প্রত্যাশায় স্বাগত ২০১৭

 

স্টাফ রিপোর্টার: পঞ্জিকার নির্দিষ্ট নিয়মে আরও একটি খ্রিস্টীয় বছর বিদায় নিলো কাল। ২০১৬ সালকে বিদায় জানিয়ে গত মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিটে শুরু হয়েছে ২০১৭ সাল। হ্যাপি নিউ ইয়ার! পুরনো বছরের সব ব্যর্থতা, হতাশা আর না পাওয়ার বেদনাকে পেছনে ফেলে আজ সামনে তাকাবার দিন। নতুন আশায় উদ্ভাসিত হওয়ার দিন। নতুন বছরের এ শুভক্ষণে পাঠক, বিজ্ঞাপনাদাতা ও শুভ্যানুধায়ীকে দৈনিক পরিবারের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমাদের জাতীয় জীবনে ২০১৬ সাল ছিলো ঘটনাবহুল। কথায় বলে, ‘যায় দিন ভালো, আসে দিন মন্দ’। তবে আমরা সেটা চাই না। আমাদের যেদিন গেছে, তা হোক সফলতার কিংবা ব্যর্থতার। আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনগুলো সাজাবো নির্ভুলভাবে। প্রবাদ থাকুক প্রবাদের মতো, আমরা চলবো নিজেদের বুদ্ধিমত্তায়।

গত এক বছর আমাদের জন্য অনেক কারণেই আলোচিত-সমালোচিত। রাজনৈতিক যোগ-বিয়োগ, ধর্মীয় সমপ্রীতি-সহিংসতা, আন্তর্জাতিক শুভ-মন্দ দৃষ্টি আমাদের বারবার হোঁচট খেতে বাধ্য করলেও আমরা উঠে দাঁড়িয়েছি। বিপদসংকুল পথেই দীপ্ত পায়ে হেঁটেছি। আমাদের সংস্কৃতির ওপর থাবা এসেছে- তবুও আমরা থমকে যাইনি। আমরা হোঁচট পথে চলতে চলতে দুরন্ত পথিক হয়েছি। ২০১৬ সালের যাবতীয় ঘটনার আলোকপাত মূল উদ্দেশ্য নয়। ব্যক্তিজীবনে, সামাজিক প্রেক্ষাপটে, রাষ্ট্রীয় বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য থমকে যাওয়ার কারণ না খুঁজে অশুভকে বিতাড়িত করে শুভক্ষণকে বরণ করবো। বিগত সময়ের সব ভুল শুধরে নিয়ে নতুন সূর্যকে অভিবাদন জানানোর সময় এসেছে আজ। গতকাল শনিবার সূর্যাস্তের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে একটি বছরের হিসাব-নিকাশ। ২০১৬ কে কালরাতে বিলীন করে কালের যাত্রার ধ্বনিতে নতুন প্রভাতে ‘রবির কর’ দশ দিগন্তে আলোর নাচন তুলেছে নতুন বছরের। নতুন দিনের নতুন সূর্যালোকে স্নান করে সিক্ত হবে জাতি-বর্ণ-নির্বিশেষে সব শ্রেণ-পেশার মানুষ। বিগত বছরের সব কালিমা ধুয়ে-মুছে নতুন কেতন ওড়াতে ওড়াতে এগিয়ে যাবে সময়। এগিয়ে যাবে সভ্যতা, হিংসা-বিদ্বেষ-হানাহানিমুক্ত রাজনীতি, অর্থনীতি আর সংস্কৃতি। অনাবিল স্বপ্ন আর অফুরন্ত প্রাণোন্মাদনা নিয়ে নতুন সূর্যের আলোয় অগ্রসর হবে মানুষ।

রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক ও সর্ম্পকের টানাপোড়েনসহ ঘটনাবহুল ২০১৬ সালে আমাদের কারো হিসাবের খাতায় জমা হয়েছে অনেক অনেক সাফল্য, স্মরণীয় দিন। আবার কারো হিসাব ব্যর্থতা, হাহাকার আর শোকে কষ্টে ভরা। অতীতের সকল অসুন্দর এবং ব্যর্থতাকে পেছনে ফেলে সুন্দর আগামীর প্রত্যাশায় স্বাগত ২০১৭ সালকে। স্মৃতির ক্যানভাসে ২০১৬ সালের সেই দিনগুলো কড়া নাড়বে মনের দরোজায়।

বছরের প্রথম দিনটি একেবারেই আলাদা। কারণ এর মধ্যদিয়েই শুরু হয়েছে একটি নতুন বর্ষপরিক্রম। নতুন বছরে নতুন হয়ে জেগে উঠে মানুষ একরাশ প্রত্যাশার স্বপ্ন নিয়ে। সূচিত হবে নতুন যাত্রা।

রাজনৈতিক অনিশ্চিয়তা কাটিয়ে বাংলাদেশ হয়ে উঠুক সবার এমন প্রত্যাশা সবার। শান্তিকামী মানুষের প্রার্থনা- আর কোন সহিংসতা নয়, কোন হত্যা, খুন কিংবা হানাহানির রাজনীতি নয়। ২০১৭ হোক শান্তির বীজ বপনের সাল। থেমে যাক অস্ত্র বা হানাহানির মহড়া, সব যুদ্ধ-সন্ত্রাস। শান্তিকামী মানুষের এই প্রার্থনা! শুধু নতুন একটি বছরই নয়, শুরু হলো একটি চ্যালেঞ্জিং বছরও। বিদায়ী বছরের অনেক অমীমাংসিত ইস্যু নিষ্পত্তিরও বছর হবে এটি। অনেক চ্যালেঞ্জ নিয়েই ২০১৭ আমাদের সামনে এলো। নতুন এ বছরে বেশকিছু জ্বলন্ত ইস্যুরও সমাধান করতে হবে রাষ্ট্রবিধায়কদের।

জাতির প্রত্যাশা সংঘাত-সাংঘর্ষিক রাজনীতির পরিবর্তে সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতার রাজনীতির প্রবর্তন।

ব্যক্তিজীবনে, সামাজিক প্রেক্ষাপটে, রাষ্ট্রীয় বা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যত অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, তার জন্য থমকে যাওয়ার কারণ না খুঁজে অশুভকে বিতাড়িত করে শুভক্ষণকে বরণ করবো। কবিগুরুর ভাষায় বলতে হয়, ‘মুছ যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা। অগ্নিস্নানে শুচি হোক ধরা। সব আশা-স্নেহ-ভালোবাসা স্মৃতি হয়ে থাকুক। আগামী আসুক পুষ্পশোভিত হয়ে। প্রজ্জ্বলিত সূর্যের আলোকচ্ছটায় আলোকিত হোক বিশ্ব। বিশ্বের যাবতীয় মানুষের কল্যাণ হোক। উত্তরোত্তর সফলতার দিকে এগিয়ে যাক।