চেয়ারম্যানসহ ১৯ পদে প্রতিদ্বন্দ্বি ৮২জন : ১৫ কেন্দ্রে সর্বমোট ভোটার ৫২৮ জন

চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচারণা : আগামী ২৮ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের প্রচার প্রচারণা। প্রার্থীরা ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। আগামী ২৮ ডিসেম্বর বুধবার জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ১টি চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, ৫ সংরক্ষিত সদস্য পদে ২৩ জন ১৩ সদস্য পদে ৫৫ জন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থীর সকলেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও ভোটারদের অধিকাংশই বড্ড কৌশলী। মুখ খুলতে নারাজ। তবে পর্যবেক্ষক মহলের মন্তব্য বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থী না থাকায় তাদের ভোটগুলো গুছিয়ে যেদিকে যাবে সেদিকেই রেজাল্ট হতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের মধ্যে তেমন ঐক্যবদ্ধতার বিষয়টি পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এ অভিমত স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৫ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩ নং ওয়ার্ড ও ১৫ নং ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে নির্বাচন স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে, চেয়ারম্যান পদে ও সংরক্ষিত সদস্য পদে ওই দুটি ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ৪ উপজেলা পরিষদ, ৪ পৌরসভা ও ৪০ ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ভোট দিতে পারবেন। মোট ভোটার সংখ্যা ৫২৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪০৪ জন এবং নারী ভোটার ১২৪ জন। সংরক্ষিত ১ নং ওয়ার্ডে ৯২ জন, ২ নং ওয়ার্ডে ১০৬ জন, ৩ নং ওয়ার্ডে ১১৮ জন, ৪ নং ওয়ার্ডে ১১৯ জন এবং ৫ নং ওয়ার্ডে ৯৩ জন ভোটার রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ১ পদে ৪ প্রার্থী ভোটযুদ্ধে লড়ছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও সাবেক জেলা পরিষদ প্রশাসক মাহফুজুর রহমান মনজু (মোটর সাইকেল), জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সোহরাব হোসেন (আনারস),  কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতি ম-লীর সদস্য শেখ সামসুল আবেদীন খোকন (মোবাইলফোন) এবং সদর উপজেলা পরিষদর সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মামুন অর রশিদ আঙ্গুর (ঘোড়া) প্রতীক পেয়ে নির্বাচনে লড়ছেন। প্রতিটি প্রার্থী সমানতালে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন নিজেদের পক্ষে ভোট পেতে।
সংরক্ষিত সদস্য ৫ পদে লড়ছেন ২৩ জন। এরা হলেন- ১ নং ওয়ার্ডে নুরুন্নাহার কাকলি (ফুটবল) ও ফরিদা ইয়াসমিন (হরিণ), ২ নং ওয়ার্ডে রাবেয়া খাতুন (দোয়াত কলম), আফরোজা আক্তার (মাইক), শ্রিপ্রা বিশ্বাস (ফুটবল), রাশেদা খাতুন (লাটিম), হাসিনা খাতুন (হরিণ) ও শাহনাজ পারভিন (টেবিল ঘড়ি), ৩ নং ওয়ার্ডে ছাহেরা খাতুন (হরিণ), কাজল রেখা (বই), রশিদা বেগম (টেবিল ঘড়ি), পিনজিরা খাতুন (দোয়াত কলম), মনিরা খাতুন (ফুটবল) ও জান্নাতুল ফেরদৌস (মাইক), ৪ নং ওয়ার্ডে চম্পা খাতুন (হরিণ), তানিয়া বেগম (ফুটবল), রাবেয়া খাতুন (মাইক) ও রাশিদা মমতাজ (দোয়াত কলম) এবং ৫ নং ওয়ার্ডে নিলুফার ইয়াসমিন (হরিণ), ফারহানা আক্তার রিনি (টেবিল ঘড়ি), মিতা খাতুন (মাইক), রাবেয়া খাতুন (দোয়াত কলম) ও আনোয়ারা খাতুন  (ফুটবল) প্রতীক দাবি করেছেন।
সাধারণ সদস্য ১৩ পদে ৫৫ জন লড়ছেন। এরা হলেন- ১ নং ওয়ার্ডে শহিদুল ইসলাম সাহান (তালা), আশরাফুল হক ওরফে বিপুল আশরাফ (অটোরিকশা) ও আসাদুজ্জামান কবির (হাতি), ২ নং ওয়ার্ডে আতিয়ার রহমান (তালা), বাবুল আক্তার (টিউবওয়েল) ও মাফলুকাতুর রহমান (হাতি), ৪ নং ওয়ার্ডে আশরাফুল আলম (টিউবওয়েল), মাহবুবুর রহমান মোল্লা (হাতি) ও আব্দুল লতিফ সরদার (তালা), ৫ নং ওয়ার্ডে আবু মুছা (ঘুড়ি), সমীর কুমার দে (বৈদ্যুতিক পাখা), জালাল উদ্দিন (তালা), শরিফুল ইসলাম (হাতি) ও খন্দকার রেজউয়ান উজ জামান (টিউবওয়েল), ৬ নং ওয়ার্ডে তপন কুমার বিশ্বাস (বৈদ্যুতিক পাখা), ওয়াজেদ আলী (হাতি), এএইচএম মোয়াজ্জেম (তালা), জয়নাল আবেদীন চৌধুরী (অটোরিকশা) ও মনোয়ার হোসেন (টিউবওয়েল), ৭ নং ওয়ার্ডে খলিলুর রহমান (হাতি), আলমগীর হোসেন, (তালা) আলতাফ হোসেন (অটোরিকশা), শায়েকুর রহমান লিটন (টিউবওয়েল) ও হাশেম মাহমুদ (বৈদ্যুতিক পাখা), ৮ নং ওয়ার্ডে মহাবুল ইসলাম (অটোরিকশা), সাজ্জাদুল ইসলাম (হাতি), ফারুক হোসেন (বৈদ্যুতিক পাখা), আসাবুল হক (টিউবওয়েল) ও আব্দুর রাজ্জাক ফারাজী (তালা), ৯ নং