৫ জানুয়ারি বিএনপির কালোব্যাজ কর্মসূচি : যাবে না হার্ড লাইনে

 

স্টাফ রিপোর্টার: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষ পূর্তিকে ঘিরে কর্মসূচি পালনের ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। ৫ জানুয়ারি জেলা-উপজেলায় কালো ব্যাজ ধারণ করে কালো পতাকা মিছিল আর ৭ জানুয়ারি রাজধানীতে সমাবেশ করতে চায় দলটি। তবে সমাবেশ করার অনুমতি মেলেনি এখনো।

দলের নেতারা জানিয়েছেন, তারা হার্ড লাইনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে। তারা কোনো সংঘাতে যেতে চান না। শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল-সমাবেশ করতে চান। এই একই দিনে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ পালন উপলক্ষে রাজধানীতে দুই স্থানে সমাবেশ করার ঘোষনা দেয়ায় সেদিন ঢাকায় কোন কর্মসূচি রাখছে না বিএনপি। দু’দিন পর সোহরাওয়র্দী উদ্যানে সমাবেশ করার অনুমতি চেয়েছে দলটি। সেখানে অনুমতি না পেলে দলের নয়া পল্টন কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চায়।

দলের একজন সিনিয়র নেতা জানান, ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবসে চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে যাবেন। তার হাজিরার দিন নির্ধারন করে আদালত বলেছে হাজির না হলে জামিন বাতিল করা হবে। ফলে ঢাকায় সমাবেশের কোন কর্মসুচি রাখা হয়নি। এর সঙ্গে রাজনৈতিক যোগসূত্র থাকতে পারে। এখন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা সব জায়গায় ব্যবহূত হচ্ছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ৫ জানুয়ারি সারা দেশে মহানগর-জেলায় কালো পতাকা মিছিল ও কালো ব্যাজ ধারণের যে কর্মসূচি বিএনপি ঘোষণা করেছে, সেটা হবেই। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ জানুয়ারির সমাবেশও হবে। আইনি যে প্রক্রিয়া তাও চলছে। তিনি বলেন, আমাদের জেলা নেতৃবৃন্দ ব্যাপক প্রস্ততি নিয়েছেন। সকল নেতা-কর্মীর সমন্বয়ের একটি সাফল্যমণ্ডিত কর্মসূচি হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সরকার ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবসের কর্মসূচি পালন করতে বাধা দিলে তাদের মুখোশ আবারো উম্মোচিত হবে। এবং জনগণ তাদের বিচার করবে। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে সরকারের পক্ষ থেকেই উত্তেজনা ছড়ানো হচ্ছে। কোন উস্কানীতে আমরা পা দিবো না।

মোশাররফ বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার হরণ করা হয়েছে। ১৫৪ জন এমপি বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত হয়েছে। বাকি ভোটকেন্দ্রেও ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো না। সেদিনটিকে আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র রক্ষা দিবস বলছে এটা হাস্যকর।

দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি কোনো সাংঘর্ষিক কর্মসূচিতে যাবে না। ৫ জানুয়ারি শান্তিপুর্নভাবে গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করবো। আশা করি সরকার এই কর্মসুচিতে বাধা দিবে না। ৭ জানুয়ারী যে সমাবেশ হবে তা ও হবে শান্তিপুর্ন। সরকার এই সমাবেশের অনুমতি দিবে আশা করি। মির্জা ফখরুল বলেন, ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের নামে একটি তামাশার নির্বাচন করা হয়েছিল। সেই তামাশাতে বিএনপি যোগ দেয়নি। দেশের মানুষের শতকরা ৫ ভাগও যোগ দেয়নি। ১৫৪ জনকে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই দিনই গণতন্ত্রকে ধংস করা হয়েছে। গণতন্ত্রের অন্যতম স্তম্ভ সুষ্ঠু নির্বাচন, সেই নির্বাচন সে সময় হয়নি। ফলে ওই নির্বাচনের কারণে যে সরকার বসে আছে। আমরা মনে করি সেটা গণতান্ত্রিক সরকার নয়। সেজন্য আমরা ৫ জানুয়ারিকে মনে করি এটা একটা গণতন্ত্র হত্যা দিবস।