দামুড়হুদায় বাঁধে ছেয়ে গেছে মাথাভাঙ্গা নদী : পাতা হয়েছে চিকন সুতোর ফাঁদ

 

দেশি মাছ বিলুপ্তির পথে : ইউএনও’র হস্তক্ষেপ কামনা

বখতিয়ার হোসেন বকুল: দামুড়হুদায় অসংখ্য বাঁধ আর সিটকি জালে ছেয়ে গেছে মাথাভাঙ্গা নদী। নদীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে নদীর নব্যতা সৃষ্টির মহোৎসবে মেতে উঠেছে কিছু অসাধু মৎস্যজীবী। পাড়ের দুধার থেকে অসংখ্য বাঁশের তৈরি অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে পানির গতিরোধ করে নদীর মাঝখানে সামান্য জায়গা ফাকা রেখে নদীর স্রোতকে করা হচ্ছে বাধাঁগ্রস্ত। ওই সমস্ত বাঁধের মাঝখানে চিকন সুঁতোর (কারেন্ট জাল) ফাঁদ পেতে ধরে নেয়া হচ্ছে ডিমওয়ালা মাছসহ ছোটবড় সব ধরনের প্রাকৃতিক মাছ। ফলে দেশিও প্রজাতির মাছ আজ বিলুপ্তির পথে। এছাড়া নদীর অধিকাংশ স্থান জুড়ে পেতে রাখা হয়েছে শ শ সিটকি জাল। উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে।

দামুড়হুদার মডেল প্রাইমারি স্কুলের তীরে মাথাভাঙ্গা নদীর বুকে বিশাল এক বাঁধ নির্মাণ করেছেন দামুড়হুদা দশমীপাড়ার আশাদুল ও পার-দামুড়হুদার শফি। এছাড়াও হাউলী শ্মশান ঘাটের নিচে, রঘুনাথপুর-সুবলপুর ব্রিজের দক্ষিণেসহ সীমান্তবর্তী কামারপাড়ায় মাথাভাঙ্গা নদীতে তৈরি করা হয়েছে ছোটবড় অসংখ্য বাঁধ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার রঘুনাধপুরের কংশু হালদার, নিমাই হালদার, গোবিন্দ হালদার, সুবলপুরের নজরুল, চণ্ডিপুর গ্রামের শ্রী রঘুনাথ হালদার, একই গ্রামের কার্ত্তিক হালদার, ভরত হালদার, জয়দেব হালদার, রতন হালদার, রবীন্দ্রনাথ হালদার, পুরাতন বাস্তুপুরের মতিয়ার রহমান মতি, পারকৃষ্ণপুরের বিষ্ণু হালদারসহ অনেকেই মাথাভাঙ্গা নদীতে দীর্ঘদিন ধরেই ওই সমস্ত অবৈধ বাঁধ নির্মাণ করে আসছে।

এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আইয়ুব আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওই সমস্ত অবৈধ বাঁধ নির্মাণকারীদের অবিলম্বে বাঁধ অপসারণ করতে নোটিশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ইতঃপূর্বে বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানাও করা হয়েছে। যারা এখনও পর্যন্ত বাঁধ অপসারণ করেননি তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও তিনি জানান।

এলাকার সচেতন মহল ইউএনও’র সুদৃষ্টি কামনা করে বলেছেন, শুধুমাত্র অবৈধ বাঁধ নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে হবে না। যারা নদীর পাড় কেটে নদীর নব্যতা সৃষ্টি করছে তাদের বিরুদ্ধেও আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন পূর্বক নদীর নব্যতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে যদি এখনই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা যায় তবে অচিরেই নদী নব্যতা হারিয়ে চিকন খালে পরিণত হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।