কুষ্টিয়ায় পুলিশ হেফাজতে নিহত কৃষকের নামে থানায় মামলা দায়ের

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় পুলিশ হেফাজতে নিহত কৃষক কাশেম খলিফার নামে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। গত রোববার রাতে বটতৈল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এহসানুল করীম বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এদিকে ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার সকালে নিহতের লাশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে পুলিশ। বাদ আছর কবুরহাট গোরস্থানে কাশেম খলিফার লাশ দাফন করা হয়।

নিহতের ছেলে জামিরুল বলেন, পুলিশ অন্যায়ভাবে আমার বাবাকে হত্যা করেছে। বাবার হত্যার সুষ্ঠ বিচার চেয়ে আমরা আদালতে যাব। তিনি বলেন, গতকাল সোমবার লাশ দাফন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় মামলা করতে পারিনি। মঙ্গলবার সকালে বাবার নির্যাতনকারী পুলিশ কর্মকর্তা ও যারা টাকা দিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হবে।

নিহতের পুত্রবধূ রিপা খাতুন বলেন, পুলিশ তাজা মানুষটা ধরে চোখের সামনে পেটাতে পেটাতে মেরে ফেললো। আমরা হত্যাকারী পুলিশের ফাঁসি চাই।

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি হাফিজ আল আসাদ বলেন, কবুরহাট ক্যানেলের একটি সরকারি জমি আমজেদ হোসেন ও তার স্ত্রী বানু পারভীনের নামে বন্দোবস্ত দেয়া হয়। প্রতিবেশী কাশেম খলিফা (নিহত ব্যক্তি) দাবি করে এটা তাদের জমি। এনিয়ে মামলাও হয়। মামলায় কুষ্টিয়া আদালতে দুইবার কাশেম হেরে যায়। রোববার ওই জমিটা আমজেদ পরিবারকে বুঝিয়ে দেয়া হয়। এ সময় আবুল কাশেম ক্ষুব্ধ হয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়।

এঘটনায় বটতৈল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এহসানুল করীম বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে নিহতের মেয়ে রিনা খাতুনের দাবি, মামলাটি বর্তমানে উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। আমরা হাইকোর্টের মামলার কাগজপত্র পুলিশকে দেখানোর অনেক চেষ্টা করেছি। পুলিশ কোনো কিছুই দেখতে রাজি হয়নি।

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ শাহাবুদ্দিন চৌধুরী জানান, সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে কাশেম খলিফাসহ অজ্ঞাত ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। রোববার রাতে বটতৈল ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা এহসানুল করীম মামলাটি দায়ের করেছেন।

উল্লেখ্য রোববার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানার এসআই আজিজসহ মডেল থানার ৪ পুলিশ সদস্য কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার কবুরহাট মাদরাসাপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে কাশেম খলিফাকে আটক করে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ পুলিশ রাইফেলের বাট দিয়ে পিটিয়ে তাকে হত্যা করেছে। আর পুলিশের দাবি গ্রেফতার করে গাড়িতে নিয়ে আসার পথে তিনি অসুস্থ্য হয়ে পড়েন। ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। সেখানেই কিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।