অতিরিক্ত টাকা আদায় : গাংনী সরকারি কলেজে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রছাত্রীদের তালা

 গাংনী প্রতিনিধি: অনার্স ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ মেহেরপুর গাংনী সরকারি কলেজে তালা দিলো বিক্ষুদ্ধ ছাত্রছাত্রীরা। গতকাল রোববার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। টাকা আদায়ের বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি অনার্সের শিক্ষকরাও অভিযোগ তুলেছেন।

জানা গেছে, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের ফরম পুরণের লক্ষ্যে কলেজ কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ফিস ধার্য করে। গাংনী হাসপাতাল বাজারের একটি কম্পিউটর দোকানে অন লাইনের মাধ্যমে তা জমা দেয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের নির্দেশ দেয়া হয়। সেখানে গিয়ে বিভিন্ন প্রকার হয়রানি ও অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন ছাত্রছাত্রীরা। অধ্যক্ষ ছুটিতে থাকায় কর্তৃপক্ষের কেউ সমাধান দিতে না পারায় ছাত্রছাত্রীরা কলেজের বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের কয়েকজন ছাত্রছাত্রী জানান, কলেজ সরকারি হলেও বেসরকারি কলেজের নীতিমালা অনুযায়ী মাসিক ৪শ টাকা বেতন উত্তোলন করা হচ্ছে। সরকারি কলেজে প্রতি মাসের বেতন নির্ধারিত ২৫ টাকা হারে। অন্যদিকে ভর্তি ও সেশন ফিস, গ্রন্থাগার উন্নয়ন ফিস, খেলাধুলা, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন খাত দেখিয়ে বাধ্যতামূলক অর্থ আদায় করা হয়। প্রকৃতপক্ষে এসব খাতের কোনো অর্থ ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণে ব্যয় করা হয়না। তাহলে কলেজ কর্তৃপক্ষ যে টাকা উত্তোলন করছে তা যাচ্ছে কোথায়?

এদিকে বিক্ষুদ্ধ ছাত্রছাত্রীদের বিষয়টি সমাধানে দুপুরে সাবেক অধ্যক্ষ মনিরুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোহিদুল ইসলাম ও পৌর ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক ইমরান হাবীবসহ শিক্ষকরা বৈঠক করেন। ছাত্রছাত্রীদের যৌক্তিত দাবি-দাওয়া মেনে নেয়ার আশ্বাসে তালা খুলে দেয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বে থাকা সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মোতালেব জানান, অর্থ উত্তোলনের বিষয়টি তার জানা নেয়। অধ্যক্ষ ফিরে আসলে বিষয়টি সমাধান করা হবে। অর্থ উত্তোলনের বিষয়ে অনার্স শিক্ষকদের রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। তাদের কয়েকজন জানান, প্রায় আড়াই বছর ধরে অনার্স চালু হয়েছে। প্রথম দিক থেকেই শতাধিক ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়। বর্তমানে এর সংখ্যা প্রায় আড়াইশ। প্রথম মাস থেকে ছাত্রছাত্রী প্রতি ৪ টাকা মাসিক বেতন উত্তোলন করা হয়। কিন্তু শিক্ষকদের কোনো বেতন-ভাতা দেয়া হয়নি। বেতনসহ আনুষঙ্গিক খাত থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা তোলা হলেও তা কোথায় কিভাবে খরচ হয়েছে তার হিসেব পাননি শিক্ষকরা। কলেজের দুই জন ব্যক্তি টাকাগুলো পকেটস্থ করে ব্যক্তিগত উন্নয়ন করেছেন অভিযোগ করে তারা বলেন, কলেজটির বিভিন্ন স্তুরে বাসা বেঁধেছিলো দুর্নীতি। এতে দুয়েকজন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও অবহেলিত রয়েছেন অনার্স শিক্ষকরা।

তবে ৩০ নভেম্বর থেকে কলেজে এসে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে সঠিক সুরাহা করার আশা ব্যক্ত করেছেন গাংনী সরকারি কলেজ অধ্যক্ষ লিটন মোল্লা।