প্রতিরোধের মুখে ডাকাতদলের ছোড়া বোমাঘাতে জখম ইবাদত মৃত্যুশয্যায়

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদার দলিয়ারপুরে মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতদলের দীর্ঘসময় ধরে তাণ্ডব

 

ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আলী আহাদ: প্রতিরোধের মুখে ডাকাত দলের নিক্ষেপ করা বোমার আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছে দামুড়হুদা দলিয়ারপুরের ইবাদত আলী (৩৫)। গতপরশু রাত দুটার দিকে ডাকাতি শেষে পালানোর পথে গ্রামবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুললে ডাকাতদল একটি বোমা ছুড়ে মারে। ইবাদতকে প্রথমে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক।

দলিয়ারপুর মাঠপাড়ার খেদের আলীর ছেলে হারুনকে তার বাড়ি থেকে ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। তাকে দিয়ে প্রতিবেশী ফেরদৌসের ছেলে মহাসীনকে ঘুম থেকে ডেকে দরজা খুলতে বাধ্য করে। এরপর মহাসীনের ঘরে ঢুকে লুটপাট শুরু করে মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতদল। এ সময় ডাকাতদলের আগ্নেয়াস্ত্রের আঘাতে মহাসীনের স্ত্রী শিউলী খাতুন (২৭) আহত হন। ডাকাতদল সোনার গয়নাসহ নগদ ১০ হাজার টাকা ডাকাতি করে ছুটিপুরের পথ ধরে। এ সময় গ্রামবাসী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। অবস্থা বেগতিক দেখে ডাকাতদল গ্রামে মুসা করিমের দোকানের সামনে একটি বোমা নিক্ষেপ করে। বিস্ফোরিত বোমায় মুসা মণ্ডলের ছেলে ইবাদত হোসেনের দু পা ক্ষতবিক্ষত হয়। গ্রামবাসী থমকে যায়। সটকে পড়ে ডাকাতদল। গুরুতর আহত ইবাদত হোসেনকে উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এহসানুল হক মাসুম রোগীকে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন। ভোরেই তাকে রাজশাহীর উদ্দেশে নেয়া হয়েছে। ডাকাতির শিকার পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, ১০-১৫ জনের ডাকাতদলের কেউ মুখে গামছা দিয়ে কেউ মাফলার বেঁধেছিলো। ওদের অধিকাংশেরই পরনে ছিলো জিন্সের প্যান্ট। কারো হাতে ছিলো ধারালো অস্ত্র, কারো হাতে ছিলো পিস্তল-বোমা।

পরশু রাতে ডাকাতদলের তাণ্ডবের খবরে গতকাল সরেজমিন গেলে গ্রামের সাধারণ মানুষ পুলিশের বিরদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তারা বলেন, যেখানে ডাকাতদল ডাকাতি করেছে সেখান থেকে পুলিশ ক্যাম্পের খুব বেশি দূর নয়। ঢিল ছোড়া দূরত্ব। অথচ ডাকাতদল দীর্ঘ সময় ধরে যাচ্ছে তাই করলেও পুলিশ কিছুই করতে পারেনি। ঘটনার ঘণ্টাখানেকের মাথায় ফাঁড়ি পুলিশের একটি টহলদল। তারা গ্রামে ফিরে বলে, টহলে ভালাইপুর রোডে ছিলাম। অপরদিকে ছুটিপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশও কিছু করতে পারেনি।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে দলিয়ারপুর ক্যাম্প পুলিশ ইনচার্জের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, টহলদল দূরে ছিলো। ফলে কিছুই করা সম্ভব হয়নি। তবে ঘটনার পর থেকেই ডাকাতদলের সদস্যদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের সর্বাত্মক চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।