আলমডাঙ্গার মোমেনাসহ আরও ২৪ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি

 

স্টাফ রিপোর্টার: একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনী এবং রাজাকারদের হাতে নির্যাতিত আরও ২৪ জন বীরাঙ্গনাকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) ৩৭তম সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ১৭০ জন বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন।

রংপুর সদরের আনোয়ারা বেগম ও মোছাম্মৎ আয়শা বেগম এবং বরিশালের বাকেরগঞ্জের মোসাম্মৎ আলেয়া বেগম ও গৌরনদীর নুরজাহান বেগম এবার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কমিলা বেগম, ফরিদপুরের মধুখালীর ফুলজান বেগম, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আফিয়া খাতুন খঞ্জনী, নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার মমতাজ বেগম, হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জের আলেয়া বেগম এবং ঢাকার মুগদাপাড়ার মোছাম্মৎ হনুফা বেগমও পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি। কুড়িগ্রাম সদরের মোছাম্মৎ দেলো বেওয়া, রহিমা খাতুন, মজিদা বেগম,
ছালেহা বেওয়া, বছিরন বেগম, শ্রীমতি তরু বালা, ফাতেমা বেগম, কুড়িগ্রাম সদরের খোতেজা বেগম, খুকী বেগম এবং গেন্দী বেওয়াকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। এছাড়া পাবনা আটঘরিয়ার শ্রীমতি সোনা বালা, মায়ারানী ও জামেলা খাতুন এবং চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার মোমেনা বেগমকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়ে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তারা প্রতি মাসে ভাতাসহ মুক্তিযোদ্ধাদের মতো অন্যান্য সরকারি সুযোগ-সুবিধা পাবেন।

১৯৭১ সালে ডিসেম্বরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যা?তিত নারীদের ‘বীরাঙ্গনা’ স্বীকৃতি দিয়ে তাদের সম্মান জানান। তার নির্দেশনায় বীরাঙ্গনাদের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়, যা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগ পর্যন্ত চলছিলো। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এই প্রক্রিয়াটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সামরিক শাসকদের মাধ্যমে সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে পাকিস্তানি জান্তার সহযোগীদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই মধ্যে এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনাও আসে। শেষ পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের ৪৩ বছর পর গত বছর ১০ অক্টোবর বীরাঙ্গনাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল। গত বছরের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে ওই প্রস্তাব পাস হয়।