ওয়ার্ডে কামাল হোসেন (তালা), আব্দুল মান্নান (টিউবওয়েল), ইমান আলী (বৈদ্যুতিক পাখা), ফারুক হোসেন (অটোরিকশা) ও রাকিবুল হাসান (হাতি), ১০ নং ওয়ার্ডে সিরাজুল ইসলাম (হাতি), শহিদুল ইসলাম (বৈদ্যুতিক পাখা) ও সিরাজুল ইসলাম (তালা), ১১ নং ওয়ার্ডে শফিউল কবীর ইউসুফ (টিউবওয়েল), রাশেদুল ইসলাম (তালা), বাবুল হোসেন তরফদার নিশান (অটোরিকশা), রতন আলী (উটপাখি), শহিদুল ইসলাম (ক্রিকেট ব্যাট), আব্দুর রশিদ (বৈদ্যুতিক পাখা), রবিউল হোসেন (ঘুড়ি) ও রফিকুল আলম রান্টু (হাতি), ১২ নং ওয়ার্ডে হযরত আলী (হাতি), জাফর আলী (বৈদ্যুতিক পাখা), জাহাঙ্গীর আলম (তালা) ও নজির আহমেদ (টিউবওয়েল), ১৩ নং ওয়ার্ডে মামুন মোল্লা (তালা), রুস্তম আলী (টিউবওয়েল), আব্দুল হক (অটোরিকশা) ও মোসাবুল ইসলাম লিটন (হাতি), ১৪ নং ওয়ার্ডে শফিকুল আলম (হাতি) ও আশরাফুজ্জামান টিপু (তালা) প্রতীক।
চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১৫ কেন্দ্রে ৫২৮ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। কেন্দ্রগুলো হলো- ১ নং ওয়ার্ডে দৌলতদিয়াড় টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ নতুন ভবনে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা, আলুকদিয়া ইউনিয়ন ও চিৎলা ইউনিয়নের ৪১ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ২ নং ওয়ার্ডে কুশোডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে শংকরচন্দ্র ইউপি, পদ্ববিলা ইউপি ও মোমিনপুর ইউপির ৩৮ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ৩ নং ওয়ার্ডে হিজলগাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মাখালডাঙ্গা ইউপি, নেহালপুর ইউপি ও বেগমপুর ইউপির ১৩ জন ভোট দিতে পারবেন। ৪ নং ওয়ার্ডে খাড়াগোদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কুতুবপুর ইউপি, তিতুদহ ইউপি ও গড়াইটুপি ইউপির ২৬ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ৫ নং ওয়ার্ডে আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আলমডাঙ্গা পৌরসভা, কালিদাসপুর ইউপি ও বেলগাছি ইউপির ৪১ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ৬ নং ওয়ার্ডে ঘোষবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ডাউকি ইউপি, জামজামি ইউপি ও খাসকররা ইউপির ৩৯ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ৭ নং ওয়ার্ডে ঘোলদাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নাগদাহ ইউপি, আইলহাঁস ইউপি ও জেহালা ইউপির ৩৯ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ৮ নং ওয়ার্ডে হারদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হারদী ইউপি, কুমারী ইউপি ও ভাংবাড়ীয়া ইউপির ৪০ জন ভোটর ভোট দিতে পারবেন। ৯ নং ওয়ার্ডে আসমানখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাড়াদী ইউপি, গাংনী ইউপি ও খাদিমপুর ইউপির ৩৯ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ১০ নং ওয়ার্ডে  দর্শনা সরকারি কলেজে কেন্দ্রে দর্শনা পৌরসভা, পারকৃঞ্চপুর-মদনা ইউপি ও কুড়ালগাছি ইউপির ৪০ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ১১ নং ওয়ার্ডে দামুড়হুদা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে  হাউলী ইউপি, দামুড়হুদা ইউপি ও জুড়ানপুর ইউপির ৪০ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ১২ নং ওয়ার্ডে নাটুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে কার্পাসডাঙ্গা ইউপি, নতিপোতা ইউপি ও নাটুদহ ইউপির ৩৯ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ১৩ নং ওয়ার্ডে জীবননগর বহুমুখী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে জীবননগর পৌরসভা, সীমান্ত ইইপ ও বাঁকা ইউপির ৪১ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ১৪ নং ওয়ার্ডে রায়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে হাসাদহ ইউপি, আন্দুলবাড়ীয় ইউপি ও রায়পুর ইউপির ৩৯ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। ১৫ নং ওয়ার্ডে মনোহরপুর মাধ্যমিক বিদ্য্যালয় কেন্দ্রে উথলী ইউপি, মনোহরপুর ইউপি ও কেডিকে ইউপির ১৩ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন।
৪ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান নিজ নিজ ভোটার এলাকায় ভোট দিতে পারবেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ৩ নং ওয়ার্ড ও ১৫ নং ওয়াডে শুধুমাত্র সাধারণ সদস্য পদে ভোট স্থগিত রয়েছে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে। অনুমতি মিললেই পরবর্তিতে ভোটগ্রহণ করা হবে। ভোট শান্তিপূর্ণভাবে গ্রহণে সকল প্রকার প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।