মাথাভাঙ্গার বুকে অসংখ্য বাঁধ

 

রহমান রনজু/সাইফ জাহান: মাথাভাঙ্গা নদীর চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা অংশে অসংখ্য স্থানে অবৈধভাবে বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এছাড়াও অগুণিত স্থানে দেয়া হয়েছে কমর। ফলে ¯্রােতের স্বাভাবিক গতিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি  হয়ে নদী হারাচ্ছে নৈব্যতা। কয়েক বছর আগে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনক মাথাভাঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন গড়ে তুলে সর্বস্তরে সাড়া জাগায়। অবৈধ বাদ দেয়াদের মধ্যে চিহ্নিত বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হয়। জরিমানা দিয়ে পার পাওয়ার পর চুয়াডাঙ্গা হাটকালুগঞ্জের চিহ্নিত সেই ব্যক্তিরাই মৎস্য আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলি দেখিয়ে আবার বাঁধ দিয়ে মাছ শিকারের নামে নদীর স্বাভাবিক গতি কেড়ে নিচ্ছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

পদ্মার শাখা নদী মাথাভাঙ্গা। কুষ্টিয়া ভেড়ামারার ভারত সীমান্ত ঘেঁষে মাথাভাঙ্গার উৎপত্তিস্থল। প্রমত্ত পদ্মা বর্ষায় পূর্বের রূপের কিছুটা ফিরে পেলেও বর্ষা যাওয়ার সাথে সাথে ফারাক্কা আটকে দেয় অধিকাংশ গেট। দ্রুত পানি হ্রাস পেয়ে পদ্মার রুগ্ন চেহারা যেমন ফুটে ওঠে, তেমনই মাথাভাঙ্গাও উৎসমুখ থেকে পানি না পেয়ে নদী রেখায় রূপান্তর হওয়ার উপক্রম ঘটে। নদীর কুলে ও বুকে ঝরনা ধারা জিয়ে রেখেছে ¯্রােত। অথচ সেই মিন মিনে েে¯্রাতও বাধ দিয়ে আটকে দিচ্ছে অসাধু কিছু মৎস্য শিকারী। তাদেরই কিছু চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের হাটকালুগঞ্জের বাসিন্দা। অবাক হলেও সত্য যে, ওরা ৫ সহোদর। স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেছেন, মন্টু, ঘেনা, নজরুল, হারু ও রমজানের বিরুদ্ধে এর আগে উপজেলা পরিষদে মামলাও রুজু করে উপজেলা প্রশাসন। সাবেক জেলা প্রশাসক ভোলা নাথ দে মাথাভাঙ্গা বাঁচাও আন্দোলন গড়ে তুলে সর্বস্তরের শুধু সমর্থনই পাননি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়ায়। অভিযুক্তরা আর নদীতে কোমর ও বাধ দিয়ে মাছ শিকার করবে না মর্মে মুচলেকা দিলে জরিমানার মধ্যদিয়ে তাদের ছাড় দেয়া হয়। এরপরও তারা অবৈধভাবে বাধ দিয়ে মাছ শিকার চালিয়ে যাচ্ছে। এদের দেখে অন্যরাও উদ্বুদ্ধ হয়ে নদীটাকে যেন খ- খ- পুকুরে রূপান্তর করেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের কেদারগঞ্জ থেকে শুরু করে পীরপুর, ভিমরুল্লায় রয়েছে কমপক্ষে ৬টি বাঁধ। কমরের সংখ্যাও কম নয়। অপরদিকে আমাদের মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি জানিয়েছেন, মুন্সিগঞ্জেও চিহ্নিত একটি চক্র যেমন অসংখ্য বাঁধ দিয়েছে, ফেলে কমর, তেমনই হাজরাহাটিরও বেশ কয়েকজন রয়েছে অবৈধভাবে কবর দিয়ে নদীর ন্যূনতম ¯্রােতধারাও রুদ্ধ করে দিচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব অবৈধ মাছ শিকারীরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেরই নদীর মাছ উপঢোকন দিয়ে থামিয়ে রাখে।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, নদী-নলা, খাল বিলে স্থানীয় স্থাপনার মাধ্যমে মাছ আহরণ করা যাবে না। এরূপক্ষেত্রে স্থাপনা অপসারণ করতে হবে। আর প্রথমবার আইন ভঙ্গগকারীর শাস্তি হবে কমপক্ষে ১ মাস থেকে সার্বোচ্চ ৬ মাসের সশ্রম কারাদ- এবং তৎসহ সর্বোচ্চ ১ হাজার টাকা জরিমানা। এ আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই কেন?