স্টাফ রিপোর্টার: পাবনায় র্যাবের সাথে ডাকাত দলের বন্দুকযুদ্ধে চার ডাকাত নিহত ও চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। গতকাল শুক্রবার ভোররাতে জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার জয়নগর ওয়াপদা গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে র্যাব তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, ছয় রাউন্ড গুলি, একটি ম্যাগজিন ও দুটি ট্রাকসহ প্রায় ৪শ বস্তা চাল উদ্ধার করেছে। আহতদের উদ্ধার করে চিকিত্সার জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
র্যাব-১২ পাবনা ক্যাম্পের কমান্ডার বীণা রানী দাস বলেন, র্যাব টাঙ্গাইল ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মুহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী গোপন সংবাদের মাধ্যমে জানতে পারেন শুক্রবার ভোররাতে জয়নগর এলাকার বাদশা রাইস এজেন্সিতে সংঘবদ্ধ ডাকাত দল ডাকাতি করবে। এমন সংবাদ পেয়ে র্যাব সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হলে ডাকাত দল র্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় র্যাবও পাল্টা গুলি চালালে ঘটনাস্থলে তিন ডাকাত গুলিবিদ্ধ হয়। চাল বোঝাই একটি ট্রাক নিয়ে ডাকাত দলের অপর সদস্যরা পালানোর চেষ্টা করলে র্যাবও তাদের পিছু ধাওয়া করে। এ সময় বরইচরা গ্রামে র্যাবের সাথে আবারও ডাকাতদের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এ সময় পাঁচ ডাকাত গুলিবিদ্ধ হয় এবং ঘটনাস্থলেই দুজন নিহত হয়। হাসপাতালে নেয়ার পর আরও দুজন মারা যায়।
নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় জানা গেলেও অপর তিন জনের নাম-ঠিকানা জানা সম্ভব হয়নি। হাসপাতালে নিহত ব্যক্তি ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার কিসমতদৌলা গ্রামের আব্দুল হামিদের ছেলে রুস্তম আলী (২৫)। আহত অবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অন্যরা হলো ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুরের কাটনি গ্রামের মৃত মফিজ উদ্দিনের ছেলে মো. বাচ্চু মিয়া (৩৫), পঞ্চগড় জেলার বোদা এলাকার কবিরুল ইসলামের ছেলে মো. মেহেদী হাসান (২৫), চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার দক্ষিণ বড়চর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে মো. হানিফ মিয়া। অপর একজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
এ বিষয়ে জয়নগর এলাকাবাসী ও চাল ব্যবসায়ী মনিরুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই এলাকায় আন্তঃজেলা ডাকাতরা রাতে এসে তাদের মিলগুলোতে হামলা চালিয়ে লুট করে সব নিয়ে যেতো। এটা আজকের সমস্যা নয়। বাদশা রাইস এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমগীর হোসেন বাদশা বলেন, পাশের একটি ময়দার মিলে ডাকাতরা প্রথমে রাত সাড়ে তিনটার দিকে যায়। সেখানে ডাকাতি করতে ব্যর্থ হয়ে তাদের এই মিলের নিরাপত্তা রক্ষীদের হাত-পা বেঁধে রেখে মিলের মধ্যে ঢুকে দুটি ট্রাকে চাল বোঝাই করছিলো। আমরাও জানতাম না বিষয়টি। র্যাবের লোকজন এই এলাকায় আসলে তাদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধ হয়।
র্যাব-১২ কমান্ডিং অফিসার শাহাবুদ্দিন খান জানান, বাদশা রাইস মিলে ডাকাতির সময় আমরা ডাকাতদের ৪শ বস্তা চালসহ হাতেনাতে ধরে ফেলি। কিন্তু ডাকাত দল আমাদের ওপর গুলিবর্ষণ করলে আমরাও গুলি চালাতে বাধ্য হই। অন্ধকারে প্রথমে গুলিবিদ্ধ ডাকাতদের মৃত মনে হওয়ায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। পরে ঘটনাস্থলে দুজনের মৃত্যুর বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হই। এ ছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পথে একজন ও চিকিত্সাধীন অবস্থায় আরও একজন নিহত হয়।