চুয়াডাঙ্গায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ জন স্বচ্ছল ব্যক্তির নাম হতদরিদ্র তালিকা থেকে বাদ

 

কোনো অনিয়ম হলে ডিলারদের লাইসেন্স বাতিল

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় হতদরিদ্রদের জন্য সরকার নির্ধারিত ১০ টাকা মূল্যের কার্ডের মাধ্যমে খাদ্যশস্য বিতরণ কর্মসূচিতে তিন উপজেলায় ১ হাজার ৭৮১ জন সচ্ছল ব্যক্তির নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অসচ্ছল ব্যক্তিদের নতুন নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সদর উপজেলায় সচ্ছল ব্যক্তিদের নামের তালিকা এখনো সংশ্লিষ্টদের কাছে জমা পড়েনি। এদিকে দামুড়হুদা উপজেলায় ডিলার সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলে বেশকিছু আবেদনপত্র জমা পড়েছে। বাছাই প্রক্রিয়া শেষে নতুন ডিলার নিয়োগ দেয়া হবে। এ পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি সচ্ছল ব্যক্তিদের নাম বাদ পড়েছে। বাদপড়ার সংখ্যা ৯শ। আলমডাঙ্গায় উপজেলায় ৭৩১ জন এবং জীবননগর উপজেলায় ১৫০ জন। সদর উপজেলায় বাদ পড়ার সংখ্যা এখনো কর্তৃপক্ষ হাতে না পাওয়ায় সঠিক তথ্য বলতে পারেননি কেউ। তবে সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নে ৮০ জন সচ্ছল ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়ায় খাদ্য বিভাগের পক্ষ থেকে গতকাল বুধবার তদন্ত করেছে। একই সাথে দুদকের একটি টিম গত মঙ্গলবার জেলা খাদ্য অফিসে খাদ্যশস্য কর্মসূচির বিষয়ে তদন্ত করেছে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর এবং আগামী বছরের মার্চ ও এপ্রিল মোট পাঁচ মাসের জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায় ৩০ হাজার ৮৫৭টি হতদরিদ্র পরিবারের জন্য ১০ টাকা কেজি দামে ৩০ কেজি চাল দেয়া হবে। এর মধ্যে দামুড়হুদা উপজেলায় কার্ড সবচেয়ে বেশি। দামুড়হুদায় কার্ডের সংখ্যা ১৫ হাজার ২৩৫টি। সদর উপজেলায় ৩ হাজার ৪১১টি, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৫ হাজার ২৪৫টি এবং জীবননগর উপজেলায় ৬ হাজার ৯৬৬টি। জেলার ৩৮টি ইউনিয়নে ২ জন করে ৭৬ জনকে ডিলার নিয়োগ দিয়েছে খাদ্য বিভাগ। তবে দামুড়হুদা উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ১৬ জন ডিলারের পক্ষে চাল বিতরণে জনগণের দুর্ভোগ বেড়েছে। সে কারণে কর্তৃপক্ষ ডিলার বৃদ্ধির জন্য ইতোমধ্যে আবেদনপত্র আহ্বান করেছে। প্রতিমাসে ৯২৫ দশমিক ৭১ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হচ্ছে। যার মূল্য প্রায় ২৪ কোটি টাকা। সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এবিএম মুশফিকুর রহমান জানান, শুধুমাত্র দামুড়হুদা উপজেলার জন্য ডিলার বৃদ্ধির বিষয়ে আবেদন পাওয়া গেছে। তিতুদহ ইউপিতে তদন্ত করা হয়েছে যাচাইবাছাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম মামুন উজ্জামান জানান, সচ্ছল ব্যক্তিদের নামের বিষয়ে তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের জমা দিতে বলেছি। এখনো হাতে এসে পৌঁছেনি।

জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক আব্দুর ওয়াহেদ জানান, ইতোমধ্যে তিন উপজেলায় প্রায় ১ হাজার ৮০০ জন সচ্ছল ব্যক্তির নাম তালিকা থেকে বাদ দিয়ে অসচ্ছল ব্যক্তিদের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সচ্ছল ব্যক্তিদের নাম শনাক্তকরণের কাজ চলছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিলারদের নামে কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। নতুন বস্তা পেলে ৩০ কেজি বস্তাবন্দি করে চাল বিতরণ করা হবে। জেলা খাদ্য অফিসে অভিযোগ সংক্রান্ত একটি বাক্স রাখা হয়েছে।