চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি বদলি দাবি : চুরি হওয়া মালামালের সন্ধান দিলে লাখ টাকা পুরস্কার

শহরে একের পর এক চুরি : আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন দোকান মালিক সমিতির সংবাদ সম্মেলন

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে পর পর ককেটি দোকানে দুঃসাহসিক চুরি হওয়ায় দোকান মালিক সমিতি উদ্বেগ প্রকাশ করে সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানিয়ে অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর তোজাম্মেল হকের অসৌজন্যমূলক স্বেচ্ছাচারিতাও ফিরিস্তি তুলে ধরা হয়। বলা হয়, তিনি সদর থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পর শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের টউন ফুটবল মাঠের বিপরীতের ন্যাশনাল ব্যাটারি হাউজের চুরি হওয়া মামলামালের সন্ধান দিতে পারলে এক লাখ টাকা পুরস্কার প্রদান করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠক করেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার। উপস্থিত ছিলেন সমিতির সভাপতি আশাদুল হোসেন জোয়ার্দ্দার লেমন, সিনিয়র সহসভাপতি আব্দুল কাদের জগলু, সহসভাপতি শাহাবুদ্দিন মল্লিক, সহসাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুজ্জামান খোকন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক এসএম মাসুদ, ধর্ম সমাজসেবক সম্পাদক ডা. নজমুল আলম খান, কার্যকরী সদস্য কামরুল ইসলাম, নাজিম উদ্দীন, মো. স্বপন ও আব্দুল বারী। লিখিত বক্তব্য পেশ করার এক পর্যায়ে বলা হয়, ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে চোরাই মালামাল উদ্ধার ও চোর ধরতে না পারলে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বৃহত্তর আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হবে।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, গত শনিবার রাতে টাউন ফুটবল মাঠের অদূরে ন্যাশনাল ব্যাটারি হাউজে তালা ভেঙে ট্রাক ভিড়িয়ে চুরি হয়। চোরেরা ২৪৫ািট ব্যাটারি ও ১২টি আইপিএস নিয়ে গেছে। যার মূল্য ২৪ লাখ টাকা। এর আগে সমবায় নিউ মার্কেটের সামনে বাংলাদেশ টেলিকম ও পুরোনো হাসপাতাল রোডের বিজলি বিতানে বড়ধরনের চুরি হয়। এছাড়া শহরে বিভিন্ন স্থানে ছোটখাটো চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে। একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দানা বেঁধেছে। গত শনিবার রাতে ন্যাশনাল ব্যাটারি হাউজে চুরি হলে পরদিন সকালে সরেজমিন পরিদর্শন করতে গিয়ে সদর থানার ওসি বলেন, অতোগুলো ব্যাটারি থাকলে তো ধুলো থাকতো। অতো টাকার মালামাল নয়, চুরি হয়েছে হয়তো ৬০-৭০ হাজার টাকার মালামাল। তাছাড়া বৃদ্ধ নৈশপ্রহরী বাদ দিয়ে তিনি তরুণ কাউকে নিয়োগ দিতে বলেন। ব্যবসায়ীদের তিনি ছেঁচড়া বলেও আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। সিসি ক্যমারা লাগানোর তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ ব্যবসায়ীদের দোকান পাহারা দিতে পারবে না।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সদর থানায় ওসি হিসেবে তিনি দায়িত্বগ্রহণের পর শহীদ হাসান চত্বরের দোকান রাত ১২টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দেন। অথচ নৈশকোচের যাত্রীদের অনেকেরই শহীদ হাসান চত্বরে নেমে সকালের অপেক্ষা করতে হয়। অন্তত চা দোকান খোলা থাকলে যাত্রীদের সুবিধা হয়। সেই সুবিধার বিষয়টি ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ওসিকে জানাতে গেলে তিনি তার পূর্বের জারিকৃত নির্দেশ বহাল রেখে যাত্রীদের স্টেশনে রাত কাটাতে বলেন। অথচ শহরে নৈশকোচ থেকে নেমে স্টেশনে যাওয়ার পথে যাত্রীদের ছিনতাইয়ের শিকার হতে হচ্ছে। কারণ তিনি ওসি হিসেবে দায়িত্বগ্রহণের পর থেকেই শহরে পুলিশি টহল থাকে না। ন্যাশনাল ব্যাটারি হাউজে চুরির রাতে টহল পুলিশ ছিলো না। চুয়াডাঙ্গার ১৫-২০ বছরের ইতিহাসে এরকম পরিস্থিতি হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের মাধ্যমে পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলা হয়, অবিলম্বে ওসিকে প্রত্যাহার করতে হবে। চুরি যাওয়া মালামাল দ্রুত উদ্ধার করতে হবে। অন্যথায় চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ীরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ন্যাশনাল ব্যাটারি হাউজ থেকে চুরি হওয়া মালামালের সন্ধান দিতে পারলে সন্ধানদাতাকে ১ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।