গাংনীর বামন্দীতে ছাত্রী উত্ত্যক্ত ও পিতাকে মারধর : বখাটে বিপ্লব ও বাচ্চুর এক বছরের কারাদণ্ড

 

গাংনী প্রতিনিধি: জেএসসি পরীক্ষার্থীকে উত্ত্যক্ত ও তার পিতাকে মারধরের দায়ে বিপ্লব হোসেন (২২) ও বাচ্চু মিয়া (২৪) নামের দুই বখাটে যুবকের এক বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মেহেরপুর গাংনী উপজেলা সহকারী কশিনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম  জামাল আহম্মেদ গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ দণ্ডাদেশ ঘোষণা করেন। দণ্ডিত বিপ্লব হোসেন বামন্দী ইটভাটাপাড়ার কাওছার আলীর ছেলে এবং বাচ্চু মিয়া একই এলাকার ওবায়েদ হোসেনের ছেলে। গতকালই তাদেরকে জেলা কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

ভ্রাম্যমাণ আদালত ও গাংনী থানা সূত্রে জানা গেছে, দাণ্ডিত দুজনসহ সাগর, সেন্টু, আলাল, শামীম ও লিখনসহ কয়েক যুবক এলাকার চিহ্নিত ইভজিটার। বিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্রছাত্রীদের যাওয়া-আসার পথে উত্ত্যক্ত করাই তাদের অন্যতম কাজ। এছাড়াও তারা বিভিন্ন প্রকার অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। এরই জেরে সোমবার দুপুরে বামন্দী-নিশিপুর জেএসসি কেন্দ্র থেকে মহাম্মদপুর এলাকার কয়েকজন ছাত্রী পরীক্ষা দিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয়। সিনেমা হল মোড়ের কাছে ওই ছাত্রীদের বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত শুরু করে দণ্ডিত দুজনসহ তার সহযোগীরা। এক পর্যায়ে ছাত্রীদের সাথে থাকা এক পিতা প্রতিবাদ করেন। এতে তার ওপরেই হামলা চালায় বখাটেরা। স্থানীয়দের সহায়তায় সেখান থেকে ফিরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও গাংনী থানার ওসির কাছে বিচারের জন্য দ্বারস্থ হন তিনি। পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে কয়েকজন আত্মগোপন করলেও সোমবার রাতে ধরা পড়ে বিপ্লব ও বাচ্চু। গতকাল দুপুরে শুরু হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচার কাজ। ইভটিজিং ও ছাত্রীর পিতাকে মারধরের দায়ে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ৫০৯ ধারায় তাদেরকে দোষী সাব্যস্থ করে প্রত্যেককে এক বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালতের নির্দেশে তাদেরকে জেলা কারাগারে পেরণ করেছে পুলিশ। পাশাপাশি অভিযুক্ত অন্যদের গ্রেফতারে জোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন।

দণ্ডিত দুজন ও তাদের পরিবারের দাবি, ঘটনার সময় তারা সেখানে ছিলেন না। উত্ত্যক্ত ও মারধরের সাথেও তারা জড়িত নন। এদিকে বিচার দাবির পর থেকেই ওই পিতার ওপর শুরু হয় বিভিন্ন রকম হুমকি-ধামকি। রাতে তিনি আত্মগোপন করলেও পুলিশের আশ্বাসে বাড়ি ফিরেছিলেন। পরে গতকাল বিচারের জন্য তিনি থানায় আসেন। এ সময় বখাটেদের রক্ষায় রাজনৈতিক দলের কয়েকজন স্থানীয় নেতা ও একজন জনপ্রতিনিধি পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটদের ওপর চাপ শুরু করেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এতে ভীত হয়ে পড়েন বাদি। তবে কোন চাপের কাছেই মাথানত করেননি তারা।  এলাকার মেয়েদের লেখাপড়া ও স্বাভাবিক চলাফেরা নিশ্চিত করতে এই সাজার প্রয়োজন ছিলো জানিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিভাবক মহল। আত্মগোপন করা ওই বখাটেদের দ্রুত গ্রেফতার করে সাজা নিশ্চিত করারও তাগিদ দিয়েছেন বিভিন্ন মহল।