চুয়াডাঙ্গায় ওজনে কারসাজি : বস্তায় ভরেও থামছে না কারচুপি
বেগমপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গায় ১০ টাকার চালে আরেক কারসাজি ধরা পড়েছে। প্রধম দিকে ওজনে ১ থেকে ২শ গ্রাম কম দেয়ায় হুলস্থূল শুরু হয়। ওজনে কারচুপি ঠেকাতে বস্তায় চাল দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু এতে ধরা পড়েছে চুরির বদলে ডাকাতি। এখন প্রতি বস্তায় কম হচ্ছে ১ থেকে পৌনে ২ কেজি পর্যন্ত। এরকমই কারসাজি ধরা পড়েছে চুয়াডাঙ্গার গড়াইটুপি ও তিতুদহ ইউনিয়নের দুই ডিলারের বস্তায়।
জানা গেছে, হতদরিদ্রদের মধ্যে খাদ্য-বান্ধব কর্মসূচির আওতায় ১০ টাকা কেজিদরে চালবিক্রি শুরু করে। প্রথম দিকে ডিলাররা চাল মেপে দিতে গিয়ে ১ থেকে ২শ গ্রাম কম হওয়ায় চারিদিকে হইচই পড়ে যায়। ফলে ডিলারশিপ বাতিল হওয়াসহ জরিমানা গুনতে হয় অনেককেই। পরে খাদ্যগুদাম থেকে নির্ধারিত ৩০ কেজি চাল ভরে বস্তার মুখ সেলাই করে তা ডিলারদের মধ্যে সরবরাহ শুরু হয়। যাতে হতদরিদ্ররা না ঠকে। শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ও গড়াইটুপি ইউনিয়নের ডিলার হায়দার মল্লিক ও সাজেদুর রহমান ঝন্টু কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিতরণ শুরু করেন। দরিদ্ররা বস্তা মেপে দেখতে পান প্রতি বস্তায় ১ থেকে ২ কেজি করে চাল কম আছে। বিষয়টি স্থানীয় চেয়ারম্যান, খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও সরোজগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর আব্দুল আলিমকে জানানো হয়। ততোক্ষণে অনেকেই চালের বস্তা নিয়ে চলে গেছেন। অভিযোগকারীরা জানান, ওই দু ইউনিয়নে কার্ডধারীর সংখ্যা ১ হাজার ২২৪। সে হিসাবে বস্তা প্রতি দেড় কেজি করে কম থাকলেও তার পরিমাণ দাড়ায় ১ হাজার ৮৩৬ কেজি। অভিযোগকারীরা জানান, বস্তাপ্রতি ১ থেকে পৌনে ২ কেজি চাল কম, তাও আবার বস্তার মুখ দায়সারাভাবে হাতে সেলাই দেয়া। এ বিষয়ে ডিলার হায়দার মল্লিক এবং ঝন্টু বলেন, বস্তায় চাল কম থাকায় আমাদের কোনো লাভ নেই। কারণ আমরা বস্তা গুনে টাকা পরিশোধ করেছি। আর এসব চাল এনেছি সরোজগঞ্জ খাদ্যগুদাম থেকে। এ ব্যাপারে সরোজগঞ্জ খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর আব্দুল আলিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি একজন সৎ মানুষ, ডিলাররা গুদাম থেকে তাদের চাল বুঝ করে নিয়ে গেছেন। বাইরে গিয়ে চাল কম হলে সে দায়দায়িত্ব আমার নয়। ওজনে কম থাকা বস্তা না বিক্রির জন্য কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিলেও দেখা যায় শনিবারেও একই ওজনের বস্তা হতদরিদ্রদের কাছে ৩০ কেজি হিসেবে বিক্রি করা হয়।
গতকাল শনিবার ডিলার ঝন্টুর নিকট থেকে চাল কিনে আনা ছোটসলুয়া গ্রামের কার্ডধারী জাহানারা খাতুন ৩২৯, তাহাজুল ২৯০, রাশিদা বেগম ২৯৩, রাবিয়া বেগম ৩০৪, হাজেরা খাতুন ২৮৭, রেহেনা বেগম ২৮৫, মিজানুর রহমান ২৮৬, কিতাব আলী ২৯৪, মঙ্গল আলী ২৮৮ এবং জসিম উদ্দীন ২৯২ তাদের বস্তা ওজন করে দেখতে পান প্রতি বস্তায় ১ থেকে পৌনে ২ কেজি পর্যন্ত চাল কম আছে। অভিযোগকারীরা জানান, বিষয়টি ডিলারদের জানানো হলেও তারা কর্ণপাত করেননি।