আজ ঝিনাইদহে কামান্না ট্রাজেডি দিবস

 

এ দিনে ২৭ মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৯ জন শহীদ হন

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: আজ ২৬ নভেম্বর। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কামান্না ট্রাজেডি দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও রাজাকাররা ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ ২৯ জনকে হত্যা করে। কামান্না গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পের দুটি টিনের ঘর এখনো সেদিনের স্মৃতি বহন করছে। তবে আজো শহীদদের স্মৃতি রক্ষার জন্য সেখানে কোনো স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি হয়নি।

শহীদ মুক্তিযোদ্ধারা হচ্ছেন- মোমিন, কাদের, শহিদুল, সোলেমান, রাজ্জাক (১), ওয়াহেদ, রিয়াত, আলমগীর, মতলেব, আলি হোসেন, শরিফুল, আনিছুর, আলিমুজ্জামান, তাজুল, মনিরুজ্জামান, মাছিম, রাজ্জাক (২), কাওছার, সালেক, আজিজ, আকবর, সেলিম, হোসেন, রাশেদ, গোলজার, অধীর ও গৌর। এ সাথে শহীদ হন তাদের গাইড ফণি ভুষণ কুন্ডু ও রান্নার বুয়া রঙ্গবিবি।

মুক্তিযুদ্ধকালীন কৌশলগত দিক দিয়ে সুবিধাজনক হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা কামান্না গ্রামের মাধব ভুঁইয়ার বাড়িতে অস্থায়ী ক্যাম্প গড়ে তোলেন। ভারত থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশে ফেরেন ৪২ জনের একটি দল। নভেম্বর মাসের প্রথম দিকে এ ক্যাম্পে আশ্রয় নেন তারা। মুক্তিযোদ্ধাদের বেশির ভাগের বাড়ি ছিলো মাগুরার সদর উপজেলার হজিপুর এলাকায়। কামান্না গ্রামের এক পাকিস্তানি বাহিনীর দালালের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের খবর পৌঁছে যায় ঝিনাইদহ, শৈলকুপা ও মাগুরার পাকিস্তানি সেনা ঘাঁটিতে। প্রত্যক্ষদর্শী কাজী সিরাজুল ইসলাম জানান, ভোরের আজানের সময় হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসর রাজাকারের দল মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান স্থল চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে। ঘুমন্ত মুক্তিযোদ্ধারা হঠাত আক্রমণ শুরু করলে দিশেহারা হয়ে পড়েন। একে একে শহীদ হন ২৭ জন মুক্তিযোদ্ধা। সকালে গ্রামবাসী মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ কুমার নদীর তীরে পাঁচটি গণকবরে তড়িঘড়ি করে দাফন করেন। দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে শহীদদের স্মরণে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি করে আসছেন স্থানীয়রা। বার বার আশ্বাস মিললেও তাদের সে দাবি পূরণ হয়নি।

 

Leave a comment