মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের ৪টিসহ দেশের ২০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম মোছার নির্দেশ

 

স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের ৪টিসহ দেশের ২০টি স্থাপনা থেকে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী বছরের ১ মার্চ দিন রেখেছেন আদালত। এই আদেশ বাস্তবায়ন করে ৬০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবকে। প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- রাজাকার মুনসুর আলীর নামে প্রতিষ্ঠিত মুজিবনগর মিয়া মুনসুর আলী একাডেমী ও ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে মিয়া মুনসুর আলী একাডেমী, মেহেরপুর পৌর এলাকার রাজাকার ও শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান সরদার আলীর নামে রাস্তা ও মার্কেট, ঝিনাইদহরে শৈলকুপার রাজাকার ও শান্তি কমটির চেয়ারম্যান শফি আহমদেরে নামে শফিপুর এলাকা ও শফিপুর পোস্ট অফিসসহ দেশের ২০টি প্রতিষ্ঠান।

স্বাধীনতাবিরোধীদের নামে স্থাপনা, সড়ক, অবকাঠামোর নাম বদলের আর্জি জানিয়ে ২০১২ সালে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছিলেন মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবীর। সেখানে সুনির্দিষ্টভাবে খুলনার খান-এ সবুর রোড এবং কুষ্টিয়ায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শাহ আজিজুর রহমান মিলনায়তনের কথা বলা হয়। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ১৪ মে রুলসহ খান-এ সবুর ও শাহ আজিজুর রহমানের নাম ব্যবহার স্থগিতের অন্তর্বতীকালীন আদেশ দেন হাইকোর্ট। সেই সাথে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের নামে স্থাপনা নিয়ে রুল জারি করা হয়। আদালতের ওই নির্দেশনা অনুসরণ করা হচ্ছে না জানিয়ে গত বছর ২৫ আগস্ট আরেকটি আবেদন করেন মুনতাসীর মামুন ও শাহরিয়ার কবির। এরপর হাইকোর্ট ওই দুটি স্থাপনা থেকে দুই স্বাধীনতাবিরোধীর নাম প্রত্যাহার করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ফিরিয়ে আনতে বলা হয় যশোর রোড নামটি। গত বছর নভেম্বরে হাইকোর্ট আরও একটি নির্দেশনা দেন; বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠানে স্বাধীনতাবিরোধীদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো পরিবর্তন করতে বলা হয়। কিন্তু এরপর এক বছরেও সেই আদেশ বাস্তবায়িত না হওয়ায় ২০টি স্থাপনার নামের তালিকাসহ নতুন এই সম্পূরক আবেদন নিয়ে মঙ্গলবার আদালতে আসেন আবেদনকারী পক্ষ। এ বিষয়ে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার একে রাশিদুল হক।

আদেশের পর তিনি বলেন, যারা মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দণ্ড পেয়েছেন, তাদের নামেও স্থাপনা রয়েছে। এখন পর্যন্ত সরকার সেগুলো পরিবর্তন করেনি এবং পরিবর্তনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগও নেই। বাঙালি হিসেবে আমাদের জন্য এটা লজ্জাজনক ও অগ্রহণযোগ্য।