গোয়ালঘরে চোর ঢুকতেই চিৎকার : তাড়িয়ে ধরে গণপিটুনিতে আহত চোরের মৃত্যু

মেহেরপুর বারাদীর ইমরান চুয়াডাঙ্গার টেইপুরে খামারির গোয়ালে ঢুকে পালানোর সময় গ্রামবাসীর ধাওয়া : আটক

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গার টেইপুরে গণপিটুনির শিকার মেহেরপুর বারাদী কলোনির ইমরান হোসেন (৪০) মারা গেছে। গতপরশু রাত ২টার দিকে টেইপুর গ্রামের লাল মিয়ার গোয়ালে ঢুকে ধাওয়ার মুখে পালানোর সময় গ্রামবাসীর হাতে ধরা পড়ে পিটুনির শিকার হয়। পুলিশ উদ্ধার করে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাাতালে ভর্তি করে। গতকালই বেলা দেড়টার দিকে সে মারা যায়। আজ ময়নাতদন্ত শেষে মৃতদেহ তার নিকটজনদের নিকট হস্তান্তর করা হবে। গণপিটুনিতে নিহত ইমরান মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের বারাদী কলোনির মৃত আশরাফ আলীর ছেলে। তার স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন বলেছেন, শুক্রবার দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করে বেলা ২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয় ইমরান। এরপর আর বাড়ি ফেরেনি। নেশা-ভাং করলেও চুরি-ডাকাতির সাথে ইমরান জড়িত ছিলেন কি-না তা জানতেন না বলে জানিয়েছেন স্ত্রী। পুলিশ অবশ্য বলেছে, ইমরান চিহ্নিত ডাকাত। চুরি ডাকাতির সাথে সে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত ছিলো।
ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে অলুকদিয়া টেইপুরের একাধিক ব্যক্তি বলেছেন, মৃত গোলাম নবীর ছেলে লাল মিয়া নিজের বাড়িতে ছোট খামার করে গরু মোটাতাজা করে হাটে বিক্রি করেন। তার বাড়িতে রয়েছে বড় বড় দুটি গরু। শুক্রবার রাত ২টার দিকে লাল মিয়ার গোয়ালে ঢোকে চোর। বিষয়টি টের পেয়ে চোর চোর বলে চিৎকার দিতেই গ্রামবাসী জেগে ওঠে। লাল মিয়া মাথাভাঙ্গাকে জানান, রাতে তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে বের হন। এ সময় দেকথে পান গোয়াল ঘরের কোণায় একজন ওৎ পেতে দাঁড়িয়ে আছে। কয়েকটি কুকুর তাকে ঘিরে ধরে ঘেউ ঘেউ করছে। এ সময় আমি চিৎকার করলে এলাকাবাসী ছুটে আসে। এ সময় চোর পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে গ্রামবাসী চোরের পিছু ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে একজন। জিজ্ঞাসাবাদে সে তার পরিচয় দেয়। বলে বারাদী কলোনির বাসিন্দা। ধরা পড়ার পর টেইপুরের ছমির আলী ও মসলেম উদ্দিন জানান তাদের বাড়ি থেকে নগদ যথাক্রমে ৯শ ও ৪শ টাকা চুরি হয়। ধারণা করা হচ্ছে ওই ইমরানই চুরি করেছে।
ইমরানকে ধরে গ্রামবাসী গণপিটুনি দেয়ার পাশাপাশি পুলিশে খবর দেয়। ভোরে সদর থানার এসআই তরিকুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ইমরানকে গ্রেফতার করেন। সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার একপর্যায়ে বেলা দেড়টার দিকে সে মারা যায়। মারা যাওয়ার পর ইমরানের স্ত্রীর অভিযোগ, নেশাখোর স্বামীকে একেতো মেরে গুরুতর জখম করেছে টেইপুরের কিছুু ব্যক্তি, তারপর হাসপাতালে পুলিশ ভর্তি করলেও চিকিৎসকদের তেমন আন্তরিকভাবে চিকিৎসা দিতে দেখা যায়নি। দায় এড়ানোর মতো করে চিকিৎসা দেয়ার কারণে ইমরান মারা গেছে কি-না তাও যেমন খতিয়ে দেখার দাবি উঠেছে, তেমনই অতো বড় বড় গরু চুরি করতে কি ইমরান একাই গিয়েছিলো? সে প্রশ্নের জবাবও খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।