চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ নির্বাচন ২৮ ডিসেম্বর
নজরুল ইসলাম: দেশের ৬১টি জেলার ন্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। নির্বাচনে প্রশাসক পদের প্রার্থীদের পদচারণা চোখে না পড়লেও সদস্য এবং সংরক্ষিত মহিলা সদস্য প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন মাঠ। অপরদিকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন দলের হওয়ায় আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে অন্য রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ না থাকায় এটি একদলীয় নির্বাচন পরিণত হতে যাচ্ছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। ফলে ২৮ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জেলার ৫২৮ জন ভোটার ১৫টি ভোটকেন্দ্রে গোপন ব্যালটে ভোটপ্রদানের মধ্যদিয়ে নির্বাচিত করবেন একজন জেলা প্রশাসক ১৫ জন সাধারণ সদস্য এবং ৫ জন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য।
দেশের ৬১টি জেলার ন্যায় চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর। ওই দিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটপ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের জনপ্রতিনিধিদের বেশিরভাগই ক্ষমতাসীন দলের হওয়ায় আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে অন্য রাজনৈতিক দলের অংশ গ্রহণ না থাকায় এটি একদলীয় নির্বাচন পরিণত হতে যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছেন। যদিও এটি র্নিদলীয় নির্বাচন বলে ঘোষণা করা হয়েছে। বিধায় নির্বাচনটি দলীয় প্রতীকে হবে না। প্রত্যক্ষভাবে দলীয় নির্বাচন মনে না করা হলেও চেয়ারম্যান প্রার্থী কেন্দ্রীয়ভাবে হবে বলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্শীরা মনে করছেন। সে হিসাবে চুয়াডাঙ্গা জেলার ক্ষমতাসীন দলের মধ্যে গ্রুপিং থাকায় কেন্দ্র থেকে কাউকে মনোনয় দেয়া হলেও দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে প্রার্থী এক বা একাধিক থাকবে বলে ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতাকর্মীরা মনে করছেন। এ নির্বাচনে অন্যান্য রাজনৈতিক দল অংশ গ্রহণ না করায় একই দলের একাধিক প্রার্থী হলেও সে ক্ষেত্রে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দলীয় কোনো শাস্তির সম্মুখিন হতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ফলে নির্বাচনে নিজেদের প্রতিপক্ষ নিজেরাই হবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
এদিকে জেলা নির্বাচন অফিসসূত্রে জানা গেছে, জেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৫২৮ জন। যে সমম্ত পৌরসভা এবং ইউনিয়ন নিয়ে ওয়ার্ড গঠিত হয়েছে সেগুলো হলো- চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা, আলুকদিয়া ও চিৎলা ইউনিয়ন নিয়ে ১ নং ওয়ার্ড গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা পুরুষ ৩১ জন মহিলা ১০ জন। ভোটকেন্দ্র রোমেলা খাতুন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় আলুকদিয়া। শঙ্করচন্দ্র, পদ্মবিলা ও মোমিনপুর ইউনিয়ন নিয়ে ২ নং ওয়ার্ড গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা ২৯ জন পুরুষ, ৯ জন মহি। ভোটকেন্দ্র কুশোডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। মাখালডাঙ্গা, নেহালপুর ও বেগমপুর ইউনিয়ন নিয়ে ৩ নং ওয়ার্ড গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা ১০ জন পুরুষ ৩ জন মহিলা। ভোটকেন্দ্র হিজলগাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। কুতুবপুর, তিতুদহ ও গড়াইটুপি ইউনিয়ন নিয়ে ৪ নং ওয়ার্ড গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা ২০ জন পুরুষ, ৬ জন মহিলা। ভোটকেন্দ্র খাড়াগোদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আলমডাঙ্গা পৌরসভা, কালিদাসপুর ও বেলগাছি ইউনিয়ন নিয়ে ৫ নং ওয়ার্ড গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা পুরুষ ৩১ জন, মহিলা ১০ জন। ভোটকেন্দ্র আলমডাঙ্গা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। ডাউকি, জামজামি ও খাসকররা ইউনিয়ন নিয়ে ৬ নং ওয়ার্ড গঠিত। এখানে ভোটার সংখ্যা ৩০ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা। ভোটকেন্দ্র ঘোষবিলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়। নাগদাহ, আইলহাস ও জেহালা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৭ নং ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা ৩০ জন পুরুষ, ৯ মহিলা। ভোটকেন্দ্র ঘোলদাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। হারদী, কুমারী ও ভাংবাড়ি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৮ নং ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা ৩১ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা। ভোটকেন্দ্র হারদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বাড়াদী, গাংনী ও খাদিমপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ৯ নং ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা ৩০ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা। ভোটকেন্দ্র আসমানখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। দর্শনা পৌরসভা, পারকৃষ্ণপুর-মদনা ও কুড়ালগাছি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১০ নং ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা ৩১ পুরুষ, ৯ জন মহিলা। ভোটকেন্দ্র দর্শনা সরকারি কলেজ। হাউলী, দামুড়হুদা ও জুড়ানপুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১১ নং ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা ৩০ জন পুরুষ, ১০ জন। ভোটকেন্দ্র দামুড়হুদা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। কার্পাসডাঙ্গা, নতিপোতা ও নাটুদহ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১২ নং ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা ৩০ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা। ভোটকেন্দ্র নাটুদহ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। জীবননগর পৌরসভা, সীমান্ত ও বাঁকা ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১৩ নং ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা ৩১ জন পুরুষ ১০ জন মহিলা। ভোটকেন্দ্র জীবননগর বহুমুখি পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়। হাসাদহ, আন্দুলবাড়িয়া ও রায়পুর ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১৪ নং ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা পুরুষ ৩০জন, ৯জন মহিলা। ভোটকেন্দ্র রায়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। উথলী, মনোহরপুর ও কেডিকে ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১৫ নং ওয়ার্ড। ভোটার সংখ্যা ১০ জন পুরুষ, ৩ জন মহিলা। পুরুষ ভোটার সংখ্যা ৪০৪জন, ১২৪ জন মহিলা। মোট ভোটকেন্দ্র ১০টি। ভোটকক্ষের সংখ্যা ৩০টি। ১, ২, ৩ নং ওয়ার্ড নিয়ে ১নং সংরক্ষিত মহিলা। যার ভোটার সংখ্যা ৯২জন। ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড নিয়ে ২নং সংরক্ষিত মহিলা। ভোটার সংখ্যা ১০৬জন। ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড নিয়ে ৩নং সংরক্ষিত মহিলা। ভোটার সংখ্যা ১১৮জন। ১০,১১,১২ নং ওয়ার্ড নিয়ে ৪নং সংরক্ষিত মহিলা। ভোটার সংখ্যা ১১৯জন। এবং ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ড নিয়ে ৫ নং সংরক্ষিত মহিলা। ভোটার সংখ্যা ৯৩ জন।
জেলার মাঠপর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের দলীয় পরিচয় বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধি বেশি। স্বাভাবিক কারণেই তাদের দল মনোনীত প্রার্থী এই নির্বাচনে জয়ী হবেন। কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হতে চাইলেও লাভ নেই। কেন্দ্র থেকে যে নির্দেশনা যাবে, সে অনুযায়ী ভোট দেবেন মাঠপর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরা। এক্ষেত্রে কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন পাওয়া এবং মাঠপর্যায়ে জনপ্রতিনিধিদের ম্যানেজ করাই হবে একজন প্রার্থীর মূল কাজ। এদিকে ১৫টি কেন্দ্র ভোট হওয়ায় ভোটাররাও প্রার্থীদের সাথে খুববেশি লুখোচুরি খেলতে পারবে না। কারণ যে কেন্দ্রর ভোট সে কেন্দ্র গণনা করা হলে অনেক কিছুই পরিষ্কার হয়ে যাবে। ফলে প্রার্থীদের চাইতে ভোটাররা থাকবেন টেনশনে। একটি কেন্দ্র ভোট হলে অনেক হিসাব নিকাশটা একটু কঠিন হতো।
উল্লেখ্য, ১ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। ৩ ও ৪ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই। ১১ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহার। ১২ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ। আগামী ২৮ ডিসেম্বর সকাল ৯টা থেকে বিরতিহীন ভাবে বেলা ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।