মাথাভাঙ্গা পরিবারের আজ শোকাবহ দিন

 

আজ ৯ নভেম্বর। দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবারের শোকের দিন। শোকাহত আমরা। আজ থেকে ৪ বছর আগে আজকের এই দিনে চুয়াডাঙ্গাসহ এলাকাবাসী হারায় একজন গুণী সমাজ সেবককে। গরিব খেটে খাওয়া মানুষ হারায় তাদের নিকটজনকে। নির্যাতিত বঞ্চিতরা হারান একজন বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বরকে। সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গন হারায় একজন কৃতিবান উজ্জ্বল নক্ষত্র। দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবার হারায় প্রধান পথপ্রদর্শক, নির্দেশক- তথা প্রধান সম্পাদককে। গুণী সমাজ সেবক, গরিবের বন্ধু দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবারের প্রাণপুরুষ প্রধান সম্পাদক সাইফুল ইসলাম পিনুর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।

সাইফুল ইসলাম পিনু প্রয়াত হলেও মাথাভাঙ্গা পরিবারের প্রস্তাবনার প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ তাকেই প্রধান সম্পাদক পদে অসীন রেখেছে। এতেই স্পষ্ট, সাইফুল ইসলাম পিনু স্বশরীরে উপস্থিত না থেকেও তার রেখে যাওয়া আদর্শই মাথাভাঙ্গা পরিবারের প্রেরণা। দৈনিক মাথাভাঙ্গা পরিবার এই নভেম্বরেই আর একজন আপনজনকে হারায়। সাইফুল ইসলাম পিনু পত্নী নাজমা আরা মমতাজ মারা যান ২০১১ সালের ১৮ নভেম্বর। পরের বছরের নভেম্বরেই যে সাইফুল ইসলাম সকলকে ছেড়ে সহধর্মিণীর কবরের পাশের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন কে জানতো? মাথাভাঙ্গা তার দীর্ঘ পথচলায় হারিয়েছে বেশ কয়েকজন গুণী সহযোদ্ধাকে। সদরুল নিপুল নৃশংসতার শিকার হয়েছেন। হঠাত অসুস্থ হয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন দর্শনার অফিস প্রধান সাঈদুল্লাহ আল সাঈদ, আলমডাঙ্গার সহকারী ব্যুরো প্রধান হাফিজ উদ্দীন, মুন্সিগঞ্জের তছলিম আহম্মেদ পেনু, চুয়াডাঙ্গার ইলিয়াস হোসেন ইলু, আনোয়ারুল হক মুক্তাসহ বেশ ক’জন। সাইফুল ইসলাম পিনুও আজকের এইদিনে সকাল হতে না হতে আকস্মিক হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৫৫ বছর। পর পর দু’বার চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে জনপ্রিয়তার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সাইফুল ইসলাম পিনু ইহকাল ত্যাগের পর চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ, চুয়াডাঙ্গা উন্নয়ন ফেরামসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান তার স্মৃতিতে স্মরণসভার আয়োজন করে। চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের রেলপাড়া সড়কটি বা অন্য কোনো সড়কের নাম পিনুর নামে নামকরণের যেমন দাবি জানানো হয়, তেমনই শিল্পকলা চত্বরের মুক্তমঞ্চকে পিনুর নামে উৎসর্গেরও দাবি জানানো হয়। না, এসব আবেদন আরজি, দাবিতে এখন পর্যন্ত তেমন সাড়া মেলেনি।

মৃত্যু চরম সত্য। অস্বীকার করার জো নেই। একদিন মরতে হয়। মৃত্যু অনিবার্য হলেও কারো অকাল ও অস্বাভাবিক চিরপ্রস্থান যেমন কাম্য নয়, তেমনই সকল এবং সকলের মৃত্যুই সমান নয়। কোনো কোনো মৃত্যু মানুষকে কাঁদায়। কোনো কোনো মৃত্যুতে সৃষ্ট শূন্যতা কখনোই পূরণ হওয়ার নয়। সাইফুল ইসলাম পিনু, সদরুল নিপুল, হাফিজ উদ্দীন, সাঈদুল্লাহ আল সাঈদের প্রয়োজনীয়তা পদে পদে পরিলক্ষিত হয় মাথাভাঙ্গা পরিবারের। আর ঘুরে ফিরেই সাইফুল ইসলাম পিনুর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। এই উপলব্ধিই তো বেঁচে থাকা। ওখানে নিশ্চয় ভালো আছো তুমি, তোমরা।