে কথা বলছিলেন। দুজন মাঝেমধ্যে হাঁটাহাঁটি করছিলেন এবং রেল ঘুমটির পাশে সড়কের ওপর মোটরসাইকেলের পাশে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। ওই সময় জুয়েল রানা ও সাইফুলসহ ৮-৯ জন কিশোর এমপি লিটনের দেয়া ক্রিকেট খেলারসামগ্রী দিয়ে তার বাড়ির বাইরের উঠোনে ক্রিকেট খেলছিলো। তিনি একটি চেয়ারে বসে খেলা দেখছিলেন। বিকাল আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে মোটরসাইকেল নিয়ে তিনজন অপরিচিত ব্যক্তি এমপির বাড়ির বাইরের উঠোনে এসে দাঁড়ান। একজন মোটরসাইকেলে বসে থাকেন। দুজন এমপিকে বৈঠকখানায় যেতে বলেন। এ সময় এমপি লিটন বলেন, কী বলার এখানে বললেই হবে। ঘাতকরা একপর্যায়ে জরুরি কথা আছে জানিয়ে অনেকটা জোর করেই এমপি লিটনকে বাসবভনের বৈঠকখানায় নিয়ে যান। কিছুক্ষণের মধ্যে কিশোররা ঘরের ভেতর থেকে কয়েকটি গুলির শব্দ ও চিৎকার শুনতে পায়। তারা দৌড়ে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করলে খুনিরা অস্ত্র উঁচিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে মোটরসাইকেলে চড়ে পালিয়ে যান। কিশোররা ঘরে গিয়ে দেখতে পায়, মেঝের মধ্যে রক্ত পড়ে আছে। আর এমপি লিটন বাড়ির ভেতরের উঠোনের দিকে ছুটে যাচ্ছেন। পরে ওই কিশোররা ক্রিকেট ব্যাট নিয়ে খুনিদের ধাওয়া করলেও তারা দুটি মোটরসাইকেলে চড়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। আশপাশের লোকজন ছুটে এসে এমপি লিটনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘণ্টা দুয়েক পর সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।